বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিতে শিক্ষার্থীদের কষ্ট লাঘব ও অর্থ সাশ্রয়ের জন্য গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা চালু হয় তিন বছর আগে। এরই মধ্যে নানা অব্যবস্থাপনার কারণে এই পদ্ধতি থেকে বের হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)। তারা আগে যেভাবে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজেদের উদ্যোগে ভর্তি পরীক্ষা নিতেন আসন্ন ভর্তি পরীক্ষা সেভাবে নিতে চায়। তবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) বলছে, আগের নিয়মে এই সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা হবে।

তবে দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরোধিতা ও অন্যান্য জটিলতা কীভাবে কাটিয়ে ওঠা যায় সে বিষয়ে ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের সঙ্গে বসবে ইউজিসির নীতিনির্ধারকরা। সোমবার (২০ মার্চ) দুপুরে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।

দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা বলেন, বিগত বছরের গুচ্ছ পদ্ধতির দীর্ঘ ভর্তি প্রক্রিয়ার জেরে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা গুচ্ছ থেকে বের হওয়ার দাবি তুলেছেন। এর ফলে কিছুটা হলেও সংকট তৈরি হয়েছে। এই বিষয়টি নিয়েই আলোচনা হবে। গুচ্ছ পদ্ধতির বিগত বছরের জটিলতাগুলো কিভাবে কাটিয়ে ওঠা যায় এবং বিষয়টি শিক্ষার্থীদের জন্য কীভাবে আরও সহজ করে তোলা যায়।

ইবি ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। রোববার (১৯ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২৫তম একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় সকলের সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ সিদ্ধান্ত ইবি উপাচার্য আজকের ইউজিসির সভায় উত্থাপন করবেন বলে জানা গেছে।

এর আগে, গত বুধবার জবি তাদের একাডেমিক কাউন্সিলের সভায়ও একই সিদ্ধান্ত নেন। সভা শেষে জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বলেছিলেন, একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্যরা সভায় তাদের বক্তব্য দিয়েছেন। তাদের বক্তব্য অনুযায়ী পরবর্তী সিন্ডিকেট সভায় আলোচনা করে গুচ্ছে থাকা না থাকার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এদিকে গুচ্ছ ভর্তি থেকে জবিসহ যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয় বের হয়ে গেলে তাদের জবাবদিহি করতে হবে বলে জানিয়েছেন ইউজিসির সদস্য ও গুচ্ছ ভর্তি সমন্বয়কারী প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আলমগীর। তিনি বলেন, গুচ্ছ ভর্তি শুরু হওয়ার পর থেকে জগন্নাথ ও শাহজালাল বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) নেতৃত্ব দিয়েছে। এখন যদি তারা বের হয়ে যেতে চায় তার সুস্পষ্ট কারণ ব্যাখ্যা করতে হবে।

বুধবার (১৫ মার্চ) আসন্ন ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের সমন্বিত ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় না থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছ জবি। এ সিদ্ধান্তের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া প্রফেসর আলমগীর ঢাকা পোস্টকে বলেন, জগন্নাথকে দাওয়াত দিয়ে গুচ্ছে আনা হয়নি। তারা স্ব-উদ্যোগে এসেছেন। গত দুটি ভর্তি পরীক্ষায় এ বিশ্ববিদ্যালয়টি সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করেছে। এখন নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিয়ে গুচ্ছ ভর্তি থেকে বের হয়ে যেতে চায়। কেন যেতে চায় তার সুষ্পষ্ট কারণ ব্যাখ্যা করতে হবে। 

তিনি বলেন, গত মাসেও শিক্ষামন্ত্রীর নেতৃত্বে এ সংক্রান্ত ভিসিদের নিয়ে বৈঠক হয়েছে। সেখানে বের হয়ে যাওয়ার কোনো ইঙ্গিত দেয়নি জবি।

এনএম/ওএফ