একদিক থেকে সন্দীপ ভাগ্যবান, কারণ তার হাতে পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়নে পরিকল্পনা করার সময়  আছে।

বেশ একটা আয়োজন করে ঘর থেকে বের হয়ে দোকানে গিয়ে জুতা-স্যান্ডেল কিনতে যাওয়ার পরিচিত যে দৃশ্যপট রয়েছে, মহামারির পর লকডাউনের কারণে সারা বিশ্বেই তার একটা পরিবর্তন এসেছে। বাটা ইন্ডিয়াও তার ব্যতিক্রম ছিল না, কঠিন ৯টা মাস পার করতে হয়েছে তাদের। আগের বছরগুলোর তুলনায় ক্যালেন্ডারবর্ষ ২০২০-এর শেষ তিন প্রান্তিকে মুনাফার হার কমেছে তাদের।  বিক্রির কমে যাওয়ার কারণে পরপর শেষ দুই প্রান্তিকে তাদের নিট ক্ষতিও হয়েছে। 

এ অবস্থায় বাটা ইন্ডিয়ার প্রধান নির্বাহী সন্দীপ কাটারিয়ার অবস্থান নড়বড়ে হয়ে যাওয়াটাই এক রকমের স্বাভাবিক ছিল বললে ভুল হবে না। কিন্তু ঘটনা ঘটলো প্রায় উল্টো কিছু। নভেম্বরের ৩০ তারিখে পরিবার-মালিকানাধীন এই মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিটি তাদের গ্লোবাল সিইও হিসেবে সন্দীপের নাম ঘোষণা করে। করপোরেট প্রতিষ্ঠানটির ১২৬ বছরে ইতিহাসে সন্দীপই প্রথম ভারতীয় যিনি এ দায়িত্ব পেলেন।  

বাটা ইন্ডিয়ার সদর দফতর গুরুগ্রামে। নতুন দায়িত্বের খবর আসার পর সেখান থেকে ভিডিও কলে ফোর্বস ইন্ডিয়াকে তিনি বললেন, যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করছি সেখান থেকে স্বীকৃতি পাওয়াটা সবসময়ই আনন্দের। গ্লোবাল সিইও'র খবরটা শুনে নিজেকে বাটার সফলতার অংশীদার মনে হচ্ছে। খেলার মাঠে বা প্রথম চাকরিতে বাটার জুতা পরেই আমরা বড় হয়েছি। 

সন্দীপের আগে এই দায়িত্বে ছিলেন আলেক্সিজ নাসারাদ।  

ভারতে বাটার ব্যবসার হালচালের দিকে তাকালে দেখা যায়, ২০১৭ সালের আগস্টে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই সন্দীপ ঠিক ঠিক বক্সেই টিক দিয়ে আসছেন, অর্থাৎ তিনি তার দায়িত্ব বুদ্ধিমত্তার সাথেই পালন করে আসছেন। মহামারি চলাকালেও আয় ও বিক্রি বাড়াতে এবং ক্রেতাদের জন্য সার্বিক পরিস্থিতির উন্নয়নে দক্ষতার সঙ্গে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।

আয়তনে বাটার সবচেয়ে বড় বাজার হলো ভারত; যেখানে তাদের প্রায় ১৫০০ স্টোর রয়েছে। বাটার মোট আয়ের এক-পঞ্চমাংশ আসে প্রতিষ্ঠানটির ভারতীয় বাজার থেকে। আয়ের হিসাবে ভারতের পরেই রয়েছে ইতালি। এ ছাড়াও চিলি ও কলোম্বিয়াও বাটার অন্যতম বড় বাজার। বাটা সু অর্গানাইজেশনের জন্ম ১৮৯৪ সালে। বর্তমানে ৭০টি দেশে তাদের ব্যবসা রয়েছে। আফ্রিকা, উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা, ইউরোপ, দক্ষিণপূর্ব এশিয়া এবং ভারতীয় উপমহাদেশে সবমিলে তাদের ৫৩০০ স্টোর রয়েছে।  

