করোনা টিকাদান কর্মসূচিতে ব্যবহারের জন্য আফগানিস্তানকে ৫ লাখ ডোজ অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দিয়েছে ভারত। রোববার দেশটির রাজধানী কাবুলের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উপস্থিত হয়ে টিকার এই চালান গ্রহণ করেছেন ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যমন্ত্রী ওয়াহিদ মাজরুহ।

তবে টিকার চালান পৌঁছালেও এখনই গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু করছে না আফগানিস্তান সরকার। বিমানবন্দরে উপস্থিত সাংবাদিকদের এ বিষয়ক প্রশ্নের উত্তরে মাজরুহ বলেন, ‘এখনও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা অনুমোদন করেনি। তারা অনুমোদন দিলেই দেশে গণটিকাদান কার্যক্রম শুরু হবে।’

বিশ্বের বৃহত্তম টিকা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকা কোম্পানির উদ্ভাবিত টিকা প্রস্তুতের জন্য চুক্তিবদ্ধ। গতমাস থেকেই প্রতিবেশী বিভিন্ন দেশে সেরাম ইনস্টিটিউট তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা উপহার পাঠাচ্ছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। সেই ধারবাহিকতাতেই আফগানিস্তানে পৌঁছেছে টিকার চালান।

আফগানিস্তানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ ও গাইডলাইন মেনেই টিকাদান কর্মসূচি পরিচালনা করব। সম্প্রতি আমরা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছে জানতে চেয়েছিলাম যে কবে নাগাদ অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা অনুমোদন করা হবে। তারা বলেছে, আগামী একসপ্তাহ বা বড়জোর ১০ দিনের মধ্যেই তারা অনুমোদন দিয়ে দেবে।’

টিকাদান কর্মসূচি শুরু হলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুযায়ী স্বাস্থ্যকর্মী ও বয়স্ক মানুষদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেওয়া হবে উল্লেখ করে মাজরুহ বলেন, কর্মসূচি শুরুর আগ পর্যন্ত রাজধানী কাবুলেই সংরক্ষণ করা হবে টিকার এই ডোজগুলো।

গতবছর ফেব্রুয়ারি মাসে আফগানিস্তানে প্রথম করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এর কাছাকাছি সময়েই প্রতিবেশী দেশ ইরানে করোনা সংক্রমণ দেখা দেওয়ায় সেখান থেকে আফগানিস্তানে ফিরে আসেন হাজার হাজার প্রবাসী আফগান শ্রমিক, ফলে সংক্রমণ আরো ব্যাপক হয়ে ওঠে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ইরান।

তবে সংক্রমণের দিক থেকে খুব পিছিয়ে নেই আফগানিস্তানও। সরকারি হিসেবে যদিও বলা হচ্ছে আফগানিস্তানে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৫৫ হাজার ৩০০র উর্ধ্বে এবং মৃত্যু হয়েছে প্রায় ২ হাজার ৪০০জনের, কিন্তু দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন আর্থিক সংকট, অবকাঠমোগত অপ্রতুলতা ও নিরাপত্তাজনিত কারণে আফগানিস্তানে ব্যাপকহারে করোনা টেস্ট করা সম্ভব হয়নি।  

যদি টেস্টের আওতা বাড়ানো হয়, তাহলে এই সংখ্যা আরো অনেক বাড়বে বলে মনে করছে আফগানিস্তানের স্বাস্থ্য বিভাগ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য বিভাগের এক কর্মকর্তা এ বিষয়ে বলেন, মহামারির শুরু থেকে বর্তমান পর্যন্ত আফগানিস্তানে সংক্রমণের যে পরিস্থিতি, তাতে বর্তমানে দেশটির অন্তত ১ কোটি মানুষ, যা মোট জনসংখ্যার প্রায় এক তৃতীয়াংশ- করোনায় আক্রান্ত বলে শঙ্কা করছেন তারা।

সূত্র: আলজাজিরা

এসএমডব্লিউ