পুঁজিবাজারে দুটি দুর্বলতা রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা ও বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান। 

তিনি বলেছেন, একটি ভালো বন্ড মার্কেটে না থাকা অপরটি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজারে সক্রিয় না হওয়া।

বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মাল্টিপারপাস হলে বেক্সিমকো গ্রিন সুকুক বন্ডের লেনদেনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

দুটি দুর্বলতার ব্যাখ্যায় সালমান এফ রহমান বলেন, বিশ্বের সবকটি স্টক মার্কেটে ইক্যুইটি মার্কেটের তুলনায় বন্ড মার্কেট শক্তিশালী। ইক্যুইটির তুলনায় বন্ড মার্কেট বড় অথবা সমান সমান। কিন্তু আমাদের এখানে উল্টো। এখন নতুন নতুন প্রোডাক্ট আসছে। পুঁজিবাজারে বৈচিত্র্য আছে। কিন্তু আমাদের মার্কেটে সেটা নেই।

দ্বিতীয় বিষয়টি উল্লেখ করতে গিয়ে তিনি বলেন, একটি স্থিতিশীল মার্কেটে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অবদান থাকে সবচেয়ে বেশি। রিটেইল ইনভেস্টরদের অংশগ্রহণ থাকে কম। কিনত আমাদের এখানে উল্টো। এখানে রিটেইল ইনভেস্টরদের বিনিয়োগ বেশি, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ কম। ফলে পুঁজিবাজার গুজব ভিত্তিক হয়ে থাকে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের উচিত রিটেইল ইনভেস্টরদের পোর্টফোলিও ম্যানেজ করা। যারা নতুন বিনিয়োগ করতে আসে তাদের পোর্টফোলিও ম্যানেজ করলে পুঁজিবাজারে উত্থান-পতনের জটিলতা কম হবে। পুঁজিবাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের আস্থা তৈরি করতে হবে।

সালমান এফ রহমান বলেন, সুকুকের যখন চিন্তা করা হচ্ছিল, তখন আমাদের ধারণা ছিল সাধারণ বিনিয়োগকারীরা এতে ব্যাপক সাড়া দেবে। কিন্তু বাস্তবে পুঁজিবাজারে এ ধরনের বন্ড নতুন হওয়ায় তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি। তবে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে সাড়া পাওয়া গেছে।

তিনি বলেন, পরবর্তী সাধারণ বিনিয়োগকারীরাও আগ্রহ দেখিয়েছে। যখন চিন্তা করা হচ্ছিল ব্যাংকের সুদের হার নয় ও ছয় করা হবে, এ খাতের ব্যবসায়ীদের মধ্যেও আশঙ্কা ছিল এটি ব্যবসার ক্ষেত্রে কতটা সহায়ক হবে। কিনত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে এটি বাস্তবায়ন হয়েছে। এখন দেখা যাচ্ছে নয় ও ছয় সুদের হারেও ব্যাংক ভালো ব্যবসা করছে।

বন্ড ইস্যুর উদ্যোগের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর এ উপদেষ্টা জানান, শুধু বেক্সিমকো সুকুক নয়, এরই মধ্যে ঢাকা সিটি করপোরশনের পক্ষ থেকে বন্ড ইস্যুর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। উত্তর সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে তিনটি আর দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে দুটি বন্ড ইস্যুর বিষয়ে কার্যক্রম চলছে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, সুকুক বন্ডের ট্রেড শুরু হলো। যত বাধাবিপত্তিই থাকুক, সামনে আরও নতুন নতুন কাজ করব। আমাদের সামনে ব্লু বন্ড, গ্রিন বন্ড অনেকগুলো চলে আসছে। আমরা ডেরিভেটিভস নিয়ে কিছু কাজ করছি, সেটা চলে আসবে।

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের অর্থনীতি নিয়ে যে স্বপ্ন আমরা এগিয়ে নিচ্ছি, সেটা আস্তে আস্তে বাস্তবায়িত হবে। আমাদের সরকার, মন্ত্রণালয় এবং ব্যবসায়ী, যারা এখন খুব সাহসিকতার সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে। এখন আমাদের জনগণ, জনসাধারণ এবং সবার কাছে একটাই চাওয়া, এখন আমাদের একটা স্ট্যাবিলিটি দরকার, বাকিটা পাবলিক-প্রাইভেট সেক্টরই এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে।

ডিএসইর চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ডিএসইর এমডি তারেক আমিন ভূঁইয়া উপস্থিত ছিলেন।

এমআই/এসএসএইচ