আর কয়েক ঘণ্টা পরই ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ‘উন্নয়নের দীর্ঘ অগ্রযাত্রা পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অভিমুখে’ শীর্ষক বাজেটের বাজেটের আকার হতে পারে ৭ লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকা।

আজকের বাজেট ঘোষণার মধ্য দিয়ে দেশের ৫২তম বাজেট ঘোষণা করতে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার। আর ক্ষমতায় থেকে একমাত্র আওয়ামী লীগ সরকারই টানা ১৫টি বাজেট ঘোষণা করতে যাচ্ছে। 

এবারের বাজেটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে পাঁচ লাখ কোটি টাকা। এর মধ্যে এনবিআরের লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। ঘাটতি আড়াই লাখ কোটি টাকার বেশি। মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপির) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ আর মূল্যস্ফীতির বার্ষিক হারের লক্ষ্য থাকছে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। আগামী বছরে মোট বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা হবে জিডিপির ৩৩ দশমিক ৮ শতাংশ।

আরও পড়ুন >> বাজেট ২০২৩-২৪ : যেসব পণ্যের দাম বাড়বে ও কমবে

বাজেটে ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। এটি চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ১ লাখ ১ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা বেশি। বাজেটের এই ব্যয় মেটাতে মোট কর আদায়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। এই লক্ষ্যমাত্রা ২০২২-২৩ অর্থবছরের তুলনায় ৬৭ হাজার ৬৩৭ কোটি টাকা বেশি।

নতুন বছরের বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তাই সরকার যেভাবেই হোক আগামী অর্থবছরে মূল্যস্ফীতির লাগাম ৬ শতাংশের মধ্যেই টেনে রাখতে চায়। নতুন অর্থবছরের জিডিপি হার নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। নতুন অর্থবছর মোট জিডিপির পরিমাণ ধরা হয়েছে ৫০ লাখ ৬ হাজার ৭৮২ কোটি টাকা।

আরও পড়ুন >> বাংলাদেশের ইতিহাসে যত বাজেট

উচ্চ প্রবৃদ্ধির প্রত্যাশা নিয়ে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ প্রাক্কলন করা হয়েছে জিডিপি। আগামী বাজেটে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ।

চলতি অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৮ হাজার ৬৭১ কোটি টাকা বেশি বৈদেশিক ঋণ আগামী অর্থবছরে নেওয়া হবে। আর ঋণগ্রস্ত বেশি হওয়ায় অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধের জন্য বেশি টাকা গুণতে হবে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে। এছাড়া বাড়ছে সরকারের মূলধনি ব্যয়ও। আগামী অর্থবছরে বৈদেশিক ঋণ নেওয়া হবে ১ লাখ ২ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে বৈদেশিক ঋণের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ৮৩ হাজার ৮১৯ কোটি টাকা। এছাড়া অভ্যন্তরীণ খাত থেকে নেওয়া হচ্ছে ১ লাখ ১৫ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা।

আগামী অর্থবছরে মোট আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে ৫ লাখ ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। এ আয়ের প্রধান উৎস জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে কর ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা এবং এনবিআর বহির্ভূত কর ২০ হাজার কোটি টাকা আদায় করা হবে। এছাড়া কর ব্যতীত প্রাপ্তি (এনটিআর) আদায়ের লক্ষ্য হচ্ছে ৫০ হাজার কোটি টাকা। পাশাপাশি বৈদেশিক অনুদান থেকে ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকার প্রত্যাশা করা হচ্ছে। বৈদেশিক অনুদান সরকারকে পরিশোধ করতে হবে।

যেসব পণ্যের দাম কমতে পারে

মাংস, দেশীয় বৈদ্যুতিক এলইডি বাল্ব ও সুইস-সকেট, মিষ্টি জাতীয় পণ্য, অভিজাত বিদেশি পোশাক, ই-কমার্সের ডেলিভারি চার্জ ইত্যাদি।

দাম বাড়তে পারে যেসব পণ্যের

দামি গাড়ি, নির্মাণ সামগ্রী, ভূমি ও ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রেশন, সিগারেট, বাসমতি চাল, কাজু বাদাম ইত্যাদি।

জেডএস