অসহায় সাবিত্রি কর্মকারের শয্যাপাশে ডিসি, দিলেন অর্থসহায়তা
অসহায় বৃদ্ধা সাবিত্রি কর্মকারের হাতে অর্থসহায়তা পৌঁছে দিয়েছেন বরিশালের জেলা প্রশাসক (ডিসি) জসীম উদ্দিন হায়দার। বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টায় নগরীর রূপাতলী গ্যাসটারবাইন এলাকার আশ্রয়দাতা রবিউল ইসলামের বাসায় গিয়ে ওই বৃদ্ধার হাতে ৫০ হাজার টাকার চেক তুলে দেন তিনি।
এ সময় জেলা প্রশাসক বলেন, আমরা কখনোই আসা করি না কোনো সন্তান তার মা-বাবাকে ফেলে রেখে যাবে। সাবিত্রি কর্মকার আমাদের জানিয়েছেন, তার বাড়ি বাকেরগঞ্জে। তার এক ভবঘুরে ছেলে রয়েছে। কিন্তু ছেলে কোথায় আছেন তা তিনি জানেন না। এখানে (রূপাতলী) তার ভাই এনে ফেলে রেখে গেছেন।
বিজ্ঞাপন
জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার বলেন, আমি অত্যন্ত আনন্দিত হয়েছি যে অসহায় সাবিত্রি কর্মকারকে স্বজনরা ফেলে গেলেও রবিউল ইসলাম দীর্ঘ দিন ধরে তার দেখাশুনা করছেন, সেবাযত্ন করছেন। আজ সমাজসেবা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছি। এছাড়া তার বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, চিকিৎসা খরচ অর্থাৎ অসহায় সাবিত্রি কর্মকারকে জেলা প্রশাসন থেকে সব সহায়তা করা হবে।
বিজ্ঞাপন
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সমাজসেবা অধিদপ্তর বরিশাল কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আল মামুন তালুকদার, জেলা প্রশাসনের এনডিসি নাজমুল হুদা, প্রবেশন কর্মকর্তা সাজ্জাদ পারভেজ প্রমুখ।
এরপর বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন আনুর ভাড়া বাসায় যান জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার। সেখানে গিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেন এবং পরিবারের খোঁজখবর নেন।
জেলা প্রশাসক বলেন, যারা মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা বলে টাকা নেন, তারা কেমন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার তা আমার বোধগম্য নয়। আমি জেনেছি বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন আনুকে সেই কমান্ডারের জন্য চিংড়ি মাছ কিনে দিতে হয়েছে। দুঃখজনক হচ্ছে আনোয়ার হোসেন আনু প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হয়েও এখনো স্বীকৃতি পাননি। তবে তিনি যেন স্বীকৃতি পান সেই প্রক্রিয়া চলছে।
প্রবেশন কর্মকর্তা সাজ্জাদ পারভেজ বলেন, অসহায় সাবিত্রি কর্মকার ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন আনুকে সব ধরনের সহায়তা করা হচ্ছে। এছাড়া বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন আনুর প্রতিবন্ধী শ্যালিকা নুরুন্নাহারকে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর দেওয়ার ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক স্যার।
প্রসঙ্গত, জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল ঢাকাপোস্ট.কমে গত ২৬ জানুয়ারি ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা ফেরি করেন মধু, স্ত্রী করেন ঝিয়ের কাজ’ এবং ৪ ফেব্রুয়ারি ‘মায়ের মতো অসহায় সাবিত্রি কর্মকারের যত্ন নিচ্ছেন রবিউল ইসলাম’ শিরোনামে ভিডিওসহ পৃথক সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদ দুটি নজরে আসায় সাবিত্রি কর্মকার এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন আনুর সব দায়িত্ব গ্রহণ করে জেলা প্রশাসন। তারই অংশ হিসেবে আজ সহায়তা তুলে দেন জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার। এর আগে তিনি আনোয়ার হোসেন আনুর হাতে চিকিৎসার খরচ তুলে দেন। পাশাপাশি দুটি ঘর এবং অর্ধলাখ টাকা সহায়তার প্রক্রিয়া চলছে।
সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরএআর