আঞ্চলিকভাবে সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ সৌদি আরব, দাবি দেশটির অর্থমন্ত্রীর

দেশে আঞ্চলিক সদর দপ্তর বা কার্যালয় নেই এমন বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ২০২৪ সাল থেকে আর কাজ না করার ঘোষণা দিয়েছে সৌদি আরব। কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা এসপিএ এখবর জানিয়েছে।

এসপিএ’র বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। স্থানীয়ভাবে চাকরির বাজার সৃষ্টি ও কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়াতেই দেশটিতে বিদেশি সংস্থাগুলোর আঞ্চলিক দপ্তর খুলতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়াতেই দেশের মাটিতে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর অফিস চায় সৌদি আরব

টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় সৌদি আরবের বিনিয়োগ মন্ত্রী খালিদ আল-ফালিহ বলেছেন, ‘হাজার হাজার নতুন চাকরি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া দক্ষ ও অভিজ্ঞ জনবল আদান-প্রদান এবং স্থানীয়ভাবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রসারেও এই সিদ্ধান্ত ভূমিকা রাখবে। এছাড়া এই সিদ্ধান্তের ফলে আমাদের দেশে প্রচুর বিনিয়োগও আসবে।’

সোমবার বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে সৌদি আরবের অর্থমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-জাদান বলেছেন, সৌদি সরকারের সঙ্গে কাজ করতে হলে এবং সরকারি বিনিয়োগ সুবিধা নিতে হলে দেশে কার্যালয় প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

সৌদি আরবের অর্থমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-জাদান

তিনি বলেন, ‘কোনো বিদেশি প্রতিষ্ঠান সৌদি আরবে তাদের কার্যালয় খুলতে না চাইলেও কিছু বলার নেই। এটা সম্পূর্ণরূপে তাদের (প্রতিষ্ঠানগুলোর) অধিকার। তবে ২০২৪ সাল থেকে সেসব প্রতিষ্ঠানকে কেবল সৌদির বেসরকারি খাতের সঙ্গে কাজ করতে হবে। সৌদি সরকারের সঙ্গে কোনো ধরনের চুক্তি যেতে পারবে না তারা। সরকারের সঙ্গে কাজ করতে চাইলে এখানে তাদের আঞ্চলিক কার্যালয় প্রতিষ্ঠা করতেই হবে।’

তিনি দাবি করেন, ‘এই অঞ্চলে সবচেয়ে বড় অর্থনীতি এবং সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যা রয়েছে সৌদি আরবে। সেই তুলনায় বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়ের সংখ্যা হাতেগোনা। তাই প্রযুক্তি ও জ্ঞান আদান-প্রদান, কর্মসংস্থান এবং সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের (এফডিআই) কথা চিন্তা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’ 

সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) আঞ্চলিক সদর দপ্তর প্রতিষ্ঠা করে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো। সেখান থেকে সৌদি আরবেও কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এসব প্রতিষ্ঠানের অফিসকে এখন নিজ দেশে আনতেই মূলত এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ এই দেশটি। এ বিষয়ে চলতি বছরই নতুন নীতিমালা ঘোষণা করতে পারে সৌদি প্রশাসন।

ধারাবাহিক অর্থনৈতিক সংস্কারের মাধ্যমে বর্হিবিশ্বের কাছে সৌদি আরবের অর্থনীতি খুলে দেওয়ার কাজ করছেন দেশটির ডি ফ্যাক্টো নেতা ও ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান। ২০১৭ সালে তাকে ক্রাউন প্রিন্স বা সৌদি আরবের পরবর্তী বাদশাহ হিসেবে নিযুক্ত করার পর থেকেই দেশে অর্থনৈতিক সংস্কারের কাজ শুরু করেন তিনি।

এর আগে চলতি মাসের শুরুতে এসপিএ জানায়, পেপসি কো এবং টিম হর্টন্সসহ ২৪টি বিদেশি প্রতিষ্ঠান সৌদি আরবে তাদের আঞ্চলিক কার্যালয় খোলার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

সূত্র: রয়টার্স

টিএম