চিত্রনায়ক রিয়াজের শ্বশুরের ফেসবুক লাইভে এসে আত্মহত্যার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার রংপুরে ফেসবুক লাইভে এসে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করা যুবক ইমরোজ হোসেন রনি (৩০) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তবে বিষপানের ঘটনার পর ফেসবুক লাইভটি মুছে ফেলা হয়েছে।

রোববার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

গতকাল শনিবার সকালে লাইভে এসে রনি বিষপান করেন। চাচা শ্বশুরের বাড়ি থেকে স্ত্রীকে আনতে ব্যর্থ হয়ে লাইভে তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এজন্য তিনি স্ত্রী, শ্বশুর, চাচা শ্বশুর ও ভায়রা এমদাদুল হককে দায়ী করেছেন।

ইমরোজ হোসেন রনি পীরগাছা উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের পাওটানা নিজ তাজ গ্রামের মৃত তৈয়ব মিয়ার একমাত্র সন্তান। এ ঘটনা গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রনি ৪ বছর আগে ভালোবেসে বিয়ে করেন একই উপজেলার পশ্চিম হাগুরিয়া হাসিম গ্রামের দিনমজুর বাদল মিয়ার মেয়ে শামীমা ইয়াসমিন সাথীকে। বিয়ের পর তাদের ঘরে আবু শাকিব রিয়াদ নামে এক ছেলে সন্তান জন্ম নেয়। বর্তমানে ছেলের বয়স দুই বছর। সম্প্রতি কিছুদিন ধরে রনির কাছে দেনমোহরের ৫ লাখ টাকা ও শ্বশুর-শাশুড়ির ভরণ-পোষণ দাবি করে আসছিলেন তার স্ত্রী সাথী। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে মনোমালিন্য দেখা দেয়।

এ ছাড়া বেশ কয়েকবার স্থানীয়ভাবে সালিস বৈঠক হয়। তবে তাতে কাজ হয়নি। এক পর্যায়ে কাউকে কিছু না জানিয়ে গত বুধবার পার্শ্ববর্তী রতনপুর গ্রামে চাচা মুকুল মিয়ার বাড়িতে চলে যান স্ত্রী সাথী। শনিবার সকালে তাকে আনতে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে ফেসবুক লাইভে আসেন ইমরোজ হোসেন রনি।

লাইভে রনি বলেন, আমার স্ত্রী আমাকে না বলে তিন দিন আগে তার চাচা মুকুল মিয়ার বাড়িতে চলে যায়। আমি আনতে গেলে তারা আমার কাছে দেনমোহরের ৫ লাখ টাকা দাবি করে। আমি এখন ফেসবুক লাইভে এসে বিষপানে আত্মহত্যা করব। আমার মৃত্যুর জন্য আমার স্ত্রী, শ্বশুর, চাচা শ্বশুর ও ভায়রা এমদাদুল হক দায়ী থাকবেন। এই বলে একটি সাদা বোতলের মুখ খুলে বিষপান করেন রনি। এ সময় তার সঙ্গে এক কিশোরকে দেখা যায়। কিন্তু তার পরিচয় পাওয়া যায়নি।

এ ব্যাপারে পীরগাছা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরেস চন্দ্র বলেন, ওই যুবক রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন। মরদেহ ময়নাতদন্ত করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে ফেসবুক লাইভে এসে আত্মহত্যার চেষ্টার কথা জানা নেই। বিষয়টির খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। 

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরআই