বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনার চার বছর পেরিয়ে গেলেও সরকারি তদন্ত কমিটির রিপোর্ট নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তবে করোনার কারণে আগামী অর্থবছরে অনেক চ্যালেঞ্জ থাকলেও দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির গতিবিধি ঊর্ধ্বমুখী থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

বুধবার (২২ জুন) সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকরা এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে মামলা চলমান থাকায় আমি কোনো মন্তব্য করব না।

বুধবার (২২ জুন) ১৮তম অর্থনৈতিক বিষয়ক ও ২২তম সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অর্থনৈতিক সংক্রান্ত সভায় একটি এজেন্ডা এবং ক্রয় সংক্রান্ত কমিটির সভায় ১৬টি প্রকল্পের বিপরীতে মোট ব্যয় হবে ১ হাজার ৩৯ কোটি ৩ লাখ ৩২ হাজার ৮৬৮টাকা।

সভা শেষে অর্থমন্ত্রী বলেন, করোনার কারণে আগামী অর্থবছরে অনেক চ্যালেঞ্জ থাকলেও দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির গতিবিধি ঊর্ধ্বমুখী।

আগামী অর্থবছরে বিশেষ প্রণোদনায় কালো টাকা সাদা করার সুযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে জানতে আপনাদের আরও কয়েকটা দিন অপেক্ষা করতে হবে। আমরা অর্থ বিলটি সংসদে পাস করব ২৯ তারিখ, ওই পর্যন্ত আপনাদের অপেক্ষা করতে হবে।

নতুন অর্থবছরে সামষ্টিক অর্থনীতিতে কী ধরনের চ্যালেঞ্জ দেখছেন এবং নতুন অর্থবছরের পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, চ্যালেঞ্জ অনেক, চ্যালেঞ্জ নেই তা বলব না। আমরা চ্যালেঞ্জগুলোকে সবসময় সুযোগ হিসেবে চিন্তা করি। কারণ ইতিহাস থেকে আমরা দেখেছি অর্থনৈতিক দিক থেকে যখনই কোনো চ্যালেঞ্জ আসে তখনই সুযোগ অনেক বেড়ে যায়।

তিনি বলেন, চলতি অর্থবছরের শেষের দিকে আছি। বছরের শুরুর তুলনায় শেষের দিকে আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতির গতিবিধি অনেক ঊর্ধ্বমুখী। অনেকেই ধারণা করেছিলেন আমারা প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারব না, কিন্তু আমরা সেটা অর্জন করতে পেরেছি। প্রধানমন্ত্রীর সময়োপযোগী সিদ্ধান্তের কারণে আমরা এটি করতে পেরেছি। আমাদের রেভিনিউ অর্জন ছিল প্রধান সমস্যা। রেভিনিউ অর্জনে এখন আমাদের ১৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি। আমাদের রফতানিতেও ১৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি। রিজার্ভের পরিমাণও ৪৬ বিলিয়ন ডলার ছুঁই ছুঁই করছে, এ মাসেই ৪৬ বিলিয়ন ডলার হয়ে যাবে। রেমিট্যান্সের পরিমাণ ২৫ বিলিয়ন ডলার, গত বছর ১৮ বিলিয়ন ডলার ছিল।

ঘাটতি বাজেট বাস্তবায়নে সামনে কোনো চ্যালেঞ্জ দেখছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাজেট ঘাটতি এ বছর পৃথিবীর সব দেশই অনুসরণ করছে। আমরা যে কাজটি গতবছর করেছিলাম, প্রথমেই আমরা প্রণোদনা প্যাকেজ দিয়েছি। আমরা জনগণের কাছে টাকার যোগান দিয়েছি বিভিন্ন প্রক্রিয়ায়। এতে সবাই অন্তত খাবার পেয়েছে, মোটামুটিভাবে তারা তাদের জীবন-জীবিকা নির্বাহ করতে পেরেছে। এ জন্য আমি বলি বাজেটে ঘাটতি আমাদের একার নয় সবার। জাতিসংঘের মহাসচিব প্রত্যেক দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের কাছে অনুরোধ করেছেন যাতে এই বিষয়টি সাংঘর্ষিক না হয়।

তিনি বলেন, আমাদের বাজেট ঘাটতির পরিমাণ জিডিপির ৬ দশমিক ২ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রের বাজেট ঘাটতি ১৮ দশমিক ৭২ শতাংশ, ভারতের ১৩ দশমিক ০৭ শতাংশ, জাপানের ১২ দশমিক ৯ শতাংশ, চীনের ১১ দশমিক ৮৮ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়ার ৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ এবং ভিয়েতনামের ৬ দশমিক ২ শতাংশ। ধনী অথবা ধনী নয়, উন্নয়নশীল অথবা উন্নত দেশের সবাই কিন্তু এই বাজেট ঘটতি নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছে।

এনএম/এসকেডি