করোনার প্রথম বছর ২০২০ সালে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) থেকে সরকারের রাজস্ব আয় হয়েছিল ১৮৫ কোটি টাকা। আর করোনার দ্বিতীয় বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে সরকারের রাজস্ব আয় হয়েছে ৪২৫ কোটি ৮৬ হাজার ৯২০ টাকা। করোনার প্রথম বছরের তুলনায় দ্বিতীয় বছরে ডিএসই থেকে সরকারের রাজস্ব আয় হয়েছে দ্বিগুণ। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

আয়কর অধ্যাদেশ অনুসারে, দুই প্রকার শেয়ার কেনা-বেচা থেকে সরকার রাজস্ব আয় পেয়ে থাকে। এর মধ্যে প্রথম প্রকার হলো- কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকদের শেয়ার কেনা-বেচা থেকে রাজস্ব আয়। দ্বিতীয় প্রকার হলো- বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কেনা-বেচায় ব্রোকারেজ হাউজের ওপর আরোপিত কর।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গেল বছরের শেষ দুই থেকে তিন মাস পুঁজিবাজার টালমাটাল থাকলেও ২০২১ সালের প্রথম ৯ থেকে ১০ মাসে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়েছে। ফলে বছরের পর বছর নিষ্ক্রিয় থাকা বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজারে সক্রিয় হয়ে লেনদেন করছেন। তাদের লেনদেন বৃদ্ধির ফলে সরকার এ খাত থেকে রাজস্ব পেয়েছে দ্বিগুণ। লেনদেন যত বেশি হবে, সরকার এ খাত থেকে আরও বেশি রাজস্ব পাবে। তাই সরকারের উচিত সঠিক পলিসি ব্যবহার করে পুঁজিবাজারকে স্থিতিশীল রাখা।

ডিএসইর তথ্য মতে, ২০২১ সালে ডিএসইতে ৩৬৫ দিনের মধ্যে ২৪০ দিন পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়েছে। এসব কার্যদিবসে উদ্যোক্তা-পরিচালক ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কেনা-বেচা বাবদ মোট তিন লাখ ৫৪ হাজার ৫২ কোটি ৮৬ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। এ লেনদেন থেকে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের শেয়ার বিক্রির ও ব্রোকারেজ হাউজের ওপর আরোপিত কমিশন বাবদ সরকারের রাজস্ব আয় হয়েছে ৪২৫ কোটি ৮৬ হাজার ৯২০ টাকা

ডিএসইর তথ্য মতে, ২০২১ সালে ডিএসইতে ৩৬৫ দিনের মধ্যে ২৪০ দিন পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়েছে। এসব কার্যদিবসে উদ্যোক্তা-পরিচালক ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কেনা-বেচা বাবদ মোট তিন লাখ ৫৪ হাজার ৫২ কোটি ৮৬ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। এ লেনদেন থেকে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের শেয়ার বিক্রির ও ব্রোকারেজ হাউজের ওপর আরোপিত কমিশন বাবদ সরকারের রাজস্ব আয় হয়েছে ৪২৫ কোটি ৮৬ হাজার ৯২০ টাকা।

এর আগের বছর ২০২০ সালে ২০৮ কার্যদিবসে শেয়ার কেনা-বেচা হয়েছিল। সে সময় শেয়ার কেনা-বেচা বাবদ লেনদেন হয়েছিল এক লাখ ৩৪ হাজার ৯৮১ কোটি ২২ লাখ টাকার। অর্থাৎ ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে লেনদেন বেড়েছে ২ লাখ ১৯ হাজার ৭১ কোটি ৬৪ লাখ টাকা, যা শতাংশের হিসেবে ১৬২ শতাংশ।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) নির্ধারিত কর হার অনুযায়ী, প্রত্যেক ব্রোকারেজ হাউসকে লেনদেনের ওপর দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ হারে কর দিতে হয়। অর্থাৎ কোনো ব্রোকারেজ হাউস ১০০ টাকার লেনদেন করলে ওই প্রতিষ্ঠানকে তার জন্য পাঁচ পয়সা কর দিতে হয়। সেই কর বাবদ রাজস্ব আয় হয়েছে ৩৫৩ কোটি ৯৭ লাখ ৬৮ হাজার ৬২৫ টাকা। আর উদ্যোক্তা-পরিচালকদের শেয়ার বিক্রি থেকে কর বাবদ রাজস্ব আয় হয়েছে ৭১ কোটি ৩ লাখ ১৮ হাজার ২৯৫ টাকা। তাতে ২০২১ সালে মোট রাজস্ব আয় হয়েছে ৪২৫ কোটি ৮৬ হাজার ৯২০ টাকা।

ডিএসইর পরিচালক ও সাবেক সভাপতি শাকিল রিজভী ঢাকা পোস্টকে বলেন, ২০২১ সালটা মোটামুটি ভালোই কেটেছে। ফলে লেনদেন বেড়েছে, লেনদেন বাড়ায় রাজস্ব আয়ও বেড়েছে।

তিনি বলেন, পুঁজিবাজার স্থিতিশীল থাকলে অটোমেটিক লেনদেন বাড়বে। এখানে যত বেশি শেয়ার কেনা-বেচা হবে, সরকার তত বেশি রাজস্ব পাবে। সরকারের উচিত এ খাতে আরও বেশি নজর দেওয়া।

বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, পুঁজিবাজার এখন স্থিতিশীল রয়েছে। তারল্য সংকট কাটতে শুরু করেছে। বাজারকে সাপোর্ট দেওয়ার জন্য বিশেষ ফান্ড ক্রিয়েট করা হচ্ছে। যাতে বাজারের প্রয়োজনে শেয়ার কিনে সাপোর্ট দিতে পারে।

এমআই/এসএসএইচ