সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া

জিয়া অরফানেজ ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজা হয়েছে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার। অসুস্থতার কারণে বর্তমানে মামলা দুটির সাজা সরকারের নির্বাহী আদেশে স্থগিত আছে। সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন আদালতে রয়েছে আরও ৩৪টি মামলা। হত্যা, নাশকতা, অগ্নিসংযোগ, রাষ্ট্রদ্রোহসহ দুর্নীতি ও মানহানির অভিযোগে বিভিন্ন সময় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এসব মামলা দায়ের করা হয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সবগুলো মামলার বিচারকাজ স্থগিত কিংবা বন্ধ রয়েছে।
 
এ বিষয়ে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, করোনা শেষে নিয়মিত আদালতে বিচারকাজ স্থগিত থাকা মামলাগুলো শুনানির উদ্যোগ নেওয়া হবে।
 
৩৪টি মামলার মধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা নাইকো, গ্যাটকো ও বড় পুকুরিয়া- এ তিন দুর্নীতির মামলা অভিযোগ গঠনের পর্যায়ে ছিল। কিন্তু করোনার কারণে শুনানি বন্ধ হয়ে যায়। এখনো এসব মামলার শুনানি বন্ধ রয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুদকের প্রধান আইনজীবী খুরশিদ আলম খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘নাইকো, গ্যাটকো ও বড় পুকুরিয়া দুর্নীতি মামলা অভিযোগ গঠনের পর্যায়ে আছে। করোনার কারণে শুনানি স্থগিত আছে। নিয়মিত আদালত চালু হলে মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেব। আমাদের প্রস্তুতি আছে।’

হাইকোর্টের আদেশে স্থগিত ১৬ মামলার কার্যক্রম
রাজধানীর গাবতলী, বালুর মাঠ ও মিরপুর মাজার রোড সংলগ্ন এলাকায় ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত যানবাহন ভাঙচুর, পুলিশের কাজে বাধা দেওয়াসহ বেশকিছু নাশকতার অভিযোগে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দারুস সালাম থানায় মোট ১১টি মামলা দায়ের হয়। ঢাকার বকশিবাজারের বিশেষ জজ আদালতে মামলাগুলো বিচারের জন্য উঠলেও হাইকোর্টের আদেশের ফলে এগুলোর কার্যক্রম বর্তমানে স্থগিত রয়েছে।
 
২০১৫ সালের জানুয়ারিতে পেট্রোল বোমা দিয়ে চারজনের গায়ে অগ্নিসংযোগ, হত্যা ও হতাহতের ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে চারটি মামলা দায়ের হয়। হাইকোর্টের আদেশে এসব মামলার কার্যক্রমও স্থগিত আছে।
 
এছাড়া মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টির অভিযোগে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের ২৫ জানুয়ারি রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোমতাজ উদ্দিন আহমেদ মেহেদী। ঢাকার বকশিবাজারের বিশেষ জজ আদালতে চলমান এ মামলার কার্যক্রমও উচ্চ আদালতের আদেশে স্থগিত রয়েছে।

সরকারের নির্বাহী আদেশে কারামুক্ত হওয়ার পর বাসায় ফিরছেন বেগম খালেদা জিয়া

নাইকো দুর্নীতি মামলা
ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনটি গ্যাসক্ষেত্র পরিত্যক্ত দেখিয়ে কানাডীয় কোম্পানি নাইকোর হাতে ‘তুলে দেওয়ার’ মাধ্যমে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার ক্ষতির অভিযোগ ওঠে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে খালেদা জিয়া গ্রেফতার হওয়ার পর ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় এ মামলা করে দুদক। ২০০৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় সংস্থাটি। মামলাটি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত- ৯ এ অভিযোগ গঠনের পর্যায়ে রয়েছে।
 
গ্যাটকো দুর্নীতি মামলা
ঢাকার কমলাপুর আইসিডি ও চট্টগ্রাম বন্দরের কন্টেইনার হ্যান্ডেলিংয়ে গ্লোবাল অ্যাগ্রো ট্রেড কোম্পানি লিমিটেডকে (গ্যাটকো) ঠিকাদার হিসেবে নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে ২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়া ও তার ছোট ছেলে (প্রয়াত) আরাফাত রহমান কোকোসহ ১৩ জনকে আসামি করে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় গ্যাটকো দুর্নীতি মামলা দায়ের করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-পরিচালক গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী। মামলায় গ্যাটকোকে ঠিকাদার হিসেবে নিয়োগ দিয়ে রাষ্ট্রের ১৪ কোটি ৫৬ লাখ ৩৭ হাজার ৬১৬ টাকার ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়। বিশেষ জজ আদালতে মামলাটি অভিযোগ গঠনের পর্যায়ে রয়েছে।
 
বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলা
দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি থেকে কয়লা উত্তোলন, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণে ঠিকাদার নিয়োগে অনিয়ম এবং রাষ্ট্রের ১৫৮ কোটি ৭১ লাখ টাকার ক্ষতি ও আত্মসাতের অভিযোগে ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি শাহবাগ থানায় মামলাটি হয়। ওই বছরের ৫ অক্টোবর ১৬ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক। বর্তমানে মামলাটি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত- ২ এ অভিযোগ গঠনের পর্যায়ে রয়েছে।

রাজধানীর গাবতলী, বালুর মাঠ ও মিরপুর মাজার রোড সংলগ্ন এলাকায় ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত যানবাহন ভাঙচুর, পুলিশের কাজে বাধা দেওয়াসহ বেশকিছু নাশকতার অভিযোগে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দারুস সালাম থানায় মোট ১১টি মামলা দায়ের হয়। ঢাকার বকশিবাজারের বিশেষ জজ আদালতে মামলাগুলো বিচারের জন্য উঠলেও হাইকোর্টের আদেশের ফলে এগুলোর কার্যক্রম বর্তমানে স্থগিত রয়েছে 

গুলশানে বোমা হামলার অভিযোগে মামলা
২০১৫ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালনের জন্য গুলশানে সমবেত হয়। তৎকালীন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের নেতৃত্বে মিছিল নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয় ঘেরাওয়ের জন্য রওনা হলে আসামিরা হত্যার উদ্দেশ্যে তাদের ওপর বোমা নিক্ষেপ করেন বলে অভিযোগ করা হয়। ওই ঘটনায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, খন্দকার মাহবুবুর রহমানসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় মামলা দায়ের করেন সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের নেতা ইসমাইল হোসেন।
 
খুলনায় অগ্নিসংযোগের অভিযোগে মামলা
খুলনার ফুলতলা উপজেলায় বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করা হয়। ২০১৫ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি ফুলতলা থানার সাব ইন্সপেক্টর খায়রুল বাশার বাদী হয়ে খালেদা জিয়াসহ মোট ৫৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত পরিচয় আরও ৬০-৭০ জনকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন। বর্তমানে মামলাটি খুলনার ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচারাধীন।
 
সজীব ওয়াজেদ জয়কে নিয়ে ‘মিথ্যা’ মন্তব্য, ঢাকায় মানহানির দুই মামলা
শ্রমিক দিবসে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভায় বক্তব্য দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও তার তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে নিয়ে ‘মিথ্যা’ বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ঢাকার বিচারিক আদালতে বাংলাদেশ জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এ বি সিদ্দিকী মানহানির মামলা করেন।

চিকিৎসা নিতে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের পথে বেগম খালেদা জিয়া

এছাড়া সজীব ওয়াজেদ জয়ের অ্যাকাউন্টে ৩০ কোটি ডলার রয়েছে বলে  ‘মিথ্যা’ বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে ২০১৬ সালের ৩ মে ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’র মুরাদনগর উপজেলা কমিটির সভাপতি শরিফুল আলম চৌধুরী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এক কোটি টাকার মানহানির মামলা করেন। কুমিল্লার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি বিচারাধীন।
 
৪২ জনকে হত্যার অভিযোগে মামলা
২০ দলীয় জোটের আন্দোলনে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে মারা যান ৪২ জন। এসব ঘটনায় হত্যার অভিযোগ এনে ২০১৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াসহ দলটির বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতার বিরুদ্ধে মামলা হয়। বাংলাদেশ জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এ বি সিদ্দিকী ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন।
 
হত্যা ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে পঞ্চগড়ে এক মামলা
২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ২০১৫ সালে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে অবরোধ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়। এরপর থেকে খালেদা জিয়া, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও রুহুল কবির রিজভীকে হুকুমের আসামি করে পঞ্চগড়ের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এ মামলাটি হয়। পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সোহাগ মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় তিন আসামির বিরুদ্ধে ‘তাদের নির্দেশে দলীয় নেতাকর্মীসহ সন্ত্রাসীরা পেট্রোল বোমা দিয়ে মানুষ হত্যা, নানাভাবে জানমালের ক্ষতিসাধনের পাশাপাশি রাষ্ট্রদ্রোহের মতো অপরাধ করেছেন’ বলে অভিযোগ আনা হয়।

‘আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেশে কোনো উন্নতি হয়নি। সারাদেশে উন্নয়নের নামে লুটপাট হয়েছে। এছাড়া আওয়ামী লীগ দলীয় লোকদের জঙ্গি বানিয়ে নিরীহ লোকজনকে হত্যা করছে’ বলে মন্তব্য করেন। তার এমন বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মানহানির অভিযোগে মামলাটি দায়ের হয়