যে অবদানে বড় এই দায়িত্ব পেলেন সন্দীপ 
করোনার পর যে অবস্থায় বাটা ইন্ডিয়া পড়েছিল, সেখান থেকে সন্দীপ ও তার টিম ধীরে ধীরে আয়ের রেখা ঊধ্বমুখী করতে সফল হয়েছেন। নতুন ও হাইয়ার-ভ্যালু প্রোডাক্ট সামনে এনে ও আরও ভালো ব্র্যান্ড পজিশনিংয়ে মাধ্যমে তারা সফল হয়েছেন। বিক্রির হিসাবে বাটা ভারতের সবচেয়ে বড় খুচরা ফুটওয়্যার বিক্রেতা। বাটার পেছনে রয়েছে প্যারাগন, রিল্যাক্সো, লিবার্টি সুজ ও পুমা। 

ব্যবসায় প্রবৃ্দ্ধি বাড়াতে বাটা মূলত তরুণদের টার্গেট করে। সেখান থেকেই তারা নাইন-টু-নাইন, পাওয়ার ফিটনেস এবং অ্যাথলেইজারের মতো কালেকশনগুলো সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাজারে আনে। এসব পণ্যের প্রচার-প্রচারণার অংশ হিসেবে বাটার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে অভিনেতা কৃতী স্যানন, প্রয়াত অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুত ও ভারতীয় ক্রিকেটার স্মৃতি মান্ধানাকে দেখা যায়। 

মহামারির পর ফুটওয়্যারে ক্ষেত্রে মানুষের চাহিদার ট্রেন্ডেও পার্থক্য এসেছে। আগে যেখানে ক্রেতাদের করপোরেট লেদার সু পছন্দ ছিল সেখানে দেখা গেছে, মহামারি শুরু হওয়ার পর স্যান্ডেল বা স্লিপারের মতো খোলামেলা ও ধোওয়া যায় এমন ফুটওয়্যারের চাহিদা বেড়ে যায়। উৎসবের মৌসুম ঘিরে এখন লোফার সু, ক্যাজুয়াল সু, অ্যাকটিভ ও স্পোর্টসওয়্যার সুয়ের চাহিদাও বেশি থাকে। আর যেহেতু অনেক প্রতিষ্ঠানই এখনও তার কর্মীদের বাসা থেকে কাজ করার সুযোগ দিচ্ছে তাই ক্যাজুয়াল ও অ্যাকটিভ ওয়্যার ফুটওয়্যারের ক্ষেত্রে বাটা আরও কিছুদিন এভাবেই মানুষের পছন্দের তালিকায় থেকে যাবে, অন্তত স্কুল ও অফিস না খোলা পর্যন্ত।  

বাটা ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান ও স্বতন্ত্র পরিচালক আশ্বিনী উইন্ডলাস বলছেন, গেল কয়েক বছরে বাটা ইন্ডিয়া টিম তীব্র প্রতিযোগিতামূলক এই বাজারে ফুটওয়্যার উৎপাদন, আয় এবং মুনাফার ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি দেখেছে এবং একইসঙ্গে ক্রেতার চাহিদার দিকটা বোঝার সক্ষমতাও তাদের বেড়েছে।  

মহামারির শুরুর পর সন্দীপ নিয়ে এলেন বাটা চ্যাটশপ। যেখানে ক্রেতারা টেক্সট ম্যাসেজ করতে পারেন, কাছের কোনো শোরুমের দায়িত্বপ্রাপ্তের সাথে নিজের পছন্দের জুতা বা স্যান্ডেল নিয়ে কল করে অথবা ভিডিও চ্যাট করতে পারেন, অনলাইনে সেটা কিনতে পারেন এবং মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সেটার ডেলিভারি পেয়ে যান। 

সন্দীপ কাটারিয়া কীভাবে গ্লোবাল সিইও'র পদটি পেলেন তার ব্যাখ্যায় উইন্ডলাস বলছেন,  ভারত একটি বৈচিত্রপূর্ণ বাজার, এর সঙ্গে গত কয়েকবছরে এই বাজারে বাটাকে বেশ কিছু জটিল পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে, যেমন- গুডস অ্যান্ড সার্ভিস ট্যাক্স, ডিজিটাল উদ্ভাবনকেন্দ্রীক পরিবর্তন, বিশ্ব অর্থনীতির ধীরগতি আর এখন এই মহামারি। উদ্ভাবনী মার্কেটিং আইডিয়ার মাধ্যমে এই ক্ষেত্রে বাজার পরিচালনা করা ও বেলা শেষে প্রফিট অ্যান্ড লস স্টেটমেন্টে তার চিত্র ফুটে ওঠাটাই আসল কথা। 

