ঢাকা থেকে রোববার বাড়িতে ফেরেন মেয়রপ্রার্থী সবুজ

মাদারীপুরে নির্বাচনী মাঠ থেকে পুলিশের গাড়িতে তুলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে দেখা করতে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন কালকিনি পৌরসভার স্বতন্ত্র মেয়রপ্রার্থী মশিউর রহমান সবুজ। 

মেয়রপ্রার্থী মশিউর রহমান সবুজ জানান, ‘সেখানে ওবায়দুল কাদের তাকে দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে দল যাকে প্রার্থী নির্বাচন করেছে তার পক্ষে কাজ করার জন্য বলেন।’ তবে জনগণের ইচ্ছায় নির্বাচনী মাঠে থাকার কথা জানান স্বতন্ত্র এই প্রার্থী। 

রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে কালকিনির দক্ষিণ কৃষ্ণনগরে নিজ বাড়িতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা জানান তিনি। 

তিনি বলেন, ‘তাকে কালকিনি থানার ওসির গাড়িতে করে মাদারীপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নেওয়া হয়। পরে নিজ গাড়িতে করে ঢাকায় নিয়ে যান পুলিশ সুপার। সেখান থেকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী বায়দুল কাদেরের সঙ্গে দেখা করতে বাধ্য করা হয়।’ 

‘আমাকে এভাবে গাড়িতে তুলে ঢাকায় নিয়ে ঠিক করেনি পুলিশ সুপার। তিনি সত্য বলে আমাকে ঢাকায় নিতে পারতেন। তাহলে এমন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটত না। তিনি আমাকে ঢাকায় ওবায়দুল কাদেরের কাছে ছেড়ে চলে যান। আমি দলের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে কথা শেষ করে ঢাকা থেকে কালকিনি আসি।’ বললেন নারকেলগাছ প্রতীক নেওয়া এই মেয়রপ্রার্থী।

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আব্দুল হান্নান ঢাকা পোস্টকে বলেন, মেয়রপ্রার্থী সবুজ নিজ বাড়িতে আছেন। তার কোনো ক্ষতি হয়নি। তবে, পুলিশ তাকে তুলে নিয়ে গেছে এ বিষয়টি অস্বীকার করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। সবুজ ব্যক্তিগত কাজে ঢাকায় গিয়েছিলেন এবং রাতেই ফিরে এসেছেন বলেও জানান আব্দুল হান্নান।

এদিকে নিখোঁজ হওয়ার ১৩ ঘণ্টা পর রাত ৩টার দিকে নিজ বাড়িতে ফিরেন স্বতন্ত্র মেয়রপ্রার্থী মশিউর রহমান সবুজ। এ ঘটনায় আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি হতে যাওয়া কালকিনি পৌরসভা নির্বাচন নিয়ে শঙ্কিত ভোটাররা। তারা চান সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন। তবে, অপহরণ বা নিখোঁজের অভিযোগ অস্বীকার করেছিল পুলিশ।

মেয়র প্রার্থীর স্বজন ও সমর্থকরা জানায়, শনিবার দুপুর ২টার দিকে কালকিনি পৌর এলাকার পালপাড়ায় নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছিলেন মেয়র প্রার্থী মশিউর রহমান সবুজ। এ সময় তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একটি কল দেন মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান। তাৎক্ষণিক সেখানে কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাছিরউদ্দিন গাড়ি নিয়ে হাজির হন। 

পরে সেখান থেকে সবুজকে পুলিশের গাড়িতে করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রতিবাদে বিক্ষোভ করে কালকিনি থানা ঘেরাও করেন সবুজের সমর্থকরা। টায়ার জ্বালিয়ে স্লোগান দেন বিক্ষুব্ধরা। এ সময় কালকিনি-ভুরঘাটা ও কালকিনি-মাদারীপুর আঞ্চলিক সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

বিক্ষোভ মিছিলে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে হামলা চালান নৌকার সমর্থকরা। পরে দুপক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে আহত হন অন্তত অর্ধশত মানুষ। ভাঙচুর করা হয় দোকানপাট। সংঘর্ষে রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।

নাজমুল মোড়ল/এমএসআর