বড়দিনের আগে কঠোর লকডাউনে ইতালি
খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের আসন্ন বড়দিন উৎসব ও নতুন বছরে পদার্পণের আগে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ক্রমেই বাড়তে থাকায় দেশজুড়ে কঠোর লকডাউন ঘোষণা করেছে ইতালি।
২৪-২৭ ডিসেম্বর এবং ৩১ ডিসেম্বর থেকে ৩ জানুয়ারি নির্ধারিত এলাকার বাইরে বের হওয়া দণ্ডনীয় অপরাধ
বিজ্ঞাপন
আগামী ২৪ ডিসেম্বর থেকে ৬ জানুয়ারি ‘রেড জোন’ থাকবে গোটা দেশে। এর মধ্যে ২৪-২৭ ডিসেম্বর এবং ৩১ ডিসেম্বর থেকে ৩ জানুয়ারি দেশব্যাপী লকডাউন থাকবে। এ সময় নির্ধারিত এলাকার বাইরে বের হওয়া দণ্ডনীয় অপরাধ।
পাশাপাশি ছুটির দিনগুলোতে দেশটির সকল অপ্রয়োজনীয় দোকান, রেস্তোরাঁ ও বার (পানশালা) বন্ধ রাখতে হবে। একইসঙ্গে ইতালিয়ানরা কাজ, স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয় ও জরুরি কোনো প্রয়োজন হলে তবেই এক পরিবার থেকে কেবল একজন ঘরের বাইরে বের হতে পারবেন বলে লকডাউন সংক্রান্ত নির্দেশনায় জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
আবারও লকডাউন জারির মতো সিদ্ধান্ত নেয়া ‘খুব সহজ বিষয় ছিল না
ইতালির প্রধানমন্ত্রী
করোনা মহামারির প্রকোপ ঠেকাতে আবারও লকডাউন জারির মতো সিদ্ধান্ত নেয়া ‘খুব সহজ বিষয় ছিল না’ বলে মন্তব্য করেছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী গুইসেপ কন্তে।
এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন,‘লকডাউন না করলে বড়দিনের উৎসবের পর করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যায় উল্লম্ফন দেখা দিতে পারে বলে আমাদের বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছিলেন। এরপরই আমরা দেশজুড়ে লকডাউন জারির বিষয়টি চিন্তা করি।’
মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী কন্তে বলেন, বড়দিনের উৎসব ও নতুন বছর উদযাপনের সময় সংক্রমণ ঠেকাতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী কন্তে বলেন, চলতি মাসের শেষের দিকে দেশটিতে কোভিড-১৯ প্রতিরোধে টিকাদান কর্মসূচি চালু হতে পারে। আর এর মাধ্যমে ‘দুঃস্বপ্নের সমাপ্তি’ হতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
শুক্রবার মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে লকডাউন ঘোষণা করে প্রধানমন্ত্রী কন্তে বলেন, বড়দিনের উৎসব ও নতুন বছর উদযাপনের সময় সংক্রমণ ঠেকাতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই সংক্রান্ত নির্দেশনাও জারি করা হবে।
কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে অবশ্য ছা়ড় দেওয়া হবে। এর মধ্যে বাড়িতে বয়স্ক বাবা-মাকে দেখতে যাওয়ার বিষয়টিও রয়েছে।
ইতালির প্রধানমন্ত্রীর ভাষায়, রেড জোনের অর্থ প্রতিটি বাড়ি থেকে স্বাস্থ্যসহ অন্য কোনও জরুরি প্রয়োজনে কেবল একজন বাইরে বের হতে পারবেন। তবে তার জন্য যথেষ্ট প্রমাণ থাকতে হবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছে।
প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, ২৮, ২৯, ৩০ ডিসেম্বর এবং ৪ জানুয়ারি অরেঞ্জ জোন থাকবে সারা দেশে। যার অর্থ কোনো প্রমাণ ছাড়াই বাইরে বের হওয়া যাবে। বার, হোটেল, রেস্টুরেন্ট, স্কুলসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।
কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে অবশ্য ছা়ড় দেওয়া হবে। এর মধ্যে বাড়িতে বয়স্ক বাবা-মাকে দেখতে যাওয়ার বিষয়টিও রয়েছে।
তবে সরকারি নির্দেশনা মানা হচ্ছে কিনা তা নজরদারি করতে পুলিশকে বাড়িতে বাড়িতে পাঠানো হবে না। এই নিয়ম মানার জন্য ইতালির মানুষকে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
করোনায় ইউরোপে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ইতালিতে। দেশটিতে এ পর্যন্ত কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা ৮ লাখ ১৫ হাজার ৩৭৭। এর মধ্যে ৬৭ হাজার ৮৯৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
সূত্র: বিবিসি
টিএম/এএস