ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষাকে সম্পূর্ণ ডিজিটাইজেশন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ডাক ও টেলি যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের টেলিকম অধিদপ্তর এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের মধ্যদিয়ে এ প্রক্রিয়া হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) বাংলাদেশ সচিবালয়ের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়। এসময় ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনের উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের মূলভিত্তি হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা। বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় যুদ্ধের ধ্বংসস্তুূপে দাঁড়িয়েও প্রাথমিক শিক্ষাকে জাতীয়করণ করে গেছেন। শিশুদের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা আনন্দময় করে ডিজিটাল শিশু শিক্ষা পাঠ্যক্রম আবশ্যক। আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রচলিত পদ্ধতির শিক্ষাকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে রূপান্তরের কোনো বিকল্প নেই।

মোস্তাফা জব্বার বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিটি শিক্ষার্থীর হাতে বইয়ের পরিবর্তে একদিন ট্যাব বা ডিজিটাল ডিভাইস পৌঁছে যাবে এবং সেদিন খুবই কাছে। যুক্তরাজ্যে শতকরা ৮৮ শতাংশ শিশুর হাতে ট্যাব রয়েছে। তাদের বইয়ের দিকে তাকাতে হয় না। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা পদ্ধতির পরিবর্তনে সামান্য ফল দেবে, কিন্তু প্রাথমিকের ডিজিটাল রূপান্তরে শতভাগ ফল পাওয়া সম্ভব। 

তিনি আরও বলেন, শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরে আইসিটি বিভাগ থেকে একটি পাইলট প্রকল্প গ্রহণ করা হলেও নানা প্রতিকূলতায় তা বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। দুর্গম অঞ্চলের সুবিধা বঞ্চিত অসহায় শিশুদের জন্য সামাজিক দায়বদ্ধ তহবিলের মাধ্যমে নেওয়া উদ্যোগ শিক্ষার রূপান্তরের একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক। এর ফলে শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তর এগিয়ে নেওয়ার পথে পরবর্তী করণীয় ও প্রতিবন্ধকতা সম্পর্কে সম্যক ধারণা পাওয়া যাবে, যা শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তর বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করতে ভূমিকা রাখবে।

এসময় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বলেন, করোনাকালে অচল জীবনধারা সচল রাখার পাশাপাশি ঘরে বসে শিশুরা ডিজিটাল পদ্ধতিতে শিক্ষা গ্রহণ ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার বড় দৃষ্টান্ত। ডিজিটাল শিক্ষা বিস্তারে আমরা পৃথিবীর কাছে বাংলাদেশকে তুলে ধরতে চাই।

মূলত ডিজিটাইজেসন প্রকল্পের মধ্য দিয়ে বিটিআরসির সার্ভিস অবলিগেশন তহবিলের অর্থায়নে হাওর, প্রত্যন্ত, অনগ্রসর ও দুর্গম এলাকার ৬৫০ স্কুলে এ প্রকল্প ২ বছরের মধ্যে বাস্তবায়িত হবে। প্রকল্পের আওতায় ৬৫০ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সব ক্লাসরুম ডিজিটাল হবে। এরমধ্যে ৩০টি স্কুলে শিশুরা বইবিহীন বা অনলাইনে ট্যাবে লেখাপড়া করতে পারবে। তাদের ক্লাসে ডিজিটাল টিভি, আইপিএস ও ইন্টারনেট থাকবে। তাদের ২০২০ সালে ইনটেলের সঙ্গে উইটসা পুরষ্কার প্রাপ্ত ডিজিটাল কনটেন্ট দিয়ে পাঠদান করা হবে। ডিভাইস ও ইন্টারনেট থাকলে শিশুরা বাড়িতে বসে বা অনলাইনে ক্লাস করতে পারবে। বেসরকারিভাবে ২০০০ ও ২০১৫ সালে এ ধরনের শিক্ষাব্যবস্থা দেশে চালু হলেও সরকারিভাবে কোনো প্রকল্প গ্রহণ করে পাঠ্য বিষয়ের সম্পূর্ণ ডিজিটাইজেশন করে ডিজিটাল যন্ত্রের সহায়তায় শিক্ষার সম্পূর্ণ ডিজিটাইজেশন এ প্রথম।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব-গোলাম হাসিবুল আলম, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব আফজাল হোসেন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এম মনসুরুল আলম এবং টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মহসীনুল আলম প্রমুখ।

এইচএন/এসএম