রাজধানীর বাড্ডা এলাকার বাসিন্দা মাওলানা বশিরুল ইসলাম। মাদ্রাসায় পড়ার সময় থেকে পাতা, জর্দা, গুলসহ তামাকের রাজ্যে বিচরণ শুরু তার। ৫৫ বছর বয়সে এসে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, স্থূলতাসহ নানা রোগে আক্রান্ত তিনি। তবুও তামাকের নেশা ছাড়তে পারছেন না।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, এক মাস আগে তিনি হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হন। এক সপ্তাহের চিকিৎসায় তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন। তামাকজাত দ্রব্যের বিষয়ে চিকিৎসকের কড়া নির্দেশনায় কিছুটা কমালেও পুরোপুরি ছাড়তে পারেননি তিনি।

বশিরুল ইসলামের স্ত্রী সুফিয়া আক্তার ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের পরিবারে দৈনিক ৪০ টাকার পান-সুপারির প্রয়োজন হয়। সেইসঙ্গে পাতা বা জর্দাও লাগে বেশ। প্রতি মাসে পান-জর্দার পেছনে খরচ হয় দেড় থেকে দুই হাজার টাকা। শুধু এখানেই শেষ নয়, হার্টের সমস্যা আর ডায়াবেটিস থেকে স্বামীর শরীরে এখন নানা জটিলতা দেখা দিয়েছে। এখন প্রতি মাসে তার পেছনে সাত থেকে আট হাজার টাকার ওষুধসহ চিকিৎসাবাবদ আরও ১০ হাজারেরও বেশি অর্থ ব্যয় হচ্ছে। চিকিৎসা বন্ধ করলে বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এ অবস্থায় চিকিৎসার ব্যয় বহন করে সংসার চালাতে বেশ কষ্ট হচ্ছে।

আরও পড়ুন>>তামাক নিয়ন্ত্রণে আইন হচ্ছে : সংসদে স্বাস্থ্যমন্ত্রী

‘হার্ট অ্যাটাকের পর চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অতিমাত্রায় পাতা-জর্দা সেবনের কারণে আজ তার এ অবস্থা। এখন ভয়ের কারণ, যদি দ্বিতীয়বার হার্ট অ্যাটাক হয় তাহলে তাকে আর বাঁচানো যাবে না। ওনাকে বুঝিয়ে-শুনিয়ে কম খাওয়ানোর চেষ্টা চলছে।’

তামাক নিয়ন্ত্রণে বৈশ্বিক প্রকাশনা দি টোব্যাকো এটলাসের ২০১৮ সালের সংস্করণে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে প্রতি বছর এক লাখ ৬১ হাজারের অধিক মানুষ তামাকজনিত রোগে মৃত্যুবরণ করে। এদিকে বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ, আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটি ও ক্যান্সার রিসার্চ-ইউকের যৌথ গবেষণায় দেখা গেছে, সরকার সব তামাক থেকে যত রাজস্ব পায়, তার চেয়ে অনেক বেশি অর্থ তামাকজনিত রোগের চিকিৎসায় ব্যয় হয়

এমন পরিস্থিতি শুধু বশিরুল ইসলামের নয়, সারাদেশের অসংখ্য মানুষ ও পরিবারের নিয়মিত চিত্র এটি। সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলো বলছে, পাতা-জর্দাসহ তামাক সেবনে শুধু কিছু অর্থ নষ্ট হচ্ছে না, নীরবে-নিভৃতে একজন ব্যক্তি ও একটি পরিবারকেও নিঃস্ব করে দিচ্ছে।

তামাকে যত রাজস্ব, তার চেয়েও বেশি চিকিৎসা ব্যয়

বাংলাদেশে ধোঁয়াবিহীন তামাকের ক্ষেত্রে পানের সঙ্গে সাদা পাতা, আলা পাতা, জর্দা, মাড়িতে গুলের ব্যবহার বেশি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, বাংলাদেশে ধূমপান ও ধোঁয়াবিহীন তামাক সেবনের ফলে ফুসফুস ক্যান্সার, মুখ গহ্বরের ক্যান্সার, হৃদরোগ, স্ট্রোক, ফুসফুসের দীর্ঘমেয়াদি রোগ (সিএপিডি), ডায়াবেটিস, হাঁপানি ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ।

আরও পড়ুন>>তামাক চাষ বন্ধে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে পরিবেশ মন্ত্রণালয়

