কোমা থেকে জাগলেন কিশোর, জানেন না করোনা মহামারির কিছুই
গাড়ি দুর্ঘটনা থেকে কোমায় চলে যাওয়ার এক বছর পর ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন ব্রিটিশ এক কিশোর। কোমায় থাকাকালীন দু’বার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেও এই মহামারির ব্যাপারে কিছুই জানেন না তিনি।
গত বছরের ১ মার্চ ব্রিটেনের মধ্যাঞ্চলীয় বার্টন-অন-ট্রেন্ট শহরে গাড়ি দুর্ঘটনায় মস্তিষ্কের আঘাতজনিত অসুস্থতায় ভুগছেন জোসেফ ফ্লাভিল (১৯)। করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে ব্রিটেনে প্রথম লকডাউন জারির প্রায় তিন সপ্তাহ আগে এই দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিলেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
সেই সময় করোনাভাইরাস মহামারির বিধি-নিষেধের কারণে পরিবারের সদস্যরা তার কাছে যেতে পারতেন না। এমনকি হাসপাতালে কোমায় থাকা ফ্লাভিলের হাত ধরারও সুযোগ পাননি তারা। তবে বেশিরভাগ সময়ই তার সঙ্গে ভিডিও কলের মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা করেছেন পরিবারের সদস্যরা।
এই কিশোরের খালা স্যালি ফ্লাভিল বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘সম্প্রতি জোসেফের উন্নতির হালকা কিছু লক্ষণ দেখা যায়; এটি নিয়ে আমরা খুবই উত্তেজিত। এখন আমরা জানি সে আমাদের শুনতে পায়। সে আমাদের ছোট ছোট নির্দেশগুলোর সাড়া দেয়।’
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, ‘‘আমরা যখন তাকে বলি— জোসেফ, আমরা এখন তোমার পাশে যেতে পারছি না, কিন্তু তুমি নিরাপদ। আর এই অবস্থা খুব বেশিদিন স্থায়ী হবে না। সে বুঝতে পারে, সে শুনতে পায়, সে শুধুমাত্র যোগাযোগ করতে পারে না। তবে সে চোখের পলক একবার ফেলে ‘হ্যাঁ’ এবং দুবারে ‘না’ বুঝিয়ে দেয়।’’
জোসেফের দুর্ঘটনার পর থেকে এখন পর্যন্ত ব্রিটেনে প্রায় ৪০ লাখ মানুষ করোনাভাইরাস মহামারিতে আক্রান্ত এবং ১ লাখ ১০ হাজারের বেশি মারা গেছেন। যে মহামারি বিশ্বজুড়ে মানুষের জীবন থমকে দিয়েছে; স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয়, দোকানপাট এবং অন্যান্য অনেক ক্ষেত্রে স্থবিরতা ডেকে এনেছে।
কিশোরের খালা বলেন, ‘আমি জানি না, জোসেফ আমাদের এই লকডাউনের গল্পগুলো কীভাবে বুঝবে। সে এখনও খুব অসুস্থ এবং স্বাভাবিক জীবনে ফেরার অত্যন্ত দীর্ঘ এক যাত্রার মুখোমুখি হয়েছে সে।’
দুর্ঘটনায় জীবন তছনছ হয়ে যাওয়ার আগে জোসেফ একজন কিশোর খেলোয়াড় ছিলেন। বর্তমানে ইংল্যান্ডের মধ্যাঞ্চলের স্টোক-অন-ট্রেন্টের একটি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তার চিকিৎসার ব্যয় মেটানোর জন্য তহবিল সংগ্রহ অভিযান শুরু করেছে পরিবার।
এসএস