পদ্মা সেতু ও মেট্রোরেলের পাশাপাশি টাকার অঙ্কে আরও বড় প্রকল্পের ঝুঁকি মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ নিয়েছে সরকারি প্রতিষ্ঠান সাধারণ বিমা করপোরেশন (এসবিসি)। দেশের প্রধান বিমানবন্দর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল নির্মাণে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে এসবিসি। যার পরিমাণ প্রায় সাড়ে ১৬ হাজার কোটি টাকা।

গত ২৪ ডিসেম্বর ৪৫ কোটি ৯১ লাখ এক হাজার ৫১৪ টাকা প্রিমিয়াম দিয়ে বিমাটি করেছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ। মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০২০ সালের ৭ এপ্রিল থেকে ২০২৪ সালের ৬ এপ্রিল পর্যন্ত। বিমার অঙ্কের পরিমাণ ১৬ হাজার ৭৬৫ কোটি ৩১ লাখ ৯৬ হাজার ৭৬৪ টাকা।

এসবিসি সূত্র জানায়, বিমানবন্দরে যাত্রীসেবার মান বাড়াতে বাংলাদেশ সরকার জাইকার সহযোগিতায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণের অংশ হিসেবে নতুন একটি টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। যেটি থার্ড টার্মিনাল (টার্মিনাল-৩) নামে পরিচিত। এখানে থাকবে আধুনিক সবধরনের সুযোগ-সুবিধা। পাঁচ লাখ ৪২ হাজার বর্গমিটারের এ টার্মিনালে একসঙ্গে ৩৭টি প্লেনের পাকিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে। টার্মিনালের সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন হবে মডার্ন টার্মিনাল বিল্ডিং। দুই লাখ ৩০ হাজার স্কয়ার মিটার বিল্ডিংয়ের ভেতরে থাকবে পৃথিবীর উল্লেখযোগ্য ও অত্যাধুনিক সব প্রযুক্তির ছোঁয়া। এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩ হাজার ৬১০ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। ২০২৩ সালের জুনে শেষ হবে অত্যাধুনিক এ টার্মিনালের নির্মাণকাজ।

এ বিষয়ে সাধারণ বিমা করপোরেশনের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার জাকির হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রথমবারের মতো এখানে বিমা করেছি। এর আগে আমাদের সক্ষমতা নেই বলে কোরিয়ান কোম্পানির সঙ্গে বিমা করা হতো। এবার এসবিসির সঙ্গে বিমা করায় প্রমাণিত হয়েছে যে আমাদেরও সক্ষমতা আছে। এর ফলে দেশের অর্থ দেশেই থাকছে।

তবে, বিমার আওতার বাইরে থাকছে সরকারি ও বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলো।

প্রসঙ্গত, এক হাজার ৯৮১ একর আয়তনের শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে দেশের প্রায় ৫২ শতাংশ আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট পরিচালিত হয়। এটি দিয়ে বছরে ৪০ লাখ বিদেশি ও ১০ লাখ অভ্যন্তরীণ যাত্রী এবং দেড় লাখ টন ডাক ও মালামাল আসা-যাওয়া করে। শাহজালাল বাংলাদেশকে বিশ্বের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শহরের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে।

এর আগে এসবিসি পদ্মা সেতুর নিরাপত্তায় ১৩ হাজার ৫২১ কোটি সাত লাখ ৬৮ হাজার ৩০৬ টাকার ঝুঁকি বিমা করে। যার প্রিমিয়াম ৪২ কোটি ৪১ লাখ ৫১ হাজার ৫০১ টাকা। এরপর মেট্রোরেল প্রকল্পের চ্যালেঞ্জ নেয় সরকারি এ প্রতিষ্ঠানটি। বিমার অঙ্ক ১৬ হাজার ৪৯৬ কোটি ৩১ লাখ ১০ হাজার ৫২২ টাকা।

এমআই/এমএআর/