তামাক নিয়ন্ত্রণে বৈশ্বিক প্রকাশনা দি টোব্যাকো এটলাসের ২০১৮ সালের সংস্করণে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে প্রতি বছর এক লাখ ৬১ হাজারের অধিক মানুষ তামাকজনিত রোগে মৃত্যুবরণ করে। এদিকে বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ, আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটি ও ক্যান্সার রিসার্চ-ইউকের যৌথ গবেষণায় দেখা গেছে, সরকার সব তামাক থেকে যত রাজস্ব পায়, তার চেয়ে অনেক বেশি অর্থ তামাকজনিত রোগের চিকিৎসায় ব্যয় হয়।

তামাকের পেছনে অর্থব্যয় পরিবেশ, খাদ্য, শিক্ষা ও গৃহস্থালি কর্মকাণ্ডের ওপর প্রভাব ফেলে। ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডব্লিউবিবি) ট্রাস্টের হাংরি ফর টোব্যাকো শীর্ষক গবেষণায় দেখা গেছে, দরিদ্র অভিভাবকরা যদি তামাকের জন্য ব্যয়িত অর্থের ৬৯ শতাংশ খাদ্যের জন্য ব্যয় করে, তবে দেশে অপুষ্টিজনিত শিশুমৃত্যু অর্ধেকে নামিয়ে আনা সম্ভব

জানা গেছে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তামাক ব্যবহারের অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা, যা একই সময়ে তামাক খাত থেকে অর্জিত রাজস্ব আয়ের (২২ হাজার ৮১০ কোটি টাকা) চেয়ে অনেক বেশি।

তামাকে ব্যয়িত অর্থ খাদ্য-শিক্ষায় প্রভাব ফেলে

তামাকের পেছনে অর্থব্যয় পরিবেশ, খাদ্য, শিক্ষা ও গৃহস্থালি কর্মকাণ্ডের ওপর প্রভাব ফেলে। ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডব্লিউবিবি) ট্রাস্টের হাংরি ফর টোব্যাকো শীর্ষক গবেষণায় দেখা গেছে, দরিদ্র অভিভাবকরা যদি তামাকের জন্য ব্যয়িত অর্থের ৬৯ শতাংশ খাদ্যের জন্য ব্যয় করে, তবে দেশে অপুষ্টিজনিত শিশুমৃত্যু অর্ধেকে নামিয়ে আনা সম্ভব।

আরও পড়ুন>>তামাক পণ্য নিয়ন্ত্রণে মূল্যবৃদ্ধি ও সুনির্দিষ্ট করারোপের আহ্বান

গ্লোবাল অ্যাডাল্ট টোব্যাকো সার্ভের (গ্যাটস্) ২০১৭ সালের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বাংলাদেশে ১৫ থেকে ৬৪ বছর বয়সী তিন কোটি ৭৮ লাখ মানুষ অর্থাৎ ৩৫ দশমিক ৩ শতাংশ মানুষ তামাক (বিড়ি-সিগারেট, জর্দা, গুল ইত্যাদি) ব্যবহার করেন। অন্যদিকে, দরিদ্র ও নিরক্ষরদের মধ্যে তামাক সেবনের হার বেশি। 

গ্লোবাল ইয়ুথ টোব্যাকো সার্ভে ২০১৩ অনুযায়ী, বাংলাদেশে ১৩ থেকে ১৫ বছরের শিশুদের মধ্যে ধূমপায়ী ২ দশমিক ৯ শতাংশ এবং ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহারকারী ৪ দশমিক ৫ শতাংশ।

তামাক নিয়ন্ত্রণে সরকারের মাস্টার প্ল্যান থাকা জরুরি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, সরকার তামাক নিয়ন্ত্রণ চায় কি না, সেটা আগে দেখতে হবে। আমরা দেখছি যে দোকানগুলোতে প্রকাশ্যে তামাক পণ্য বিক্রি হচ্ছে। সরকার তো এগুলো বন্ধ করছে না। বরং সরকার সুযোগ দিচ্ছে। সরকার কেন চাইবে, এখান থেকে সরকারের বড় অঙ্কের ট্যাক্স আসে। এমনকি তামাক নিয়ন্ত্রণে যারা কাজ করেন, তারাও পুরোপুরি তামাক নিরসন চান না। কারণ, তামাক বন্ধ হলে তো তাদের প্রজেক্টও বন্ধ হয়ে যাবে। সহজ কথায় বলতে গেলে, তারা গুড় সরাতে চান না, কিন্তু মাছি তাড়াতে চান।

