জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে বক্তব্য রাখছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক / ছবি- ঢাকা পোস্ট

করযোগ্য আয়ের ওপর কর দিয়ে দেশের রাজস্ব আয় বাড়িয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী আনিসুল হক।

মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সম্মেলন কক্ষে ‘রূপকল্প বাস্তবায়ন ও আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে আয়করের ভূমিকা’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

আনিসুল হক বলেন, করযোগ্য আয় যাদের আছে তাদের কর দেওয়া উচিত। করযোগ্য আয়ের ওপর কর দিয়ে দেশের রাজস্ব আয় বাড়ান, কর দিয়ে দেশের মানুষের পাশে দাঁড়ান। অন্যদিকে ব্যয়ের ক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে জনগণের করের টাকা যেন অপচয় না হয়। 

তিনি বলেন, দিন দিন প্রত্যক্ষ করের পরিমাণ বাড়ছে। দেশকে এগিয়ে নিতে এর বিকল্প নেই। রূপকল্প ২০৪১ এর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে রাজস্ব আয় বৃদ্ধি করতে হবে। 

এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই’র সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।

জসিম উদ্দীন বলেন,  প্রাইভেট-পাবলিক পার্টনারশিপের মাধ্যমে লক্ষ্য পূরণে এগিয়ে যেতে হবে। কোনো কিছু চাপিয়ে দিলে হবে না। আমরা আমদানি-নির্ভর হয়ে থাকতে চাই না। শিল্পের বিকেন্দ্রীকরণ করে এর সম্প্রসারণ ঘটাতে হবে।

তিনি বলেন, করনেট বৃদ্ধি করা দরকার। উপজেলা পর্যায়ে কর দেওয়ার অনেক ব্যক্তি রয়েছেন। এজন্য উপজেলায় এনবিআরের অফিস থাকা জরুরি। 

আয়কর যেন আয়ের ওপরেই হয়— এমন দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, এনবিআর অগ্রিম আয়কর নিয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে প্রকৃত আয়কর নির্ধারণে অনেক জটিলতা দেখা দেয়। যে টাকা এনবিআর ফেরত দেবে তা নেওয়ার কী দরকার? অগ্রিম আয়কর প্রত্যাহার করা উচিত।

অন্যদিকে, এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, মেইড ইন বাংলাদেশ- স্লোগান আমরা ধারণ করি। বর্তমানে মধ্যবিত্তের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ছে। তাদের হোম এপ্লায়েন্স পণ্যের (ফ্যান, মাইক্রোওয়েভ ও টিভি ইত্যাদি ) চাহিদা বেশি। এতদিন এ খাত আমদানি-নির্ভর ছিল। আমরা চাই এসব পণ্য উৎপাদনে বিশেষ সুবিধা দিয়ে দেশীয় শিল্পকে এগিয়ে নিতে। এ খাতে দেশ স্বনির্ভর হোক। দেশের জনশক্তিকেও কাজে লাগাতে হবে।

‘মুজিব বর্ষের অঙ্গীকার, সবাই মিলে দেব কর’— স্লোগানকে সামনে রেখে মঙ্গলবার সকালে এনবিআরের সামনে বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে ১৪তম জাতীয় আয়কর দিবসের উদ্বোধন হয়।

এনবিআরসহ প্রতিষ্ঠানটির ৩১টি কর অঞ্চলে একযোগে দিবসটি উদযাপন হচ্ছে। চলমান বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে জনসমাগমের ঝুঁকি বিবেচনায় আয়কর দিবসের র‍্যালি হয়নি এবার। তবে দিবসটি উপলক্ষে সব আয়কর অফিস সজ্জিত করা হয়েছে।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। জাতীয় আয়কর দিবসে বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় ক্রোড়পত্র প্রকাশ হয়েছে। টেলিভিশন চ্যানেলগুলোও বিশেষ আয়োজন রেখেছে।

২০০৮ সাল থেকে দেশে আয়কর দিবস উদযাপিত হচ্ছে। আগে প্রতি বছর ১৫ সেপ্টেম্বর দিবসটি উদযাপিত হতো। তবে ২০১৬ সাল থেকে ৩০ নভেম্বর আয়কর দিবস পালন করছে এনবিআর। এদিন ব্যক্তি-শ্রেণির আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন জমা দেওয়ারও শেষ সময়।

আরএম/এমএআর/