চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে এসএমই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের মাঝে ২০০ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করবে সরকার।

মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) ও এসএমই ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‌‘এসএমই প্রণোদনা প্যাকেজ হতে ঋণ প্রাপ্তির পদ্ধতি’ শীর্ষক ভার্চুয়াল মতবিনিময় সভা থেকে এসব তথ্য উঠে এসেছে। 

মতবিনিময় সভায় এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. মো. মাসুদুর রহমান প্রধান অতিথি এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. মফিজুর রহমান বিশেষ অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন।

একটি বিশেষায়িত এসএমই ব্যাংক স্থাপনের প্রস্তাব করে এসএমই ফাউন্ডেশনের এমডি মফিজুর রহমান বলেন, মাত্র দেড় মাসেই শুধুমাত্র এসএমই উদ্যোক্তাদের মাঝে ১২২ কোটি বিতরণ করা সম্ভব হয়েছে। এসএমই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সরাসরি ঋণ দেওয়া সম্ভব হলে, এ খাতের উদ্যোক্তাদের আরও কার্যকরভাবে ঋণ সহায়তা দেওয়া সম্ভব হতো। 

এ খাতের উদ্যোক্তাদের সহায়তা নিশ্চিতকরণে তিনি দেশে একটি বিশেষায়িত এসএমই ব্যাংক স্থাপনের প্রস্তাব করেন। 

তিনি জানান, চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সরকার এসএমই ফাউন্ডেশনকে প্রদত্ত ২০০ কোটি টাকা এ খাতের উদ্যোক্তাদের মাঝে বিতরণ করা হবে। এসএমই উদ্যোক্তাদের ঋণ ফেরতের হার অত্যন্ত সন্তোষজনক। বরাদ্দকৃত অর্থের ৫০ ভাগ নারী উদ্যোক্তাদের মাঝে বিতরণের বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত। 

অন্যদিকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. মো. মাসুদুর রহমান বলেন, ব্যবসায়িক সাফল্যের পাশাপাশি প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য এ খাতের উদ্যোক্তাদের অবশ্যই দেশের বিদ্যমান আইনি ও আর্থিক কাঠামোর সম্পর্কে ধারণা গ্রহণের কোনো বিকল্প নেই। সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় ঋণ সহায়তা কার্যক্রমে সফলতা অর্জনে প্রয়োজনীয় সংস্কার ও সংস্থাগুলোর দক্ষতা বাড়ানো একান্ত অপরিহার্য।       

স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, করোনা প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় দেশে দীর্ঘ মেয়াদে ছুটি ও লকডাউনের ফলে সিএমএসএমই খাত ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয় এক গবেষণায় দেখা যায়, ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে এসএমই খাতে সামগ্রিকভাবে আয় হ্রাস হয়েছে প্রায় ৬৬ শতাংশ এবং প্রায় ৭৬ শতাংশ  উৎপাদিত পণ্য অবিক্রিত থেকে গেছে।

তিনি বলেন, প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টেশন, জামানতের অভাব ও প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণ প্রদানে ব্যাংকের অনাগ্রহসহ ঋণ বিতরণে ধীর গতি এ কার্যক্রমকে আরও দীর্ঘায়িত করছে। যার ফলে এসএমই খাতের উদ্যোক্তারা নানাবিধ প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হচ্ছেন। সিএমএসএমই খাতের সুনির্দিষ্ট কোনো ডাটাবেইজ না থাকায় এ খাতের সঠিক অবস্থা জানা সম্ভব হচ্ছে না। 

অনুষ্ঠানে এসএমই ফাউন্ডেশনের সহকারী মহাব্যবস্থাপক সুমন চন্দ্র সাহা মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। 

তিনি বলেন, এসএমই ফাউন্ডেশনের নিজস্ব তহবিল থেকে ইতোমধ্যে ৪০টি জেলায় ২ হাজার ১৮৬ জন এসএমই উদ্যোক্তাদের মাঝে ব্যাংকের মাধ্যমে প্রায় ১২২ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। যার মধ্যে নারী উদ্যোক্তাদের সংখ্যা ৫২৪ জন।
 
তিনি জানান, অর্থ বিভাগ ২০২১-২২ অর্থবছরে এ খাতের উদ্যোক্তাদের জন্য ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের ব্যবসা চালু, ব্যবসা পরিচালনার জন্য চলতি মূলধন (ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল) ঋণ, মূলধনী যন্ত্রপাতি ও ব্যবসা সম্প্রসারণে ৪ শতাংশ হারে ঋণ সহায়তা দেওয়া হবে। 

আরএম/ওএফ