আরও পড়ুন>>তামাক আইন শক্তিশালীকরণে সব ধরনের সহযোগিতা থাকবে : তথ্যমন্ত্রী

‘তামাক নিয়ন্ত্রণে ব্লুমবার্গ বড় অঙ্কের একটা ফান্ড দিচ্ছে, এটা নিয়ে তাদেরও কার্যক্রম আছে। তারাও তামাক নিয়ন্ত্রণের কথা বলে ফান্ড তৈরি করে। এখন যদি সরকার তামাক একেবারেই নিয়ন্ত্রণ করতে চায়, তাহলে প্রথমত উচিত হবে তামাকের কারণে সর্বমোট ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করা। কিন্তু সরকার যদি শুধু ট্যাক্সের কথা চিন্তা করে, তাহলে নিয়ন্ত্রণ হবে না।’

আমরা জানি তামাক নিয়ন্ত্রণে সরকারেরও একটা কমিটমেন্ট আছে। কিন্তু সেই ঘোষণা নিয়ে বসে থাকলে হবে না, একটা মাস্টার প্ল্যান থাকতে হবে। একটা নির্দিষ্ট স্ট্র্যাটেজিক নিয়ে এগোতে হবে— যোগ করেন এ অধ্যাপক।

নতুন প্রজন্ম যেন কোনোভাবেই এ পথে পা না বাড়ায়

করণীয় প্রসঙ্গে আব্দুল হামিদ বলেন, ‘তামাক যদি আমরা বন্ধ করতেই চাই, তাহলে সবচেয়ে সহজ প্রক্রিয়া হলো, নতুন প্রজন্মের কেউ যেন কোনোভাবেই এ পথে পা বাড়াতে না পারে সেটা নিশ্চিত করা। এক্ষেত্রে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাগুলোকে নিয়ে সরকারকে প্ল্যান সাজাতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে তামাকবিরোধী কার্যক্রম আরও সক্রিয় করতে হবে। তবে যারা ইতোমধ্যে ঢুকে গেছে, তাদের নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। যারা এখন তামাক নিচ্ছেন তাদের অনেকেই স্বাভাবিকভাবে ২০৪১ সাল পর্যন্ত বাঁচবেন না। তাই সবার আগে নতুন প্রজন্মের তামাকে ঢোকার পথ বন্ধ করতে হবে।’

আরও পড়ুন>>‘জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন জরুরি’

‘দ্বিতীয়ত, তামাক উৎপাদন রোধে সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রথমে উৎপাদন কমিয়ে আনতে হবে। যারা তামাক উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত তাদের জন্য বিকল্প কিছু ভাবতে হবে। শুধু ট্যাক্স বাড়িয়ে তামাকজাত পণ্যের দাম বাড়ালে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে না। যারা তামাকে আসক্ত, তাদের তো থামানো কঠিন। দাম বাড়ালে তারা বিকল্প উপায় বের করবে, অন্যান্য চাহিদা কমাবে। এক্ষেত্রে সরকারকে ধাপে ধাপে এগোতে হবে। সর্বপ্রথম সবচেয়ে ক্ষতিকর যে তামাক, সেটা বন্ধ করতে হবে। একইসঙ্গে প্রচারণায় গুরুত্ব দিতে হবে।’

হাফেজি ও কওমি মাদ্রাসাগুলোতে ক্ষতিকর পাতা-জর্দার ব্যবহার বেশি। সেখানে শিক্ষক (হুজুর) ও ছাত্ররা একসঙ্গে তামাক সেবন করেন। তাই মাদ্রাসাগুলোতেও সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। এক্ষেত্রে পরিবর্তন আসতে পারে। বিষয় হচ্ছে, একটা কুঅভ্যাস শুরু করলে পরবর্তীতে সেখান থেকে ফিরে আসা কঠিন। এক্ষেত্রে তরুণ প্রজন্মকে পুরোপুরি কীভাবে তামাক থেকে বিরত রাখা যায়, সেই চেষ্টা করতে হবে— বলেন আব্দুল হামিদ।

বিপণন, বিতরণ ও আমদানি নিষিদ্ধ করতে হবে : ডা. সোহেল রেজা

বাংলাদেশ ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী ঢাকা পোস্টকে বলেন, তামাকজাত দ্রব্যের বহুল ব্যবহার হৃদরোগ, ক্যান্সার, বক্ষব্যাধি, অন্যান্য অনেক প্রতিরোধযোগ্য রোগ এবং মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। তামাকের এসব ক্ষতি থেকে জনস্বাস্থ্যকে রক্ষার জন্য তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে শক্তিশালী করা প্রয়োজন।

