ইএফডি লটারির প্রথম ড্র ৫ ফেব্রুয়ারি
পণ্য কিনে যারা ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) মেশিনের চালান গ্রহণ করেছেন তাদের নিয়ে আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি প্রথমবারের মতো লটারির আয়োজন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ইস্যু করা ইএফডি চালানের ওপর ওই লটারি অনুষ্ঠিত হবে।
রোববার (১০ জানুয়ারি) এনবিআরের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা সৈয়দ এ মু’মেন ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
বিজ্ঞাপন
এনবিআর প্রতি মাসে লটারির মাধ্যমে সারাদেশ থেকে ১০১ জন ভ্যাটদাতাকে পুরস্কৃত করবে। লটারিতে একজন ভ্যাটদাতা সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা পুরস্কার পাবেন।
সৈয়দ মু’মেন এ বিষয়ে বলেন, ভ্যাট আদায়ে স্বচ্ছতা আনার জন্য এনবিআর ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) মেশিন চালু করে এবং দোকানে স্থাপন শুরু হয়েছে। এই মেশিনের মাধ্যমে ভ্যাট প্রদানে জনগণকে উৎসাহিত করার জন্য ইএফডি মেশিনের ইস্যুকৃত মুদ্রিত চালানের ওপর প্রতি মাসে লটারির ড্র অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত হয়। প্রতি মাসের ১ তারিখ থেকে শেষদিন পর্যন্ত ইস্যুকৃত চালানের ওপর পরবর্তী মাসের ৫ তারিখে এই লটারি অনুষ্ঠিত হবে। প্রথমবারের মতো এ লটারি অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি। তাই ক্রেতাদের ইস্যুকৃত চালানপত্র বা লাকি কুপন যত্নসহকারে সংরক্ষণ করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
বিজ্ঞাপন
লটারি হবে কীভাবে?
ইএফডি থেকে ইস্যু করা চালানকে লটারির কুপন হিসেবে ধরা হবে। যে মাসে লটারির ড্র অনুষ্ঠিত হবে তার আগের মাসের প্রথম দিন থেকে শেষ দিন পর্যন্ত ইস্যু করা ভ্যাট চালানগুলোকে লটারির কুপন হিসেবে নির্বাচন করা হবে। এনবিআরের ভ্যাট বিভাগ প্রতি মাসে এই লটারির আয়োজন করবে।
প্রতি ইংরেজি মাসের ৫ তারিখে লটারির ড্র অনুষ্ঠিত হবে। ওই দিন সরকারি ছুটি থাকলে পরবর্তী কার্যদিবসে ড্র হবে। লটারির ড্র অনুষ্ঠানের তিন কার্যদিবসের মধ্যে বিজয়ীদের কুপন নম্বর প্রচারমাধ্যমে প্রকাশ করা হবে। তারপর বিজয়ীদের ওই মাসের শেষ কার্যদিবসের মধ্যে পুরস্কারের জন্য আবেদন করতে হবে। এরপর কুপন নম্বর মিলিয়ে দেখাসহ প্রয়োজনীয় তথ্য যাচাই–বাছাই করা হবে। আবেদনপত্রে আবেদনকারীর নাম, সই, ঠিকানা, মোবাইল নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে), চালান নম্বর, ইস্যুর তারিখ থাকতে হবে।
এনবিআরের মূসক বাস্তবায়ন বিষয়ক সদস্যকে আহ্বায়ক করে ৬ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি থাকবে। কমিটি লটারির ড্র অনুষ্ঠান পর্যবেক্ষণ করবে। কমিটি সার্বিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্বেও থাকবে। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন- এনবিআরের সিস্টেম ম্যানেজার, আইআরডি, অর্থবিভাগ ও কমিশনারেট থেকে মনোনীত একজন প্রতিনিধি এবং মূসকের তথ্য প্রযুক্তি ও প্রকল্প ব্যবস্থাপনা বিভাগের দ্বিতীয় সচিব।
এনবিআর থেকে প্রথম তিনটি পুরস্কার দেয়া হবে। চতুর্থ পুরস্কার দেবে ক্রেতা যে কমিশনারেট বা বিভাগ বা সার্কেলে আবেদন করবেন সে দপ্তর। পুরস্কারের টাকা চেকের মাধ্যমে দেয়া হবে।
গত ৬ ডিসেম্বর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের সই করা লটারি বিজয়ী নির্বাচনের নীতিমালা সংক্রান্ত আদেশ ইস্যু করা হয়।
পুরস্কার কত টাকা?
প্রথম পুরস্কার বিজয়ী পাবেন ১ লাখ টাকা। দ্বিতীয় পুরস্কার ৫০ হাজার, তৃতীয় পুরস্কার ২৫ হাজার টাকা। ৯৪ জন পাবেন ১০ হাজার টাকা করে। প্রতি মাসে লটারি বিজয়ীদের জন্য মোট ১২ লাখ ১৫ হাজার টাকা খরচ হবে। এনবিআরের কেন্দ্রীয় অনলাইন সিস্টেমের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে লটারির আয়োজন করা হবে।
ইএফডি মেশিন বা ভ্যাটের মেশিন আছে, এমন দোকান থেকে পণ্য বা সেবা কিনলেই শুধু লটারির জন্য বিবেচনা করা হবে। পাকা রসিদ হতে হবে, কাঁচা বা জাল রসিদ হলে হবে না। ভ্যাট মেশিন স্বয়ংক্রিয়ভাবে যে রসিদ দেবে, সেই রসিদের নম্বর ধরেই লটারি হবে।
২০১৯ সালের জুন মাসে নতুন ভ্যাট আইন চালু হয়। এ আইনের আওতায় এনবিআর স্বয়ংক্রিয় ও অনলাইনভিত্তিক কর ব্যবস্থা প্রবর্তনের নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। বর্তমানে দেশের সব সিটি করপোরেশন ও জেলা শহরে অবস্থিত বিভিন্ন পণ্য ও সেবা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানে ইএফডি মেশিন বসানো বাধ্যতামূলক।
মূলত হোটেল, রেস্তোরাঁ, ডিপার্টমেন্টাল স্টোরসহ সেবা খাতের লেনদেনের তথ্য সংরক্ষণের মাধ্যমে ভ্যাটের হালনাগাদ তথ্য পেতে ইএফডি মেশিন বসানো হচ্ছে।
আরএম/এইচকে