জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে ফিরছে যুক্তরাষ্ট্র
গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর পূর্বসূরী ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলের নীতি একের পর এক বাতিল করছেন জো বাইডেন। ট্রাম্পের বিভিন্ন নীতি বাতিল বা পর্যবেক্ষণে বাইডেন স্বাক্ষর করেছেন নির্বাহী আদেশে। এবার ট্রাম্প প্রশাসনের আরও একটি নীতিকে বাতিল করে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কাউন্সিলে যুক্তরাষ্ট্রকে ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাইডেন প্রশাসন।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে একথা জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। রোববার ওই কর্মকর্তা বলেন, জাতিসংঘের জেনেভাভিত্তিক ওই মানবাধিকার সংস্থায় পর্যবেক্ষক হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের ফিরে আসার বিষয়ে সোমবার (৮ ফেব্রুয়ারি) ঘোষণা দেবেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন।
বিজ্ঞাপন
এর আগে ২০১৮ সালে ইসরায়েলবিরোধী পক্ষপাতের দায়ে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কাউন্সিল থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নিয়ে যায় ট্রাম্প প্রশাসন। সেসময় ‘ভণ্ডামি ও নিজেদের সেবায়’ নিয়োজিত এ পরিষদ ‘মানবাধিকারের সঙ্গে উপহাস করে আসছিল’ বলেও মন্তব্য করেছিলেন জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি।
বিজ্ঞাপন
এছাড়া এ পরিষদকে ‘মানবাধিকার সুরক্ষায় খুবই দুর্বল সংস্থা’ হিসেবে অভিহিত করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের সেসময়কার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। এমনকি জাতিসংঘের এই মানবাধিকার পরিষদকে ‘রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্বের নর্দমা’ বলেও আখ্যায়িত করেছিল সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রশাসন।
তবে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের বিদায়ের পর একে একে বিদায় নিচ্ছে ট্রাম্পের বিভিন্ন বিতর্কিত নীতি। এরই ধারাবাহিকতায় প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র তিন সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রকে এবার এই মানবাধিকার সংস্থায় আবারও নিয়ে যাচ্ছেন বাইডেন।
রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘(মানবাধিকার) পরিষদের প্রয়োজনীয় সংস্কার এবং উন্নয়নের সবচেয়ে কার্যকর উপায় হচ্ছে সংস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হওয়া, এটা আমরা জানি।’
তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী অন্যায় ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে এই ফোরামের ভালো সম্ভাবনা রয়েছে। তাই ফোরামে উপস্থিত থেকে আমরা এটার সংস্কার করতে চাই এবং সম্ভাবনাগুলো বাস্তবায়ন করতে চাই।
২০১৮ সালে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়ার পর হতাশা জানিয়েছিল বেশ কয়েকটি দেশ ও সংস্থা। এমনকি নিউইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়ে বলেছিল, ‘ট্রাম্পের মানবাধিকার নীতি একপেশে।’
অবশ্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ওয়াশিংটনের সেই সিদ্ধান্তকে ‘সাহসী সিদ্ধান্ত’ আখ্যায়িত করে ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন। সেসময় কয়েকটি টুইটে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও মাইক পম্পেওকে ধন্যবাদও জানিয়েছিলেন তিনি।
নেতানিয়াহু এখনও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী পদে আছেন। কিন্তু তার ঘনিষ্ঠ মিত্র ট্রাম্প বিদায় নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের পদ থেকে। প্রেসিডেন্ট পদে এখন বাইডেন। যিনি কিনা মোটা দাগে ট্রাম্পের কোনো নীতিই বদলাতে বাকি রাখছেন না। এর সর্বশেষ উদাহরণ- জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে যুক্তরাষ্ট্রের যোগদানের সিদ্ধান্ত। এখন কী প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সমালোচনা করবেন নেতানিয়াহু?
সূত্র: রয়টার্স
টিএম