আরও পড়ুন>>তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনে বিশিষ্টজনদের সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব

‘তামাক থেকে কোম্পানিগুলোর ইনকাম খুবই কম। কিন্তু সরকারকে দেওয়া টাকাটা কোথা থেকে আসছে? তামাকের পেছনে যে খরচ হচ্ছে সেটি তো জনগণের পকেট থেকেই হচ্ছে। আবার যখন অসুস্থ হচ্ছে, তখন আবার তাদের পকেট থেকেই বড় আকারের খরচ হচ্ছে। মানুষ যে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে, সেটা তো সরকারকে ভাবতে হবে।’

সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, সরকারের তো এখান থেকে আয় হয়। সরকার কী সেটা বন্ধ করবে? এখন যদি বলি, সরকার যদি মদের বৈধতা দিয়ে দেয়, সেখান থেকে কি সরকারের লাভ হবে না? তাহলে কি সরকার সেটা দেবে? দেবে না, কারণ সেটা জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। সেই চিন্তাটা তামাকের ক্ষেত্রেও করতে হবে। এক্ষেত্রে আমরা চাই এটার বিপণন, বিতরণ ও আমদানি পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে।

এ বিশেষজ্ঞ বলেন, ধোঁয়াবিহীন তামাকের ব্যবহার পৃথিবীতে প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। তামাক ব্যবহারের কারণে হৃদরোগ, স্ট্রোক, বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার, ফুসফুসের দীর্ঘমেয়াদি রোগসহ বিভিন্ন প্রাণঘাতী অসংক্রামক রোগ দেখা দেয়। পৃথিবীতে যত মানুষ তামাক ব্যবহার করে তার অর্ধেক তামাকজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে। তামাকজনিত কারণে পৃথিবীতে প্রতি বছর ৮০ লাখের বেশি মানুষ মৃত্যুবরণ করে, যার অধিকাংশই বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে ঘটছে।

শুধু সরকার নয়, বেসরকারি সংস্থা ও সুশীল সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এবং ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির পরিচালক কাজী জেবুন্নেছা বেগম বলেন, বাংলাদেশে ১৫ বছরের ঊর্ধ্বের জনগোষ্ঠীর ৩৫.৩ শতাংশ তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার করে। ফলে বছরে লাখ লাখ মানুষ মারা যায়। তাই জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে তামাকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে সরকার ২০১৩ সালে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০০৫ এর গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনী পাস করে এবং ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা ২০১৫ প্রণয়ন করে। আইনটির যথাযথ বাস্তবায়ন হলে তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধিসহ ধূমপানজনিত অন্যান্য স্বাস্থ্যঝুঁকি ও চিকিৎসা খাতের বিশাল ব্যয় হ্রাস পাবে।

আরও পড়ুন>>আইনের ‘ফাঁকফোকরে’ নিয়ন্ত্রণহীন তামাক

‘সরকার এসডিজি অর্জনকে গুরুত্ব দিয়ে সপ্তম ও অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় তামাক নিয়ন্ত্রণকে অন্তর্ভুক্ত করেছে। প্রধানমন্ত্রী নিজেই ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে তামাক নির্মূলের ঘোষণা দিয়েছেন। এ লক্ষ্যে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। তবে, তামাকের ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে দেশের মানুষকে রক্ষায় শুধু সরকার নয়, বেসরকারি সংস্থা, সুশীল সমাজ, গণমাধ্যমের প্রতিনিধিসহ সব পর্যায়ের মানুষের কার্যকর অংশগ্রহণ প্রয়োজন। আমরা মনে করি, ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের বিধানসমূহ বাস্তবায়ন করা সম্ভব।’

জেবুন্নেছা বেগম বলেন, যারা নিয়মিত তামাক সেবন করেন তাদের তামাকের নেশা থেকে দূরে রাখতে পারলে সুস্থ জাতি ও সমৃদ্ধ দেশ গড়ার কাজ আরও গতিশীল হবে। এতে বাংলাদেশ ২০৪১ সালের আগেই উন্নত দেশে পরিণত হবে বলে আমার বিশ্বাস।

টিআই/এমএআর/