প্লেনের সংগৃহীত ছবি

ভুয়া কাগজপত্র জমা দেওয়াসহ অসদুপায় অবলম্বন করে প্লেন চালানোর লাইসেন্স নেওয়ার অভিযোগে পাকিস্তানে ৫০ জন পাইলটের লাইসেন্স বাতিল করেছে দেশটির সরকার। 

দেশটির বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (সিএএ) বরাতে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এ খবর প্রকাশ করেছে।

খবরে বলা হয়, চলতি বছরের ২২ মে করাচিতে এক ভয়াবহ প্লেন দুর্ঘটনার পর অসদুপায় অবলম্বন করে পাইলটদের লাইসেন্স পাওয়ার বিষয়টি প্রথম প্রকাশ্যে আসে। ওই দুর্ঘটনায় ৯৭ জন আরোহীর মৃত্যু হয়। এরপর পাকিস্তানের বিমান পরিবহন মন্ত্রী গোলাম সারোয়ার খান দেশের সংবাদমাধ্যমকে বলেন, পাকিস্তানে বর্তমানে চাকরিরত ৮৬০ জন পাইলটের মধ্যে ২৬০ জনের লাইসেন্সে সমস্যা রয়েছে।  আর সে সমস্যাটিকে তিনি ভুয়া, নতুবা অসদুপায় অবলম্বন করে লাইসেন্স পাওয়ার বিষয়ে ইঙ্গিত দেন।

এ বিষয়ে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি এড়াতে ওই ২৬০ জন পাইলটের নামের তালিকা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশও করা হয়।

এক প্রতিবেদনে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন জানায়, সিএএ কর্তৃপক্ষ ইসলামাবাদ হাইকোর্টকে অবহিত করেছে যে, দেশে এবং বিদেশে কর্মরত ৮৬০ জন পাইলটের লাইসেন্স যথাযথ পর্যালোচনা এবং যাচাইয়ের পর ৫০ জনের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে।

ভুয়া লাইসেন্স নিয়ে দেশব্যাপী আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে ইসলাবাদ হাইকোর্টে একটি পিটিশন দায়ের করেছিলেন সৈয়দ সাকলায়েন হায়দার নামের একজন পাইলট। পরে অবশ্য প্রমাণিত হয় যে, যেসব কাগজপত্র জমা দিয়ে তিনি লাইসেন্স পেয়েছিলেন, সেগুলো সঠিক নয়।

তার দায়ের করা পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেন ইসলামাবাদ হাইকোর্ট। পাকিস্তানের অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল তারিক মেহমুদ খোকা এ বিষয়ক একটি তদন্ত প্রতিবেদন এরইমধ্যে হাইকোর্টে জমা দিয়েছেন।

সেখানে বলা হয়, ভুয়া লাইসেন্সধারী পাইলটরা পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় উড়োজাহাজ সংস্থা পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স (পিআইএ) এর পাশাপাশি দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন এয়ারলাইন্সে চাকরি করছেন।

ওই প্রতিবেদন আমলে নিয়ে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংস্থা ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সিকে (এফআইএ) এ বিষয়ে তদন্তের দায়িত্ব দেন হাইকোর্ট। তদন্ত শুরু হওয়ার পর প্রথম দফায় চলতি বছরের ৬ জুলাই ২৮ জন পাইলটের লাইসেন্স বাতিল করে পাকিস্তান সরকার। পরে ১১ সেপ্টেম্বর আরও ১৫ জনের লাইসেন্স বাতিল করা হয়।

এর এক সপ্তাহ পর গত ১৮ সেপ্টেম্বর ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশন সিএএ-কে একটি চিঠি দেয়। ওই চিঠিতে পাকিস্তানের মোট ৮৬০ জন পাইলটের সবার লাইসেন্স যাচাই করার আহ্বান জানায় আন্তর্জাতিক বিমান চলাচলের নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট বিষয় তদারকের দায়িত্বে থাকা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি।

আহ্বানে সাড়া দিয়ে সবার লাইসেন্স পরীক্ষা শুরু করে সিএএ এবং ২৬০ জন পাইলটকে সন্দেহের তালিকায় রাখা হয়। রোববার এদের মধ্য থেকেই ৫০ জনের লাইসেন্স বাতিল করা হলো। 

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

এসএমডব্লিউ/জেডএস