মিয়ানমারের জান্তা সরকার দেশজুড়ে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করেছে। বন্ধ করে রেখেছে ইন্টারনেট সংযোগ। বিক্ষোভ দমনের জন্য জেনারেলরা আরও আগ্রাসী পদক্ষেপ নিলেও তা উপেক্ষা করে মঙ্গলবারও মিয়ানমারজুড়ে রাস্তায় নামেন বিক্ষোভকারীরা। 

চলতি মাসের প্রথম দিনে সেনাপ্রধান মিন অং হ্লেইংয়ের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী দেশটির রাষ্ট্রক্ষমতা দখলে নেওয়ার কয়েকদিন পর থেকে জনঅসন্তোষ শুরু হয়। রাস্তায় নেমে স্বৈরশাসনবিরোধী বিক্ষোভ শুরু করেন লাখো মানুষ। বিশেষ করে তরুণ ও যুব সম্প্রদায়।

প্রথম দিকে বিক্ষোভে সহিংস পরিস্থিতি না দেখা দিলেও ধীরে ধীরে চড়াও হতে শুরু করে পুলিশ ও সেনাসদস্যরা। তারা বিক্ষোভ দমনে সর্বাত্মক ও আগ্রাসী ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে শুরু করে। সোমবার থেকে রাস্তায় বের হয় সাঁজোয়া যান। শোনা যায় গুলির শব্দ।

বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করদে জলকমান ও রাবার বুলেট ছোড়া শুরু হয় কয়েকদিন আগে থেকে। এদিকে সোমবার সামরিক জান্তা সরকার বিবৃতি দিয়ে বিক্ষোভকারীদের হুমকি দিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হচ্ছে, বিক্ষোভ করলে ২০ বছরের পর্যন্ত জেল হতে পারে। 

জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক চাপ উপেক্ষা করে জান্তা সরকার তাদের ক্ষমতার ভিত ঠিক রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিলে জান্তা সরকারকে ‘ভয়ানক পরিণতি’ ভোগ করতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে জাতিসংঘ। 

এরমধ্যে অবশ্য মিয়ানমারের জান্তা সরকার পুনরায় দেশটিতে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বিজয়ীদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। অপরদিকে মিয়ানমারের বিভিন্ন এলাকায় সেনাবাহিনীর উপস্থিতি বাড়ছে। পুলিশের বদলে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।

অভ্যুত্থানের দিন প্রথম প্রহরে মিয়ানমারের নির্বাচিত নেত্রী অং সান সু চি তার দল ও সরকারের আরও অনেক শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিসহ গ্রেপ্তার হন। সু চির বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করে তাকে রিমান্ডে নেওয়া হয়। সোমবার রিমান্ডের মেয়াদ দুদিন বাড়ানো হয়েছে।   

চলতি সপ্তাহেই আটক সু চি ও প্রেসিডেন্ট ইন মিন্ট ভিডিও কনফারেন্সিং এর মাধ্যমে রাজধানী নেপেডোর আদালতে জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হবেন। তাদের আইনজীবী খিন মাউন জাও মঙ্গলবার এই তথ্য জানিয়েছেন। 

এএস