শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় পাস করেও দুই বছরে এমপিও হতে না পারা এক হাজার ২৭০ জনকে ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শূন্য পদে নিয়োগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে এ নির্দেশনা বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনসিআরসিএ) চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, ২০১৯ সালে দ্বিতীয় নিয়োগ চক্রের ভুল চাহিদার সুপারিশের কারণে নিবন্ধন পরীক্ষায় পাস করেও নিয়োগ পায়নি এক হাজার ২৭০ শিক্ষক। এরপর গত বছর ৯ জুন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এক সভায় তাদের সমস্যা সমাধানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু প্রায় দেড় বছরেও সে নির্দেশনা বাস্তবায়ন হয়নি।

চিঠিতে বলা হয়, ওই সভায় নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাদের স্থায়ী ঠিকানার পার্শ্ববর্তী কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শূন্য পদে ও স্ব-স্ব বিষয়ের বিপরীতে পূর্বের সুপারিশের ধারাবাহিকতায় নিয়োগ দিতে হবে।

জানা গেছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পদ না থাকার পরও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শূন্য পদ দেখিয়ে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়। এর বিপরীতে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) তাদের সুপারিশ করে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানে গিয়ে তারা জানতে পারে, পদ শূন্য নেই। এতেই কপাল পুড়েছে ওই শিক্ষকদের।

গত দুই বছর ধরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, এনটিআরসিএ ঘুরেও তারা কোনো সমাধান পায়নি। সর্বশেষ গত বছর জুনে সমস্যা সমাধানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি নির্দেশ দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। এতে চরম হতাশায় পড়েন এসব শিক্ষকরা।

সর্বশেষ ৫ জানুয়ারি তারা এনটিআরসিএ-এর নতুন চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) মো. আশরাফ উদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাদের দাবি তুলে ধরেন।

সেখানে বঞ্চিতরা জানান, তারা ২০১৮ সালে দ্বিতীয় নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের ভুল তথ্যের কারণে নিয়োগ ও এমপিও হচ্ছে না। এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান দ্রুত সময়ের মধ্যে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন।

নিয়োগ বঞ্চিত প্রার্থী শাহাদাৎ হোসেন বলেন, শিক্ষামন্ত্রীকে এ জন্য আমরা ধন্যবাদ জানাই। তিনি আমাদের বিষয়টি মনে রেখে নিয়মিত মনিটরিং করেছেন। সেজন্য আমাদের দাবিগুলো এখন বাস্তবায়নের পথে।

গত বছর জুনে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে নারী কোটায় নবসৃষ্ট পদ, প্যাটার্ন জটিলতা, নব-যোগদানকারী নিয়োগ ও এমপিও বঞ্চিতদের সমস্যা নিয়ে একটি বিশেষ বৈঠক হয়। বৈঠকে তৎকালীন এনটিআরসিএ চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় শিক্ষামন্ত্রী সব সমস্যা সমাধানে এনটিআরসিএ-কে ছয়টি দিকনির্দেশনা দেয়।

এরপর গত ছয় মাসে নারী কোটা, নবসৃষ্ট ও অন্যান্য পদের সমাধান হলেও নিয়োগ ও এমপিও বঞ্চিত এক হাজার ২৭০ জনের বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি এনটিআরসিএ।

এনএম/এফআর