তিনি আরও বলেন, মহামারির শুরুর পর সন্দীপ নিয়ে এলেন বাটা চ্যাটশপ। যেখানে ক্রেতারা টেক্সট ম্যাসেজ করতে পারেন, কাছের কোনো শোরুমের দায়িত্বপ্রাপ্তের সাথে নিজের পছন্দের জুতা বা স্যান্ডেল নিয়ে কল করে অথবা ভিডিও চ্যাট করতে পারেন, অনলাইনে সেটা কিনতে পারেন এবং মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সেটার ডেলিভারি পেয়ে যান। 

এছাড়া বাটার ভ্রাম্যমাণ স্টোরও চালু করেন তিনি। ভ্রাম্যমাণ স্টোরগুলোর কাজের পরিধি হলো- বিভিন্ন রেসিডেন্সিয়াল কমপ্লেক্স এবং কনডোমিনিয়ামে। মহামারিকালে কমপ্লেক্স এবং কনডোমিনিয়ামের বাসিন্দাদের ক্রেতাদের নিরাপদে ও স্বাচ্ছন্দে কেনাকাটার সুযোগ করে দেয় ভ্রাম্যমাণ স্টোরগুলো। কখনও যদি ক্রেতার পছন্দের সাইজ, কালার বা ডিজাইন না পাওয়া যায় তাহলে তা কাছের কোনো বাটা স্টোর থেকে তারা জোগাড় করে দেয়। ভারতের ৩৫টির বেশি শহরে বাটা তাদের এই  স্টোর অন হুইল চালু করেছে।    

২০১৯-এ কোম্পানিটি তাদের ফ্ল্যাগশিপ লয়্যালিটি প্রোগ্রাম বাটা ক্লাব ফের চালু করে। বাটা ক্লাবের ১৫ মিলিয়ন সক্রিয় সদস্য রয়েছে। নির্দিষ্ট কোনো শোরুম থেকে একজন ক্রেতার কেনাকাটার যাবতীয় তথ্য সংরক্ষণে  আগের চেয়ে উন্নত অ্যানালিটিক্স ব্যবহার করে প্রচারণার ক্ষেত্রে নতুন কৌশল নেয়া হয়েছে।  

সন্দীপ ও তার ভারতীয় টিম এসব পরিকল্পনার বাস্তবায়ন খুবই দক্ষতার সাথে করেছেন। উইন্ডলাস বলছেন, সবচেয়ে উল্লেখ্যযোগ্য বিষয়টি হলো ভারতীয় বাজারে এসব পরিকল্পনার সমস্তটা আমরা অন্যান্য জায়গাতেও প্রয়োগ করতে পারি। 

বাটা ইন্ডিয়ার মোট বিক্রির ১৫ থেকে ১৮ শতাংশ এসেছে ডিজিটাল মাধ্যমে এবং বিপণণের নতুন ধরনের এসব উদ্যোগ থেকে। অর্থবছর ২০২০-এ বাটা ৪.৯৩ কোটি জোড়া ফুটওয়্যার বিক্রির কথা জানিয়েছে, যার মূল্য ৩,১২২.২ কোটি রুপি। একই সময়ে এই বাজারে বাটার প্রতিদ্বন্দ্বী রিল্যাক্সো বাটার চেয়ে তিন গুণ  বেশি (১৭.৯ কোটি জোড়া) বিক্রি করেছে। কিন্তু তাদের পণ্যগুলো ছিল বাটার চেয়ে কমদামী। বিক্রিতে বাটার চেয়ে এগিয়ে থেকেও আয়ে তারা পিছিয়ে ছিল বাটার চেয়ে। একই সমেয় রিল্যাক্সোর আয় হয়েছে ২,৪১০ কোটি রুপি।  ডিসেম্বরের ৯  তারিখ পর্যন্ত হিসাব অনুসারে বাটা ইন্ডিয়ার বাজার মূলধন ২০,১৪৪.১২ কোটি রুপি, যেখানে রিল্যাক্সোর বাজার মূলধন ১৭,৯২৮ কোটি রুপি। 

