ঢাকা ব্যাংকের বংশাল শাখার ভল্ট থেকে এক কর্মকর্তাই সরিয়েছেন পৌনে ৪ কোটি টাকা। এ ঘটনায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ওই শাখার দুই কর্মকর্তাকে পুলিশ হেফাজতে দিয়েছে। তারা হলেন- শাখাটির ক্যাশ-ইনচার্জ রিফাজুল হক ও ম্যানেজার (অপারেশন) এমরান আহমেদ। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শুক্রবার (১৮ জুন) ঢাকা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এমরানুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, বৃহস্পতিবার ব্যাংকের শাখায় আমাদের ইন্টারনাল অডিট হয়। এরপরই টাকার অংকে অসঙ্গতি দেখা যায়। ক্যাশ কম পাওয়ায় আবারও ইনভেস্টিগেশন করা হয়। পৌনে চার কোটি টাকার মতো কম ছিল। এরপর দায়িত্বে থাকা ক্যাশ-ইনচার্জের কাছে জানতে চাইলে তিনি প্রাথমিকভাবে ক্যাশ সরিয়ে ফেলার বিষয়টি স্বীকার করেন। এ কাজটি তিনি একাই করেছেন বলে জানিয়েছেন ক্যাশ-ইনচার্জ রিফাজুল হক। কী জন্য এই টাকা সরিয়েছেন তা এখনও তিনি জানাননি।

এমডি জানান, পরবর্তীতে আমরা নিয়ম অনুযায়ী লিগ্যাল প্রসেসে ব্যবস্থা নিয়েছি। যেহেতু দুজন দায়িত্বে ছিলেন তাই ক্যাশ-ইনচার্জ ও ম্যানেজার (অপারেশন) দুজনকে পুলিশে সোপর্দ করেছি। এখন সংশ্লিষ্ট সংস্থা তদন্ত করে বলতে পারবে কীভাবে ও কী জন্য এ টাকা সরানো হয়েছে।  

ঢাকা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এমরানুল হক

এমরানুল হক জানান, গতকাল (বৃহস্পতিবার) বিষয়টি ধরা পড়েছে। এখন দেখতে হবে কতদিনে টাকা সরিয়েছে। এজন্য কয়েকদিন সময় লাগবে। আমরা আইনের হাতে দিয়েছি, পাশাপাশি নিজস্ব একটি তদন্ত হবে। এরপর পুরো ঘটনাটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে পারব। এখন পর্যন্ত প্রায় ৩ কোটি ৭৭ লাখ ৬৬ হাজার টাকার মতো সরানো হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। তদন্ত করে বিস্তারিত জানাতে পারব। 

এ বিষয়ে ডিএমপির লালবাগ বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মো. জসিম উদ্দিন মোল্লা ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঢাকা ব্যাংকের বংশাল শাখা ম্যানেজার আবু বক্কর সিদ্দিক তাদের দুই কর্মকর্তাকে থানায় সোপর্দ করেছেন বৃহস্পতিবার রাতে। তার অভিযোগ ছিল, অডিটের মাধ্যমে তারা জানতে পেরেছেন ব্যাংকের ভল্ট থেকে তিন কোটি ৭৭ লাখ ৬৬ হাজার টাকা এই দুই কর্মকর্তা আত্মসাৎ করেছেন। আমরা আটক দুই কর্মকর্তাকে ৫৪ ধারায় আদালতে পাঠিয়েছি। আইনগত যে প্রক্রিয়া আছে সেটা আমরা এখন করছি। 

এ ঘটনায় এখনো মামলা দায়ের হয়নি। ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে বংশাল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আবুল কালাম ভূঁইয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ বিষয়ে একটি মামলা হবে। পরে মামলাটি দুদকে চলে যাবে এবং আসামিদেরও আমরা দুদকে হস্তান্তর করে দেব। বিষয়টি দুদক তদন্ত করে দেখবে।

কয়েক দিন আগেই ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে ওই ব্যাংকের একজন আইটি অফিসারের ২ কোটি ৫৭ লাখ টাকা সরোনোর গল্প সামনে আনে পুলিশ। ওই ঘটনাও ডাচ বাংলা ব্যাংকের অডিটে ধরা পড়ে। তবে ততদিনে ঘটনার মূল হোতা চলে গেছেন দেশের বাইরে। 

এসআই/এইচকে/জেএস