কৃষিক্ষেত্রে (কৃষি, খাদ্য এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ) সার্বিক উন্নয়নে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের জন্য ৩৩ হাজার ৬৯৮ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, যা ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ২৪ হাজার ৩৪৫ কোটি টাকা ছিল। বরাদ্দ বেড়েছে ৯ হাজার ৩৫৩ কোটি টাকা

বৃহস্পতিবার (৯ জুন) বিকেলে জাতীয় সংসদে বাজেট উপস্থাপনকালে মন্ত্রী এ কথা জানান। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া অধিবেশনে উপস্থিত রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এবার প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা।
 
অর্থমন্ত্রী বলেন, সবার জন্য নিরাপদ, পর্যাপ্ত ও মানসম্মত প্রাণিজ আমিষ নিশ্চিতকরণ সরকারের একটি অন্যতম লক্ষ্য। বাংলাদেশ মাছ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে সক্ষম হয়েছে। সরকারের মৎস্যবান্ধব কর্মসূচি বাস্তবায়ন এবং চাষি ও উদ্যোক্তা পর্যায়ে চাহিদাভিত্তিক ও লাগসই কারিগরি পরিষেবা প্রদানের ফলে ২০২০-২০২১ অর্থবছরে মৎস্য উৎপাদন হয়েছে ৪৬ দশমিক ২১ লাখ টন, যা ২০০৯-২০১০ সালের মোট উৎপাদনের চেয়ে ৫৯ দশমিক ৪০ শতাংশ বেশি।

তিনি বলেন, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয় ও বদ্ধ জলাশয়ে চাষকৃত মাছ উৎপাদনে পঞ্চম। এ ছাড়া বিশ্বে ইলিশ উৎপাদনকারী ১১টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ প্রথম এবং তেলাপিয়া উৎপাদনে বিশ্বে চতুর্থ ও এশিয়ার মধ্যে তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে। বিশেষ সামুদ্রিক ও উপকূলীয় ক্রাস্টাশিয়ান্স ও ফিনফিস উৎপাদনে বাংলাদেশ যথাক্রমে অষ্টম ও ১২তম স্থানে রয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশ ইলিশ মাছের জন্য ভৌগোলিক নিবন্ধন সনদ (জিআই সনদ) পেয়েছে, যার ফলে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের ইলিশ অধিকতর সমাদৃত হবে।

সমুদ্র অর্থনীতিতে উন্মোচন হবে নতুন দিগন্ত

সুনীল অর্থনীতি তথা ব্লু ইকোনমি সম্পর্কে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকারের নেতৃত্বে ঐতিহাসিক সমুদ্র বিজয়ের মাধ্যমে প্রাপ্ত বিশাল জলরাশি দেশের সুনীল অর্থনীতির বিকাশের দ্বার উন্মোচন করেছে। সুনীল অর্থনীতির বিকাশ এবং সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ, ব্যবস্থাপনা ও আহরণে কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে আমরা ২০১৪ সালে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি সুনির্দিষ্ট কর্মপন্থা প্রণয়ন করেছিলাম। জাতিসংঘ ঘোষিত এসডিজির সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা সম্প্রতি সে কর্মপরিকল্পনাকে ২০১৮-২০৩০ পর্যন্ত হালনাগাদ করেছি এবং তা বাস্তবায়ন করছি।

তিনি বলেন, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার সহায়তায় অবৈধ ও অনিয়ন্ত্রিত মৎস্য আহরণ রোধে ন্যাশনাল প্ল্যান অব অ্যাকশন প্রণয়ন করা হয়েছে। মৎস্য গবেষণা ও জরিপ জাহাজ ‘আর ভি মীন সন্ধানী’ কর্তৃক বঙ্গোপসাগরে ফেব্রুয়ারি ২০২২ পর্যন্ত ৩৫টি সার্ভে ক্রুজ পরিচালনা করা হয়েছে।

তিনি দাবি করেন, গভীর সমুদ্রে টুনা ও সমজাতীয় পেলাজিক মাছ আহরণে পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এর ফলে সমুদ্র অর্থনীতিতে নতুন দিগন্তের উন্মোচন ঘটবে মর্মে আমি আশাবাদী।

জেইউ/আরএইচ