সন্দীপের ভোডাফোনে থাকার সময়টাও ওই প্রতিষ্ঠানের জন্য লাভজনক প্রমাণিত হয়েছে। তিনি বলছেন, এলাকা-ভিত্তিক টার্গেটেড ম্যাসেজিং, স্টোরের কাছাকাছি এলাকার গ্রাহক চিহ্নিতকরণ, রিওয়ার্ড পয়েন্ট অফারিং এবং অন্যান্য প্রচারণার ক্ষেত্রগুলো আরও গভীর হয়েছে আমার টেলিকম অভিজ্ঞতায়।     

প্রবৃদ্ধি ফিরবে ২০২১-এর মাঝামাঝি 
চীন, দক্ষিণ কোরিয়াসহ এশিয়ার অন্যান্য অর্থনীতির মতো ভারতেও গত তিন মাসে ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড বেড়েছে। সেপ্টেম্বরে শেষ প্রান্তিকে হাই ফ্রিকোয়েন্সি সূচকগুলো ইতিবাচক ধারায় রয়েছে, তবে চাকরি হারানো বা বেতন কাটছাট, ডেবিট ট্রানজেকশনে বাউন্স রেট বেড়ে যাওয়া এবং ব্যাংক থেকে ঋণের ক্ষেত্রে ধীরগতিই প্রমাণ করে যে অর্থনীতি তার স্বাভাবিক ধারায় এখনও ফেরেনি।  

অর্থনীতিতে বছর শেষের ছুটির সময় এলেও সন্দীপ সময় নষ্ট করছেন না। তিনি বলছেন,  ড্রেস সু এবং ফ্যাশন ফুটওয়্যারের ক্ষেত্রে ট্রেন্ডে আমরা আরও ক্যাজুয়ালাইজেশন দেখবো।  ব্যাপারটির ব্যাখ্যা করে  সন্দীপ বলেন,  বাটা ও পাওয়ার ব্র্যান্ডে তারা নতুন নতুন স্নিকার উদ্ভাবন ও বিক্রিতে বাটা আরও মনোযোগী হবে। 

সুনির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনার কথা প্রকাশ না করে তিনি আরও বলেন, বাটা কমফিট ও নাইন-টু-নাইন কালেকশ- মূলত তরুণ ও কর্মজীবী নারীদের কথা মাথায় রেখে তৈরি এই লেবেলের ফুটওয়্যারগুলোর নকশা নিয়ে আরও কাজ করবে বাটা।  

বাজার ঘুরে দাঁড়ানোর একটা প্রবণতা থাকলেও বাটার প্রিমিয়াম লেদার সেগমেন্টের ক্ষেত্রে এখনই কোনো পরিবর্তন আসছে না। সন্দীপ বলছেন, 'সময়টা এখনও খারাপই। মানুষের চলাফেরা যেহেতু স্বাভাবিকের চেয়ে কমেছে, সামনের মাসগুলোতে তাই পরিস্থিতি কী হয় তা আমাদের দেখতে হবে।' সার্বিকভাবে বেচাবিক্রি কোভিডপূর্ব পরিস্থিতির ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশে ফিরে এসেছে এবং মানুষ এখন আগের চেয়ে বেশি খরচও করছে। সন্দীপ বলছেন, এখন মূলত ড্রেস স্যু, বিশেষ করে রেড লেবেল কালেকশনের চাহিদা বেশি।  

ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড বাড়তে থাকার পাশপাশি মানুষের চলাফেরাও আগের চেয়ে বেড়েছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ফুটওয়্যারের চাহিদাও বাড়ছে। যার কারণে বলা যায়, ডিসেম্বরের সার্বিক চিত্র সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের চেয়ে ভালো হবে। উইন্ডলাসের আশা আগামী বছরের মাঝামাঝি নাগাদ প্রবৃদ্ধির স্বাভাবিক ধারা ফিরে আসবে।

