ভারতের চলমান কৃষক আন্দোলন ঘিরে ‘জনজীবনে অশান্তি ছড়ানোর আশঙ্কায়’ টুইটার কর্তৃপক্ষকে আরও ১ হাজার ১৭৮টি অ্যাকাউন্ট বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।

সরকারের দাবি, এসব অ্যাকাউন্টের সঙ্গে ‘পাকিস্তান মদতপুষ্ট খলিস্তান সমর্থক’দের সম্পর্ক আছে। ভুয়া খবর ছড়াতেই এসব অ্যাকাউন্ট কাজ করছে। তবে টুইটার কর্তৃপক্ষ সরকারি এই নির্দেশের জবাব দেয়নি এখনো।

গত বৃহস্পতিবার টুইটারকে এ সংক্রান্ত একটি নোটিশ পাঠায় দেশটির তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। প্রশাসনিক সূত্রে আনন্দবাজার লিখেছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তথা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর পরামর্শেই ওই নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

এক কর্মকর্তার দাবি, ‘মূলত খলিস্তানিদের সঙ্গে সহানুভূতিশীল এমন লোকজনের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে টুইটারকে। এছাড়া পাকিস্তানের মদতে চলছে, এমন অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রেও এই নির্দেশ জারি করা হয়েছে।’ এই ধরনের অ্যাকাউন্টে ‘অটোমেটেড বট’ রয়েছে বলে দাবি সরকারের। 

মোদি সরকার প্রণীত বিতর্কিত তিনটি কৃষি আইন নিয়ে ভারতের কৃষকরা কয়েক মাস ধরে বিক্ষোভ করছেন।

সরকার পক্ষের দাবি, এসব অ্যাকাউন্ট থেকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে পরিবেশিত টুইট জনজীবনে অথবা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অশান্তি ছড়াতে পারে। পাশাপাশি, সরকারি নির্দেশ অমান্য করা হলে টুইটার কর্মকর্তাদের সাত বছরের কারাবাস হতে পারে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ‘মোদি প্ল্যানিং ফারমারজেনোসাইড’— এই হ্যাশটাগে কৃষক আন্দোলনের নানা দিক তুলে ধরে প্রচার শুরু করেছে টুইটারের বেশ কয়েকটি অ্যাকাউন্ট। চলতি মাসের শুরুতেই এ ধরনের ২৫৭টি অ্যাকাউন্ট বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিল মোদি সরকার। 

তবে প্রথম দিকে তা বন্ধ করলেও নেটিজেনদের সমালোচনার পর বেশিরভাগ অ্যাকাউন্ট ফের চালু করে দেয় টুইটার। টুইটার কর্তৃপক্ষের দাবি, বাক্‌স্বাধীনতা রক্ষার্থে এবং তাতে সংবাদযোগ্য কনটেন্ট থাকায় সেগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে। যদিও এতে সহমত ছিল না তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। 

সরকারের দাবি, টুইটার উস্কানিমূলক বক্তব্য, ছবি তৈরি বা পরিবেশিত না করলেও বেশ কিছু আপত্তিজনক বক্তব্যের দায়ভার এড়াতে পারে না। ওই মতবিরোধের মধ্যেই ফের নতুন করে সরকারি ‘রোষে’ পড়ল টুইটার।

গতকাল রোববার টুইটারের ভারতীয় শাখার নীতি নির্ধারক প্রধানের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান মহিমা কল। কৃষক আন্দোলন নিয়ে ভারত সরকারের সঙ্গে টুইটারের সম্পর্ক ক্রমাবনতির মুখে তিনি পদত্যাগ করেন।

এএস