ঘুষ, অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ ও প্রতারণার যেসব অভিযোগে আদালতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে মামলা চলছে, সেগুলো সঠিক নয় বলে নিজেকে পুনরায় নির্দোষ দাবি করেছেন তিনি । সোমবার আদালতে হাজির হয়ে আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য দেওয়ার সময় এ দাবি করেন দেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী।

২০১৯ সালের মে মাসে দুর্নীতি সংক্রান্ত তিনটি অভিযোগে ইসরায়েলের রাজধানী জেরুজালেমের জেলা আদালতে মামলা হয় নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে। পরে মহামারির কারণে তা স্থগিত করা হলেও গতবছর নভেম্বর থেকে আবার শুরু হয় বিচার কার্যক্রম।

যেসব অভিযোগ তার বিরুদ্ধে আনা হয়েছে সেগুলোর বাস্তব ভিত্তি নেই এবং নিজের শাসনকালীন মেয়াদে কখনও কোনও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না জানিয়ে গতমাসে আদালত বরাবর চিঠি দিয়েছিলেন নেতানিয়াহু। সোমবার তার মামলার শুনানি ছিল, ওইদিন তাকে এজলাসে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত।

সেই অনুযায়ী সোমবার সকালে এজলাসে উপস্থিত হন ৭১ বছর বয়সী নেতানিয়াহু এবং আদলতকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ খণ্ডন করে গত মাসে যে চিঠিটি আদালতে জমা পড়েছে তা আমার নিজের লেখা বলে নিশ্চিত করছি আমি।পাশাপাশি এও বলতে চাই, যে অভিযোগগুলো আমার বিরুদ্ধে আনা হয়েছে তা সঠিক নয়, তথাকথিত প্রগতিশীলরা তাদের ষড়যন্ত্র সফল করতে আমার বিরুদ্ধে মনগড়া অভিযোগ দায়ের করেছে।’

ওইদিন এজলাসে ২০ মিনিট ছিলেন তিনি। এ সময় তার এবং মামলার বাদিপক্ষের আইনজীবী, বিচারক ছাড়া অন্য সবাইকে এজলাস থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। আদালতের ভেতরে টেলিভিশন সম্প্রচারের অনুমতি না থাকায় সাংবাদিকদের এজলাসে উপস্থিত হতে দেওয়া হয়নি, তবে বিশেষ ব্যবস্থায় ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার মাধ্যমে আদলতের পার্শ্ববর্তী একটি ভবনে বসে বিচারকাজ প্রত্যক্ষ করেছেন তারা।

এদিকে নেতানিয়াহু আদালতে আসছেন- এ খবর প্রচারিত হওয়ার পর সোমবার ভোরবেলা থেকেই আদলত প্রাঙ্গণে জড়ো হতে থাকেন তার সমর্থকরা। এজলাসে প্রবেশের পূর্বে আদালতের বারান্দায় দাঁড়িয়ে নিজের সমর্থকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ইসরায়েলের তথাকথিত প্রগতিশীলরা তার বিরুদ্ধে ‘ষড়যন্ত্রে’ মেতেছে এবং ষড়যন্ত্রকারীদের মূল উদ্দেশ্য দেশের রাজনীতি থেকে তাকে অপসারণ করা।

অবশ্য এ সময় নেতানিয়াহুর সমর্থকদের অদূরে আদলত ভবনের অপরপ্রান্তে জড়ো হয়েছিলেন তার বিরোধীপক্ষের সমর্থকরা। আদলতে নেতানিয়াহু উপস্থিত হওয়ার আগে থেকেই  নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছিলেন তারা; অনেকের হাতেই ছিল ‘ক্রাইম মিনিস্টার’ লেখা প্ল্যাকার্ড।

ইতিহাসে প্রধানমন্ত্রী হিসবে সবচেয়ে দীর্ঘসময় দায়িত্বপালনের রেকর্ড রয়েছে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর। ১৯৯৬ সালে তিনি প্রথম দেশটির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরের দুই মেয়াদে জিতে না পারলেও ২০০৯ সাল থেকে আবারও দেশের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপালন করে আসছেন তিনি।

আগামি মার্চে দেশটিতে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। তবে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলোর সত্যতা প্রমাণিত হলে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না নেতানিয়াহু।

সূত্র: রয়টার্স

এসএমডব্লিউ