রিকন্ডিশন্ড মোটরযান আমদানিতে ৪৫ শতাংশ অবচয় সুবিধা চান গাড়ি আমদানিকারকরা। পাশাপাশি গণপরিবহন হিসেবে বহুল ব্যবহৃত ১০-১৫ আসন সেগমেন্টের মাইক্রোবাস আমদানিতে সম্পূরক শুল্কও প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন এ খাতের ব্যবসায়ীরা।

বুধবার (৯ জুন) প্রস্তাবিত বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানায় বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বারভিডা)।

সংবাদ সম্মেলনে বারভিডা প্রেসিডেন্ট আবদুল হকের উপস্থিতিতে সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম এসব দাবি উত্থাপন করেন।

বারভিডার পক্ষ থেকে জানানো হয়, ২০২১-২০২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে দেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার ও গতি সঞ্চার, স্থানীয় শিল্প সুরক্ষা এবং গ্রামীণ অর্থনীতিকে উজ্জীবিত রাখতে যেসব সহায়তা প্রস্তাব করা হয়েছে বারভিডা তাকে স্বাগত জানাচ্ছে।

প্রস্তাবিত বাজেটে মাইক্রোবাস এবং হাইব্রিড কার ও জিপ (১৮০১ সিসি থেকে ২৫০০ সিসি পর্যন্ত) আমদানিতে শুল্ক পুনর্বিন্যাস ও হ্রাস করায় বারভিডা প্রধানমন্ত্রী এবং অর্থমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানায়। তবে গণপরিবহন হিসেবে বহুল ব্যবহৃত ১০-১৫ আসন সেগমেন্টের মাইক্রোবাস (এইচ এস কোড ৮৭.০২), যা নগর ও গ্রামীণ জীবনে বিশেষ প্রভাব রাখছে তা আমদানির ক্ষেত্রে সম্পূরক শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের জন্য আবেদন করে বারভিডার। কিন্তু তা গৃহীত হয়নি। তাই এ দাবি পুনর্বিবেচনার আহ্বান সংগঠনটির।

বারভিডা সেক্রেটারি বলেন, রিকন্ডিশন্ড মোটরযান আমদানির ক্ষেত্রে আমরা ৪৫ শতাংশ অবচয় সুবিধা এবং বছরভিত্তিক অবচয় সুবিধা চেয়েছিলাম। কিন্তু তা প্রস্তাবিত বাজেটে অন্তর্ভুক্ত হয়নি। আসন্ন বাজেটে সুবিধাটি প্রদানে সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।

সম্মেলনে বারভিডা নেতারা জানান, উন্নয়নশীল ও মধ্যম আয়ের দেশে গ্রাজুয়েশনের এই তাৎপর্যপূর্ণ সময়ে সরকারের রূপকল্প বাস্তবায়ন এবং দেশে নতুন গাড়ির শিল্প প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ বাস্তবায়নে গাড়ির বাজার সম্প্রসারণ প্রয়োজন। জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) মতে, গাড়ির অভ্যন্তরীণ বাজার ১ লাখ ইউনিট হলেই দেশে নতুন গাড়ির শিল্প প্রতিষ্ঠা যুক্তিযুক্ত হবে। মধ্যবিত্ত শ্রেণির ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে এলে বাজার সম্প্রসারণের সঙ্গে সরকারের রাজস্ব আয়ও বহুগুণ বাড়বে।

বারভিডা জানায়, নতুন ও রিকন্ডিশন্ড গাড়ির শুল্কায়ন মূল্যে চরম বৈষম্যের ফলে নতুন গাড়ির চেয়ে রিকন্ডিশন্ড গাড়ির দাম কোন কোন ক্ষেত্রে বেশি হয়ে যাচ্ছে। ফলে ক্রেতা কমে যাচ্ছে, আমদানি হ্রাস পাচ্ছে এবং এ খাতের ব্যবসায়ীরা মারাত্মক আর্থিক সংকটে পড়ছেন। ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে ২০ হাজার ১৪৯টি এবং ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে ২৩ হাজার ৭৫ টি গাড়ি আমদানি হয়। সেখানে ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে গাড়ি আমদানি ১২ হাজার ৫০২টিতে নেমে আসে। ২০১৯-২০২০ অর্থবছরেও আমদানি হ্রাসের ধারা অব্যাহত রয়েছে। আমদানি কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সরকারের রাজস্ব আয়ও লক্ষণীয় হারে হ্রাস পেয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বারভিডার ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহা. সাইফুল ইসলাম (সম্রাট) ও মো. জসিম উদ্দিন মিন্টু, ট্রেজারার মোহাম্মদ আনিছুর রহমান, জয়েন্ট সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান, পাবলিকেশন ও পাবলিসিটি সেক্রেটারি ফরিদ আহমেদ এবং কার্যনির্বাহী সদস্য আবু হোসেন ভূইয়া (রানু), মো. জিয়াউল ইসলাম, মো. ইউনূছ আলী, মো. আসলাম সেরনিয়াবাত ও ডা. মো. আনিসুর রহমান খান প্রমুখ।

এসআই/এসকেডি