প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন অ্যান্ড টক্সিকোলজি বিভাগের সাবেক প্রধান অধ্যাপক ডা. কে এম সাইফুল ইসলাম ডেভিড মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

সোমবার (২১ জুন) ভোর ৫টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

জানা গেছে, বেলা ১১টায় তার শেষ কর্মস্থল বগুড়ার টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসে নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

বিএসএমএমইউ সূত্র জানিয়েছে, হাসপাতালে ভর্তির পর অধ্যাপক ডা. ডেভিডের অবস্থার অবনতি হলে তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থার কিছুটা উন্নতি হওয়ায় অক্সিজেন ছাড়াই ট্রায়াল দেওয়া হচ্ছিল। সেখানেই পুনরায় অবস্থার অবণতি হলে আজ ভোরে তিনি মারা যান।

চিকিৎসকদের সংগঠন প্ল্যাটফর্ম অব মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল সোসাইটির কোভিড-১৯ আক্রান্ত চিকিৎসক সংক্রান্ত সেলের সমন্বয়ক ওয়াসিফ হোসেন ঢাকা পোস্টকে জানান, আজ সকালে বিএসএমএমইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অধ্যাপক ডা. কে এম সাইফুল ইসলাম ডেভিড মারা যান। এর আগে তিনি শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজে কোভিড আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছিলেন।

সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের সভাপতি ডা. ফয়সাল বিন সালেহ ঢাকা পোস্টকে বলেন, অধ্যাপক ডা. ডেভিডকে নিয়ে ২০৯ জন চিকিৎসক করোনা আক্রান্ত হয়ে ও উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। কিন্তু তাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত প্রণোদনা পাওয়া চিকিৎসকদের সংখ্যা উল্লেখ করার মতো নয়। আমরা চাই দ্রুততম সময়ে তাদেরকে প্রণোদনা দেওয়া হোক।

তিনি বলেন, সরকার করোনায় মারা যাওয়া চিকিৎসকদের মধ্যে শুধু সরকারি হাসপাতালে কর্মরতদের প্রণোদনা দিচ্ছে এবং তালিকা করছে। কিন্তু করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া চিকিৎসকদের অধিকাংশই বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক। এমনকি তারাও করোনার সময়ে ঝুঁকি নিয়ে রোগীদেরকে চিকিৎসা সেবা দিয়েছে। তাই আমরা চাইব যেন এক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি বলে আলাদা করা না হোক, যারাই করোনায় সম্মুখসারিতে যুদ্ধ করে চিকিৎসা সেবা দিয়েছে, তাদের সবাইকেই যেন প্রণোদনার আওতায় আনা হয়।

প্ল্যাটফর্ম অব মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল সোস্যাইটির তথ্যমতে, অধ্যাপক ডা. কে এম সাইফুল ইসলাম ডেভিডকে নিয়ে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, উপসর্গ নিয়ে বা ভাইরাস পরবর্তী জটিলতায় মারা যাওয়া চিকিৎসকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০৯ জনে।

টিআই/জেডএস