বয়োজ্যেষ্ঠদের অনীহা, অনেকেই জানেন না কীভাবে নেবেন টিকা
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার পক্ষে সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ একরাম উল্লাহ টিকাগুলো গ্রহণ করেন; ২৯ জানুয়ারি তোলা ছবি।
আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি সারাদেশের মতো ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায়ও আনুষ্ঠানিকভাবে করোনাভাইরাসের টিকা প্রদান কার্যক্রম শুরু হবে। সে লক্ষ্যে সবধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
প্রথম ধাপে করোনার সম্মুখযোদ্ধাদের টিকা দেওয়া হবে। তবে উদ্বোধনের দিন প্রথম কে টিকা নেবেন- সেটি এখনো নির্ধারণ করা হয়নি বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন মোহাম্মদ একরাম উল্লাহ। সম্মুখযোদ্ধাদের টিকা প্রদান শেষে সব জনগোষ্ঠীর জন্য টিকা উন্মুক্ত করা হবে বলে জানান তিনি।
বিজ্ঞাপন
তবে মহামারি প্রতিরোধে বহুল কাঙ্ক্ষিত এই টিকা নিয়ে খুব একটা আগ্রহ নেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মানুষদের মধ্যে। বয়োজ্যেষ্ঠদের ধারণা করোনা মোকাবিলায় টিকা নিতে হবে না, এমনিতেই এই ভাইরাস চলে যাবে। সেজন্য টিকার প্রতি অনীহা তাদের।
আবার অনেকেই টিকা নিতে আগ্রহী হলেও কোথায় এবং কীভাবে টিকা নিতে হবে- সেটি সম্পর্কে জানেন না। এছাড়া অনেকে টিকা গ্রহণের জন্য অনলাইনে নাম নিবন্ধন করা নিয়েও পড়েছেন বিড়ম্বনায়। টিকাগ্রহীতা নিবন্ধন না করে স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে নাম নিবন্ধনের ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন কেউ কেউ।
বিজ্ঞাপন
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের বৃদ্ধ হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘আমি টিকা নেব না। টিকা নিলে কি আমি মরব না? দুনিয়াতে রাখলে, আল্লাহ এমনিতেই রাখবে।’
নাসিরনগর উপজেলার চাতলপাড় গ্রামের ফরিদ মিয়া বলেন, সরকার আমাদের জন্য অনেক কষ্ট করে টিকা এনেছে। আমরা অবশ্যই টিকা নেব।
মো. হানিফ নামে জেলা সদরের এক বাসিন্দা জানান, টিকা নেওয়ার জন্য কীভাবে নিবন্ধন করতে হবে সেটি তিনি জানেন না। টিকা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এসেছে কি-না সেটিও তিনি জানেন না।
বিজয়নগর উপজেলার নলগরিয়া গ্রামের বাসিন্দা ও আইনজীবীর সহকারী আব্দুর রাজ্জাক ভূঁইয়া বলেন, করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে সবার টিকা নেওয়া দরকার। তবে অনেকেই জানে না কোথায়, কীভাবে নিবন্ধন করতে হবে। এটি জানতে পারলে অনেকেই আগ্রহ নিয়ে টিকা গ্রহণের জন্য নিবন্ধন করবে।
তবে সিভিল সার্জন মোহাম্মদ একরাম উল্লাহ বলেন, টিকা গ্রহণের জন্য ওয়েবসাইটে নাম নিবন্ধন প্রক্রিয়া খুবই সহজ। এছাড়া সুরক্ষা অ্যাপ তৈরির কাজও চলছে। অ্যাপটি এলে নিবন্ধন প্রক্রিয়া আরও সহজ হয়ে যাবে। প্রাথমিকভাবে সম্মুখযোদ্ধাদের টিকা দেওয়া হবে। পরবর্তীতে সব জনগোষ্ঠীকে টিকাদান কার্যক্রমের আওতায় আনা হবে।
মোহাম্মদ একরাম উল্লাহ আরও বলেন, করোনাভাইরাসের টিকা নিয়ে অনেকের ভ্রান্ত ধারণা থাকায় আতঙ্ক ছিল। তবে এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে হবে। বিভ্রান্তি দূর করার জন্য আমরা স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে তথ্য প্রচার করছি।
গত ২৯ জানুয়ারি করোনাভাইরাসের এক লাখ আট হাজার ডোজ টিকা এসে পৌঁঁছায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। টিকাগুলো জেলা সদরের মেড্ডা এলাকার ইপিআই ভবনের কোল্ড স্টোর রুমে রাখা হয়েছে। টিকাদানের জন্য জেলা সদরে আটটি ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে দুটি করে টিম গঠন করা হয়েছে। প্রতিটি টিমে দুজন করে টিকাদানকর্মী ও চারজন করে স্বেচ্ছাসেবক রয়েছেন।
আজিজুল সঞ্চয়/এএম