এক বাংলাদেশি বিজেপি নেতাকে ঘিরে মহারাষ্ট্রে তোলপাড়
ভারতের মহারাষ্ট্র প্রদেশের মুম্বাইয়ে সম্প্রতি বিজেপির স্থানীয় এক নেতাকে গ্রেফতার করেছে দেশটির পুলিশ। বিজেপির এই নেতাকে গ্রেফতারের পর স্থানীয় রাজনীতিতে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। কারণ পুলিশি তদন্তে বেরিয়ে এসেছে গ্রেফতারকৃত বিজেপি নেতা বাংলাদেশি নাগরিক এবং জাল নথিপত্র তৈরি করে ২০১১ সাল থেকে মুম্বাইয়ে বসবাস করে আসছেন তিনি।
বিজেপির ওই নেতার নাম রুবেল জনু শেখ। তিনি বিজেপির নর্থ মুম্বাই মাইনরিটি সেলের প্রেসিডেন্ট। ভুয়া নথিপত্র দিয়ে তিনি ভারতীয় নাগরিকত্ব নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ বলেছেন, রুবেল শেখ যে বাংলাদেশি, তা প্রমাণে পুলিশ ইতোমধ্যে বেশ কিছু নথি সংগ্রহ করেছে।
বিজ্ঞাপন
সম্প্রতি মুম্বাই পুলিশ অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ধরপাকড় অভিযান পরিচালনা করে। এই অভিযানে বিজেপির নেতা ২৪ বছর বয়সী জনু শেখকে গ্রেফতার করা হয়।
ভারতীয় দণ্ডবিধি, পাসপোর্ট আইন এবং বিদেশি আইনের কয়েকটি ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ।
বিজ্ঞাপন
ভারতীয় দৈনিক ইন্ডিয়া ট্যুডে বলছে, পুলিশি তদন্তে দেখা যায়, জনু শেখ একজন বাংলাদেশি এবং ২০১১ সাল থেকে তিনি মুম্বাইয়ে অবৈধভাবে বসবাস করে আসছিলেন। ভুয়া নথিপত্রের মাধ্যমে তিনি ভারতের প্যান এবং আধার কার্ডের মতো জাল পরিচয়পত্র তৈরি করেছিলেন।
জনু শেখ বাংলাদেশি নাগরিক এবং জাল নথিপত্র ব্যবহার করে ভারতীয় নাগরিকত্ব নিয়েছেন বলে মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখের কাছে অভিযোগ করেছিলেন দেশটির রাজনৈতিক দল ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির (এনসিপি) মুখপাত্র মহেশ তাপশি।
কীভাবে কোনও ধরনের যাচাই-বাছাই ছাড়াই একজন বাংলাদেশিকে বিজেপিতে জায়গা দেওয়া হয়েছিল, সেই বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন মহেশ তাপশি।
পরে এই অভিযোগের ব্যাপারে তদন্তের নির্দেশ দেন অনিল দেশমুখ। প্রাথমিক তদন্তে রুবেল জনু শেখের কাছে পাওয়া নথিপত্রে দেখা যায়, পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার মালাপোতা গ্রামের বাসিন্দা তিনি। নদীয়া জেলার বোলগন্ডা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে তিনি পড়াশোনা করছিলেন বলে নথিতে দেখানো হয়।
কিন্তু পুলিশের একটি তদন্ত দল মালাপোতা গ্রামে গিয়ে পঞ্চায়েতের কাছে তার ব্যাপারে জানতে চায়। কিন্তু পঞ্চায়েতের কাছে ওই গ্রামে রুবেল জনু শেখ নামে কোনও বাসিন্দার তথ্য নেই বলে পুলিশকে জানানো হয়। পরে নদীয়া জেলা কালেক্টরের অফিসে গিয়ে রুবেল জনু শেখ নামে কাউকে স্কুলের সনদপত্র দেওয়া হয়েছিল কিনা জানতে চায় পুলিশ।
তদন্তে দেখা যায়— রুবেল জনু শেখ জাল নথিপত্র ব্যবহার করে আধার এবং প্যান কার্ডও তৈরি করেছিলেন।
মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ
এতে দেখা যায়, কালেক্টরের অফিস থেকে রুবেল জনু শেখ নামে একজনকে সনদপত্র দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বিজেপির নেতা রুবেল জনু শেখ সনদে যে স্কুলের নাম উল্লেখ করেছেন নদীয়ায় তার অস্তিত্বই নেই।
এসএস