এ কে বিজয়

টাঙ্গাই‌লের বাসাই‌লে তথ‌্য সংগ্রহ কর‌তে গি‌য়ে বাংলা ট্রিবিউনের টাঙ্গাইল প্রতিনিধি এ কে বিজয়ের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। ত‌বে পু‌লি‌শের সাম‌নে সাংবা‌দি‌কের ওপর হামলা হ‌লেও তা‌কে বাঁচা‌তে এ‌গি‌য়ে না আসার অ‌ভি‌যোগ উ‌ঠে‌ছে। 

রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) বাসাইল উপজেলার কাউলজানি ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন একটি বিবদমান জমিতে ঘর তোলা নিয়ে গ্রামের দু’পক্ষের বাদানুবাদের সময় তার ওপর হামলা চালা‌নো হয়। 

এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন টাঙ্গাইল প্রেস ক্লাবের সভাপতি জাফর আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক কাজী জাকেরুল মওলা।

স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে কাউলজানি ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন একটি জমি নিয়ে পরিষদের সঙ্গে গ্রামের একটি হিন্দু পরিবারের বিরোধ চলে আসছিল। রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে ওই জমিতে হিন্দু পরিবারটি ঘর তোলার চেষ্টা করে। এ সময় স্থানীয়রা তাদের বাধা দেয়। 

কাউলজানি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান চৌধুরী হবিও স্থানীয়দের সঙ্গে সেখানে উপস্থিত ছিলেন। দ্রুত সেখানে দুটি পক্ষের সৃষ্টি হয়। এদের মধ্যে একদল বাড়ি বানানোর পক্ষে ও অপরপক্ষ তাদের বাধা দিতে থাকে। ঘটনাস্থলে পেশাগত দায়িত্ব পালনে গিয়ে ছবি তুলছিলেন বাংলা ট্রিবিউনের টাঙ্গাইল প্রতিনিধি এ কে বিজয়। 

এ সময় হঠাৎ করে উত্তেজনার সৃষ্টি হলে কিছু লোক উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিজয়ের গায়ে হাত তুলে। তারা এলোপাতাড়িভাবে বিজয়কে মারধর করে। মাথায় হেলমেট থাকায় তিনি কোনোমতে রক্ষা পান। পরে স্থানীয় চেয়ারম্যান তাকে উদ্ধার করে ইউনিয়ন পরিষদের অফিস কক্ষে নিয়ে যান। 

কাউলজানি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান চৌধুরী হবি বলেন, সাংবাদিক বিজয় আমার পূর্ব পরিচিত। প্রিয় মানুষ। পাশাপাশি গ্রামের মানুষ। ওই পরিবারটি ইউনিয়ন পরিষদের জায়গার গাছ কেটে সেখানে ঘর তোলার চেষ্টা করে। এতে স্থানীয়রা তাদের বাধা দেয়। চেয়ারম্যান হিসেবে আমিও বাধা দেই। আমি এ সময় সাংবাদিক বিজয়কে ডেকে আনি। তিনি সেখানে ছবি তুলছিলেন। কিন্তু ওই সময় কিছু লোক তার গায়ে হাত তুলে। এজন্য আমি ভীষণ দুঃখিত।

আহত সাংবাদিক বিজয় বলেন, চেয়ারম্যান সাহেব খবর দেওয়ায় সেখানে যায়। সেখানে গিয়ে ঘটনার ছবি তুলছিলাম। হঠাৎ অনেক লোক জড়ো হয় সেখানে। তারা সেখানে পরস্পরের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকে। হঠাৎ স্থানীয় মুসলমানদের পক্ষ থেকে কিছু লোক এসে আমাকে ভীষণ মারতে থাকে। হেলমেট পরা থাকায় আমি কোনোমতে প্রাণে রক্ষা পায়। তারা আমার সারা শরীরে মেরেছে। আমি ব্যাথায় নড়তে পারছি না।

ঘটনার সময় সেখানে কয়েকজন পুলিশ থাকলেও তারা হামলার সময় দায়িত্ব পালন করেনি বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান চৌধুরী হবিও বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সরে যাওয়ায় সাংবাদিক বিজয়ের ওপর হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা।

ঘটনাস্থলে থাকা বাসাইল থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) বিল্লাল বলেন, সেখানে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। দুই পক্ষ পরস্পরের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকে। আমরা তিনজন বাইরে ছিলাম। এর মধ্যে এই ঘটনা ঘটে। পরে আমরা জনগণকে ঠেলে ভেতরে গিয়ে তাকে উদ্ধার করি।  

অভিজিৎ ঘোষ/এসপি