 
মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের নিয়ে কটাক্ষের অভিযোগে মামলা
২০১৫ সালের ২১ ডিসেম্বর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত এক আলোচনা সভায় ‘মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবদান ও শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য’ দিয়ে বক্তব্য দেন খালেদা জিয়া। পরদিন খালেদা জিয়ার ওই বক্তব্য বিভিন্ন জাতীয় পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। ওই বক্তব্যে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের নিয়ে কটাক্ষ করা হয়েছে, স্বাধীনতা যুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবদান ও ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন জজ কোর্টে মামলা হয়।
 
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও জাতিগত বিভেদ সৃষ্টির অভিযোগে মামলা
২০১৪ সালের ১০ অক্টোবর খালেদা জিয়ার এক বক্তব্যের জের ধরে তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ও বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের অনুভূতিতে আঘাত এবং জাতিগত বিভেদ সৃষ্টির অভিযোগ ওঠে। পরে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগটির ভিত্তিতে মামলা হয়।
 
নড়াইলে মানহানির এক মামলা
২০১৫ সালের ২১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ঢাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের সমাবেশে বেগম খালেদা জিয়া ‘স্বাধীনতা যুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক আছে’ বলে মন্তব্য করেন। একই সমাবেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম উল্লেখ না করে তাকে (বঙ্গবন্ধু) ইঙ্গিত করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘তিনি স্বাধীনতা চাননি। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন, স্বাধীন বাংলাদেশ চাননি।’ তার ওই বক্তব্য বিভিন্ন সংবাদপত্র ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রচার হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে নড়াইলের কালিয়ার চাপাইল গ্রামের রায়হান ফারুকী ইমাম বাদী হয়ে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন। ২০১৫ সালের ২৪ ডিসেম্বর নড়াইলের জেলা জজ আদালতে তিনি মামলাটি করেন।

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বেগম খালেদা জিয়া


হত্যা, অগ্নিসংযোগসহ নাশকতার অভিযোগে কুমিল্লায় ৩ মামলা
২০১৫ সালের ২৫ জানুয়ারি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের হায়দার পুলের চৌদ্দগ্রামে একটি কাভার্ড ভ্যানে অগ্নিসংযোগ এবং আশপাশের বেশকিছু গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় ২০১৫ সালের ২৫ জানুয়ারি চৌদ্দগ্রাম থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে নাশকতার অভিযোগে দুটি মামলা হয়।
 
২০১৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে একটি বাসে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা হয়। ওই ঘটনায় সাত যাত্রী মারা যান। আরও ২৫/২৬ জন গুরুতর আহত হন। পরদিন (৩ ফেব্রুয়ারি) চৌদ্দগ্রাম থানার এসআই নুরুজ্জামান বাদী হয়ে ৫৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
 
‘মিথ্যা’ জন্মদিন পালনের অভিযোগে মামলা
 ১৫ আগস্টে ভুয়া জন্মদিন পালনের অভিযোগে ২০১৬ সালের ৩০ আগস্ট ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গাজী জহিরুল ইসলাম ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।

বাংলাদেশের মানচিত্র, জাতীয় পতাকা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগে মামলা
বাংলাদেশের মানচিত্র, জাতীয় পতাকা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতের অভিযোগে ২০১৬ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের হয়।
 
আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের সমালোচনা ও মানহানির অভিযোগে মামলা
২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে এক অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়া বলেন, জেনারেল জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ায় এ দেশের জনগণ যুদ্ধে নেমেছিল। তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেশে কোনো উন্নতি হয়নি। সারাদেশে উন্নয়নের নামে লুটপাট হয়েছে। এছাড়া আওয়ামী লীগ দলীয় লোকদের জঙ্গি বানিয়ে নিরীহ লোকজনকে হত্যা করছে’ বলে মন্তব্য করেন। তার ওই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মানহানির অভিযোগে মামলাটি দায়ের হয়।
 
উপরের মামলাগুলোর কোনোটি উচ্চ আদালতের আদেশে, কোনোটির বিচারকাজ করোনার কারণে বন্ধ রয়েছে। মামলাগুলোর ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জানতে চাইলে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘দেখতেই তো পারছেন, করোনার কারণে  আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ। শুধু জরুরি বিষয়গুলোর শুনানি হচ্ছে। মহামারির অবস্থার উন্নতি হলে খালেদা জিয়ার মামলাগুলো শুনানির উদ্যোগ নেব।’
 
এমএইচডি/এমএআর/