তরুণ অভিনেতা সিদ্ধার্থ শুক্লার মৃত্যুর জন্য অতিরিক্ত শরীরচর্চাকে দায়ী করছেন একদল মানুষ। কিন্তু তাদের এ যুক্তিতে একমত নন বলিউড-টলিউডের অনেক তারকাই।

যারা এ তরুণ অভিনেতার মৃত্যুর পেছনে অতিরিক্ত শরীরচর্চাকে দায়ী করছেন তাদের দাবি, সিদ্ধার্থ শুক্লা দিনের বেশিরভাগ সময়ই জিমে কাটাতেন। ফিটনেস ফ্রিক থাকার কারণে শরীরের ওপর অনেকটা অত্যাচার করেছেন তিনি। যা অকালে তার মৃত্যু ডেকে এনেছে। যদিও এসব দাবি একদমই মানছেন না অন্য তারকারা।  

বলিউডের সিদ্ধার্থের মতোই শরীরচর্চা করতে ভালবাসেন টলিউডের বিক্রম চট্টোপাধ্যায়। তার ইনস্টাগ্রামের দেওয়াল জুড়েও রয়েছে কসরতের নানা ছবি, ভিডিও।

বিক্রম মনে করেন, ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকতে সুগঠিত চেহারা থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ। তাই টালিগঞ্জ হোক বা মুম্বাই, প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকতে অনেকেই পেশিবহুল বা মেদহীন ঝরঝরে চেহারা তৈরির দিকে বাড়তি নজর দেন।

বলিউডের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বললেন, বরুণ ধাওয়ান থেকে হৃতিক রওশন, প্রত্যেকেই কিন্তু এ একই কাজ করছেন। চেহারার দিকে নজর দেবো না ভাবলেই তো সেটা হয় না। সে রকম মানুষ অবশ্য আছেন, যিনি নিজেকে এমন জায়গায় নিয়ে গেছে যে তিনি বলতে পারেন, অ্যাবস বা জিরো ফিগার না হলেও কোনও ক্ষতি হবে না আমার।

কাজের পাশাপাশি তারকাদের উপর থাকা কিছু বাড়তি চাপ নিয়েও ওয়াকিবহাল ‘ডান্স বাংলা ডান্স’-এর এ সঞ্চালক। সুতরাং ঠিক কী কারণে সিদ্ধার্থের মৃত্যু হয়েছে, সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি তিনি। তার কথায়, যাদের জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার ইচ্ছে, তারা প্রত্যেকেই একটা চাপের মধ্যে থাকেন। একজন মানুষের জীবনে কখন কী হচ্ছে, সে কী ভাবছে, সেটা কেউ বলতে পারে না।

বর্তমান প্রেক্ষাপটে নেটমাধ্যমকে মানসিক চাপ সৃষ্টির অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন বিক্রম। তিনি বলেন, নেটমাধ্যমে এখন এত নেতিবাচকতা! বিশেষত তারকাদের ক্ষেত্রে এটা বেশি হয়। কারণ তাদের পেশাগত এবং ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে জানা অনেক সহজ। এই ধরনের নেতিবাচকতা কার কীভাবে ক্ষতি করছে সেটা তো আমরা জানি না।

সিদ্ধার্থের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছিলেন বিক্রম চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বন্ধু অভিনেতা অঙ্কুশ হাজরা। তিনি মনে করেন, নিয়ম মেনে খাওয়া দাওয়া এবং শরীরচর্চা করলে কোনো ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। অঙ্কুশও নিজের চেহারা নিয়ে সচেতন। বিক্রমের মতো তিনিও শরীরচর্চা করেন। তার পেশিবহুল চেহারা দেখা গেছে একাধিক ছবিতে। কিন্তু সে রকম চেহারা করার জন্য পর্যাপ্ত শরীরচর্চার বাইরে অন্য কোনও পন্থায় বিশ্বাসী নন তিনি। অঙ্কুশের কথায়, অনেককে দেখেছি তাড়াতাড়ি ভালো চেহারা তৈরির জন্য নানা ধরনের ওষুধ খান। কিন্তু আমি মনে করি, এই ধরনের কাজ করা একেবারেই উচিত নয়। এই ধরনের ওষুধ খেলে অনেক সময় হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে, শরীরের ক্ষতিও হতে পারে।

তবে বিক্রমের মতোই অঙ্কুশ শরীরচর্চাকে সিদ্ধার্থের আকস্মিক মৃত্যুর কারণ বলে মানছেন না। তার কথায়, আমি একজনকে চিনি যিনি নিয়মিত ধূমপান করেন। তার বয়স ৮৫ বা ৮৬ বছর। তিনি এখনও বেঁচে আছেন। অথচ তার ছেলে কোনো নেশা না করেও হৃদরোগে মারা গেলেন। কার সঙ্গে কী হয়, তা বলা মুশকিল। মৃত্যুকে ভাগ্যের হাতে ছেড়ে দেওয়াই ভালো।

এসকেডি