বর্তমানে বাটা ইন্ডিয়ার স্কুল সু’র ইনভেন্টরি বেশি আছে, তবে সন্দীপ বলছেন, স্কুল আবার খুললে সেটার বাস্তবায়ন ভালো হবে। বাটার অন্যান্য আন্তর্জাতিক বাজারের কর্মকৌশল নিয়ে কথা বলতে তিনি রাজি হননি। তার ভাষায় এ বিষয়ে কথা বলার সময় এখনও আসেনি। বাটা খুব শিগগিরই এর ইন্ডিয়া অপারেশনের প্রধানের নাম ঘোষণা করবেন বলে জানান তিনি। 

আগামী বছর বাটা তাদের ফ্রাঞ্চাইজ মডেলে আরও গুরুত্ব দেবে। উইন্ডলাস বলছেন, ছোট শহরগুলোতে ফ্রাঞ্চাইজ আউটলেট খোলার বিষয়ে আরও ভাবনাচিন্তা আসছে। ভারতে বাটার ১২০০ নিজেদের ব্র্যান্ডেড স্টোর, ১০০ হাশ পাপির ব্র্যান্ড স্টোর আর ২০০ ফ্রাঞ্চাইজ আউটলেট রয়েছে।  ফ্রাঞ্চাইজ স্টোরের দিকে বাটা এখন আরও বেশি মনোযোগী হচ্ছে। ডিসেম্বরের মধ্যে ভারতে আরও ৫০টি ফ্রাঞ্চাইজ স্টোর খুলে যাবে।  

রুটিন নেটওয়ার্ক অপটিমাইজেশনের অংশ হিসাবে বাটা ২০১৯ সালে ভারতে ৪৮ থেকে ৫০টির মতো আউটলেট বন্ধ করে দেয়। 

মহামারি শুরুর পর থেকে কোম্পানিটি তাদের প্রাত্যহিক ব্যবসায় বেশ কঠোর বিধিনিষেধ পালন করেছে। কারখানাগুলোতে এবং কিছু প্রধান স্টোরে কোম্পানিটি ব্যাকআপ হিসেবে কর্মীদের দ্বিতীয় একটি দল প্রস্তুত রেখেছিল। যদি কর্মীদের কেউ করোনায় আক্রান্ত হন বা কোয়ারেন্টাইনে পাঠানোর প্রয়োজন হয় তখন  যাতে ওই দলটিকে কাজে লাগানো যায়। এছাড়া কোনো ফুটওয়্যার যদি কেউ ট্রায়াল দেন তবে সেটি স্যানিটাইজ করা বা ৭২ ঘণ্টা আলাদা করে রাখার নিয়মও তারা মেনেছে।  

২০১২ সালের শুরুর দিক থেকেই শপিং মল বা স্টোরগুলোতে ক্রেতাদের পদচারণা বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। কিন্তু বিভিন্ন ব্র্যান্ডের চাহিদা বৃদ্ধির কারণে বর্তমান প্রোডাক্টের পোর্টফোলিও পুনর্নির্মাণ বা ডিসকাউন্টের অফার দেয়া হলে তা প্রতিষ্ঠানের প্রান্তিক প্রবৃদ্ধিতে বাড়তি চাপ তৈরি করবে।  

লকডাউন তুলে নেয়ার পর মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলা করছে এমন কিছু বড় বাজারের প্রবৃদ্ধি ধরে রাখাটাই এখন সন্দীপের জন্য আসল চ্যালেঞ্জ হবে। 

আন্তর্জাতিকভাবে কেনো প্রতিষ্ঠানকে নেৃতত্ব দেয়া ভারতীয় বা ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের তালিকায় এখন নাম উঠে গেছে সন্দীপ কাটারিয়ার। এ তালিকায় থাকা অন্য নামগুলোর মধ্যে রয়েছে- মাইক্রোসফটের সত্য নাঢ়েলা, অ্যালফাবেটের সুন্দার পিচাই এবং ডিবিএসের পীযূষ গুপ্ত। তাদের মতোই সন্দীপকেও বিশ্ববাজারে নিজ প্রতিষ্ঠানের সফলতার ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। একদিক থেকে সন্দীপ ভাগ্যবান, কারণ তার হাতে পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়নে পরিকল্পনা করার সময়  আছে।

ফোর্বস ইন্ডিয়া থেকে অনুবাদ নাঈম ফেরদৌস রিতম।