নিজেদের প্লাটফর্ম থেকে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী এবং তাদের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ব্যক্তি ও সংগঠনকে নিষিদ্ধ করেছে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম। এর মাধ্যমে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের বিরুদ্ধে মিয়ানমারজুড়ে টানা বিক্ষোভের মধ্যেই অনলাইন মাধ্যমেও একটা ধাক্কা খেল দেশটির জান্তা সরকার।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম জগতের জায়ান্ট এই কোম্পানি জানিয়েছে, ‘ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের মতো বড় প্লাটফর্মে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর উপস্থিতির ঝুঁকি অনেক বেশি এবং সেটা বিবেচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।'

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ২০২০ সালে মিয়ানমারে সাধারণ নির্বাচনের পর ফেসবুকের মাধ্যমেই মূলত ভোটে কারচুপির অভিযোগগুলো একের পর এক সামনে এনেছিল দেশটির সামরিক বাহিনী। এর মাধ্যমে তারা মূলত অভ্যুত্থানের ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছিল। মিয়ানমারের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক মানুষই ফেসবুক ব্যবহার করেন। দেশটির অনেক মানুষ এখনও ইন্টারনেট মানে কেবল ফেসবুককেই বোঝেন।

এর আগে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে সহিংসতা উস্কে দেওয়া এবং সাধারণ জনগণের জানমালের ক্ষতি করার অভিযোগে দেশটির সেনাবাহিনীর মূল অফিসিয়াল পেজ ‘তাতমাডো ট্রু নিউজ ইনফরমেশন টিম পেজ’ বন্ধ করে দেয় ফেসবুক। স্থানীয়ভাবে বার্মিজ সেনাবাহিনী তাতমাডো নামে পরিচিত।

স্থানীয়ভাবে বার্মিজ সেনাবাহিনী তাতমাডো নামে পরিচিত

গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলে নেওয়ার পর থেকে দেশটির লাখ লাখ মানুষ সেনাশাসনের অবসানের দাবিতে বিক্ষোভ করে আসছেন। অভ্যুত্থানবিরোধীদের এই বিক্ষোভ দেশটির বড় বড় শহরের পাশাপাশি বিভিন্ন অঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়েছে।

এরপর থেকে বিক্ষোভকারীদের ওপর দমনপীড়ন শুরু করে জান্তা সরকার। একইসঙ্গে আন্দোলনকারীদের গ্রেফতার, বারবার ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া, এমনকি ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম নিষিদ্ধি করে দেশটি।

মিয়ানমারে আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশের অ্যাকশন

স্থানীয় সময় বুধবার দেওয়া এক বিবৃতিতে ফেসবুক জানায়, ফেব্রুয়ারির ১ তারিখে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের পর থেকে বিভিন্ন ঘটনাবলী বিশ্লেষণ করে নিজেদের প্লাটফর্মে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে নিষিদ্ধ করার প্রয়োজনীয়তা দেখতে পায় তারা। এই নিষেধাজ্ঞা অবিলম্বে কার্যকর হবে এবং অনির্দিষ্টকালের জন্য চলবে।

সূত্র: বিবিসি

টিএম