অসহায় সাবিত্রি কর্মকারকে মায়ের মতো সেবাযত্ন করায় জেলা প্রশাসন থেকে রবিউল ইসলামকে পুরস্কৃত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বুধবার (০৯ ফেব্রুয়ারি) বরিশালের জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি জানিয়েছেন। 

তিনি বলেন, জেলা প্রশাসন থেকে রবিউল ইসলামকে পুরস্কৃত করব। তাকে সম্মানিত করব। কারণ আমাদের সমাজে এমন অজস্র রবিউল ইসলামের প্রয়োজন আছে। যে সব সন্তান মাকে রাস্তায় ফেলে গেছে, তাদের বিপরীতে রবিউল ইসলাম হচ্ছেন মানবিকতার উদাহরণ।

জেলা প্রশাসক বলেন, রবিউল ইসলাম একটি মানবিক কাজ করেছেন। বৃদ্ধা মা সাবিত্রি কর্মকার রাস্তায় পড়ে ছিলেন। তাকে উদ্ধার করে এনে ৯ মাস ধরে সেবা করছেন। এটি আমরা জানার পর তাৎক্ষণিক খোঁজখবর নিতে সেখানে সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন কর্মকর্তা সাজ্জাদ পারভেজকে পাঠাই। 

অসহায় সাবিত্রি কর্মকারের সকল দায়িত্ব জেলা প্রশাসন নেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অসহায় মানুষের পাশে সরকার রয়েছে। অসহায় মানুষদের সহায়তা করার জন্য বরিশালে সমাজসেবা অধিদপ্তর এবং আমরা একটি টিম হয়ে কাজ করছি। সাবিত্রি কর্মকারের যা যা লাগবে, যেমন জীবন ব্যয়, চিকিৎসা আশ্রয় সবকিছুর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তার পাশে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আছেন।

জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার বলেন, আমরা অসহায়দের পুনর্বাসিত করতে চাই। চিকিৎসা দিতে চাই। তারা যেন সমাজে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে সেই ব্যবস্থা করতে চাই।

জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার

সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন কর্মকর্তা সাজ্জাদ পারভেজ জানান, সাবিত্রি কর্মকার অত্যন্ত মানবেতর জীবনযাপন করছিলেন। তাকে তার স্বজনরা ফেলে গেছেন। এমনকি তার স্বজনদেরও সন্ধান পাওয়া যায়নি। কিন্তু রবিউল ইসলাম সাবিত্রি কর্মকারকে উদ্ধার করে নিজের বাসায় রেখে সেবাযত্ন করছেন। খবরটি জানতে পেরে জেলা প্রশাসক তাৎক্ষণিক সহায়তার জন্য অর্থ বরাদ্দ দেন। আগামীকাল বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসক সাবিত্রি কর্মকারকে দেখতে যাবেন।

মানবিক যুবক রবিউল ইসলাম বলেন, সাবিত্রি কর্মকারের মতো অসহায় এক মাকে সহায়তা করতে পেরে আমি আনন্দিত। তাছাড়া খুশি হয়েছি জেলা প্রশাসন থেকে এই মায়ের দায়িত্ব গ্রহন করা হবে জেনে। বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসন এবং সমাজসেবা অধিদফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আসবেন বলে আমাকে জানানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল ঢাকাপোস্ট.কমে ‘মায়ের মতো অসহায় সাবিত্রি কর্মকারের যত্ন নিচ্ছেন রবিউল ইসলাম’ শিরোনামে ভিডিওসহ সংবাদ প্রকাশিত হয়। বিষয়টি নজরে আসে জেলা প্রশাসনের। অসহায় এই মায়ের জন্য ৫০ হাজার টাকা অর্থ সহায়তা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরএআর