দামে সাশ্রয়ী ও সহজলভ্য হওয়ায় ঈদের বাজারে চলছে ইমিটেশনের গহনার দাপট। এসব গহনা দেখতে একেবারে সোনার মতোই চকচকে ও দৃষ্টিনন্দন। এসব কিনতে দোকানে ভিড় করছেন নারী ও তরুণীরা।

সোমবার রাজধানীর নিউ মার্কেটের গাউছিয়া সুপার মার্কেট, ঢাকা নিউ সুপার মার্কেট ঘুরে এমন চিত্রই চোখে পড়ে। এসব মার্কেটের ইমিটেশন ও রুপার গহনার দোকানগুলো ঘুরে দেখা যায়, তরুণী ও নারীরা দামদর করছেন। ঈদে শাড়ি বা থ্রি-পিসের সঙ্গে মিলিয়ে পড়ার জন্য আংটি, চুরি ও গলার হার, ব্রেসলেট কিনছেন তারা।

সরেজমিনে দেখা যায়, দোকানিরা গলার হার, চুড়ি, টিকলি, নাকফুল, পায়েল, নূপুর, গলার চেন, বাজুবন্ধ, ব্রেসলেট, আংটি, নথ, কানের দুল, লকেট, ঝুমকা সহ অসংখ্য গহনার পসরা সাজিয়ে বসেছেন। এসবের কোনোটিই আসল স্বর্ণ বা রূপার তৈরি নয়।

তামা, পিতল বা ব্রোঞ্জের মতো সহজলভ্য ও কমদামী ধাতু দিয়ে নিখুঁতভাবে তৈরি করার পর দৃষ্টিনন্দন করতে গ্যালভানাইজিং পদ্ধতির মাধ্যমে দেওয়া হয়েছে সোনালী প্রলেপ৷ ব্যস এটুকুতেই সোনার বিকল্প হয়ে দাঁড়িয়েছে ইমিটেশন বা ‘নকল সোনা’। আসন্ন ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে নারী ও তরুণীদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে ইমিটেশনের তৈরি এসব গহনা।

বিক্রেতারা বলছেন, দামে কম ও মানে ভালো হওয়ার কারণে বর্তমানে স্বর্ণের জায়গা অনেকটা দখল করে নিয়েছে এসব ইমিটেশনের গহনা। একটা সময় নারীর অলংকার বলতেই শুধু স্বর্ণ ও রূপার গহনা বোঝালেও গত কয়েক বছরে পাল্টে গেছে সেই চিত্র। শুরুতে ইমিটেশনের গলার চেইনসহ ছোট ছোট কয়েকটি গহনা তৈরি করা হলেও এখন এর বিস্তার ঘটেছে।

এমন কোনো গহনা নেই যা ইমিটেশনের হয় না। বিয়ে, গায়ে হলুদ, পার্টি কিংবা ঘরোয়া অনুষ্ঠানসহ সবকিছুতেই ইমিটেশনের ব্যবহার উপযোগী গহনা রয়েছে। সোনা-রূপার গহনার চেয়ে দাম অনেকটা কম হওয়ায় ক্রেতাসাধারণের মধ্যে ইমিটেশনের গহনার চাহিদাই বেশি।

কথা হয় গাউছিয়া মার্কেটের নিচতলার গহনা বিক্রেতা ফারুক আহমেদের সাথে। বললেন, রোজার শুরু থেকে কাপড়ের দোকানে ক্রেতার ভিড় বেশি ছিল। তখন আমরা বেশ হতাশ হয়েছিলাম। কিন্তু এখন গহনার দোকানেও ক্রেতার পরিমাণ বেড়েছে। এর মধ্যে তরুণীদের পরিমাণই বেশি।

তিনি বলেন, সবাই ঈদের শাড়ি বা থ্রি-পিসের সঙ্গে ম্যাচিং করে পরতে অলংকার নিচ্ছেন। হোয়াইট গোল্ডের আদলে বানানো গহনার চাহিদাও বেশ ভালো। এসব গহনার দাম ক্রেতাদের হাতের নাগালে হওয়ার কারণে ভালো সাড়া পাচ্ছি। তিনশ টাকা থেকে শুরু করে পাঁচ হাজার টাকা দামের গহনা রয়েছে। দাম নির্ভর করছে এর ওজন ও স্টাইলের ওপর।

আহসান হাবিব নামের আরেক বিক্রেতা জানান, আংটির চাহিদা বেশ। রূপা দিয়ে নির্মিত আংটির মাঝে রক্ত প্রবাল, রুবি, পান্না, হীরা, নীলম, পোখরাজ পাথরের আংটি রয়েছে। মানভেদে দামেও রয়েছে তারতম্য।

অল্প টাকায় স্বর্ণের মতোই দেখতে ভারী গহনা চিনতে পেরে সন্তুষ্টির কথা জানালেন ক্রেতারাও। তামান্না আনজুম নামের এক তরুণী বলেন, স্বর্ণের গহনার দাম অনেক বেশি। ঈদসহ যেকোনো অনুষ্ঠানে পরার জন্য ইমিটেশনের গহনা বর্তমানে সবচেয়ে বেশি উপযোগী৷ গলার হার থেকে শুরু করে পায়ের নূপুর ও পায়েল পর্যন্ত সবকিছুই মিলছে অল্প টাকায়। ইমিটেশনের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, এ বছর এক ধরনের ডিজাইনের গহনা কিনলে পরের বছর আরেক ধরনের কেনা যায়। মধ্যবিত্তের জন্য বর্তমানে এটিই উপযোগী।

আরএইচটি/আরএইচ