সৌদি সরকারের বিভিন্ন নীতি ও রাজপরিবারের কঠোর সমালোচক ছিলেন সাংবাদিক জামাল খাশোগি

সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অপ্রকাশিত একটি গোয়েন্দা প্রতিবেদনে সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানকে দায়ী করা হতে পারে। ২০১৮ সালের এই হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে গোপন এই গোয়েন্দা প্রতিবেদনটি বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) প্রকাশ করা হতে পারে। বিষয়টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যুক্তরাষ্ট্রের চার কর্মকর্তার বরাত দিয়ে একথা জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের কলাম লেখক ছিলেন সাংবাদিক জামাল খাশোগি। ২০১৮ সালে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটের ভেতরে দেশটির এজেন্টদের হাতে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন তিনি। নিজের বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তুলতে তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। ৫৯ বছর বয়সী এই সাংবাদিক ছিলেন সৌদি সরকারের বিভিন্ন নীতি ও রাজপরিবারের কঠোর সমালোচক।

সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যায় যুবরাজ সালমান জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে

হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর এ বিষয়ে গোপনে তদন্ত করে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ। যুক্তরাষ্ট্রের ওই কর্মকর্তারা রয়টার্সকে বলেছেন, সৌদি সরকারের বিভিন্ন নীতি ও রাজপরিবারের কঠোর সমালোচক হওয়ার কারণে ওয়াশিংটন পোস্টের কলাম লেখক জামাল খাশোগিকে হত্যার বিষয়ে অনুমোদন, এমনকি সম্ভবত আদেশও দিয়েছিলেন যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান।

অবশ্য হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুবরাজ সালমানের জড়িত থাকার বিষয়টি সিআইএ নিশ্চিত হয়েছে বলে ২০১৮ সালেই জানিয়েছিল মার্কিন গণমাধ্যমগুলো। কিন্তু বরাবরই এই ঘটনার সঙ্গে নিজের সংশ্লিষ্টতা তীব্রভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন সৌদি আরবের এই ক্রাউন প্রিন্স। তবে দেশের ডি ফ্যাক্টো বা কার্যত নেতা হিসেবে এই হত্যাকাণ্ডের দায়দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি।

বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সাংবাদিকদের বলেন, জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে সিআইয়ের গোয়েন্দা প্রতিবেদন তিনি পড়েছেন এবং শিগগিরই এ বিষয়ে তিনি সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল-সৌদের সঙ্গে কথা বলবেন।

ক্ষমতায় আসার পরই সৌদি আরবের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক নতুন করে শুরুর ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের নেওয়া বিভিন্ন নীতির অংশ হিসেবেই এই গোয়েন্দা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হচ্ছে। এর আগে সৌদি আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধ এবং ইয়েমেন যুদ্ধে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের প্রতি সমর্থন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন।

এর আগে বুধবার আলজাজিরা জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের ডিরেক্টর অব ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স (ডিএনআই) থেকে প্রকাশ হতে যাওয়া ওই প্রতিবেদনে সাংবাদিক জামাল খাশোগির হত্যাকাণ্ড এবং মরদেহ ছিন্নভিন্নের দায়দায়িত্ব সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের ওপর আরোপ করা হতে পারে।

সংবাদমাধ্যমটি আরও জানায়, সব কিছু যদি ঠিক থাকে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে সৌদি বাদশাহ সালবান বিন আব্দুল আজিজের সঙ্গে এবারই প্রথম কথা বলবেন জো বাইডেন। উভয় নেতার মধ্যে হয়তো আরও অনেক ইস্যু নিয়ে কথা হবে, তবে খাশোগি ইস্যুটাই মূলত তাদের কথোপকথনের প্রধান বিষয় হয়ে দাঁড়াবে।

সূত্র: রয়টার্স

টিএম