বিকাশ, রকেট, শিওর ক্যাশ ও ইউক্যাশের লোগো

শহর থেকে গ্রাম সব জায়গায় দ্রুত টাকা পাঠানোর সুবিধার্থে দেশে মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। করোনাভাইরাসের কারণে মোবাইলে আর্থিক সেবা দাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠানগুলো ওপর মানুষের নির্ভরশীলতা আরও বেড়েছে। পাশাপাশি যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন সেবা। ফলে প্রতিদিনই বাড়ছে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে গ্রাহক সংখ্যা। সেই সঙ্গে বাড়ছে লেনদেনের পরিমাণও।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মোবাইল আর্থিক সেবার (এমএফএস) হালনাগাদ পরিসংখ্যানের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দেশে বর্তমানে মোট ১৫টি ব্যাংক এই কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত। চলতি বছরের অক্টোবর মাস শেষে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের আওতায় নিবন্ধিত গ্রাহকের সংখ্যা ৯ কোটি ৬৪ জনে দাঁড়িয়েছে। ওই মাসেই লেনদেনের পরিমাণ ৫৩ হাজার ২৫৮ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। দিনে যার গড় এক হাজার ৭৫৮ কোটি টাকা। তবে এ প্রতিবেদনে ডাক বিভাগের ‘নগদ’ এর তথ্য নেই।

তথ্য বলছে, অক্টোবর মাসে মোবাইল ব্যাংকিং লেনদেন ও গ্রাহক সংখ্যার সঙ্গে এজেন্টের সংখ্যাও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ লাখ ১৮ হাজার ৬৭৭ জনে।

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে শুধু লেনদেন নয়, যুক্ত হচ্ছে অনেক নতুন নতুন সেবাও। বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির বিল অর্থাৎ সেবা মূল্য পরিশোধ, কেনাকাটার বিল পরিশোধ, বেতন-ভাতা প্রদান, বিদেশ থেকে টাকা পাঠানো অর্থাৎ রেমিট্যান্সসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সেবা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া ব্যাংক থেকে মোবাইলে ও মোবাইল থেকে ব্যাংকেও লেনদেন করার সুবিধাও পাচ্ছেন গ্রাহক।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবর মাসে এমএফএসে রেমিট্যান্স সংগ্রহ ৪ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়েছে। এ সময় রেমিট্যান্স এসেছে ১১৫ কোটি ১৬ লাখ টাকা। ব্যক্তি হিসাব থেকে ব্যক্তি হিসাবে অর্থ স্থানান্তর হয়েছে ১৬ হাজার ৫৬৬ কোটি টাকা। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বেতন-ভাতা বিতরণ হয়েছে এক হাজার ৯১৮ কোটি টাকা। এছাড়া অক্টোবরে বিভিন্ন সেবার বিল পরিশোধ করা হয়েছে ৮৮৬ কোটি টাকা। কেনাকাটার বিল পরিশোধ ৩৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৭৪৬ কোটি টাকা।

২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১১ সালের ৩১ মার্চ বেসরকারি খাতের ডাচ-বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালুর মধ্য দিয়ে দেশে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের যাত্রা শুরু হয়। এর পরপরই ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু করে বিকাশ। বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার বাজারের সিংহভাগই এ প্রতিষ্ঠানটির দখলে।

এসআই/এমএইচএস/এফআর