করোনা ভ্যাকসিনকে হালাল ঘোষণা দিয়ে মালয়েশিয়ার ফতোয়া জারি
ইসলামে নিষিদ্ধ উপাদানের মাধ্যমে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরির গুঞ্জন দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ার জেরে মালয়েশিয়ার ধর্মীয় নীতি-নির্ধারক কর্তৃপক্ষ ফতোয়া জারি করেছে। দেশটির ধর্মীয় নীতি-নির্ধারণী এই কর্তৃপক্ষ মালয়েশিয়ায় করোনা ভ্যাকসিন প্রয়োগের অনুমতির পাশাপাশি নির্দিষ্ট কিছু গোষ্ঠীর জন্য ভ্যাকসিন নেয়া বাধ্যতামূলক ঘোষণা করে এক বিবৃতি দিয়েছে।
বুধবার দেশটির ধর্ম কল্যাণবিষয়ক মন্ত্রী জুলকিফলি মোহাম্মদ আল-বাকরি বলেছেন, ভ্যাকসিন প্রয়োগ সংক্রান্ত এই সিদ্ধান্ত শাসক পরিষদে অনুমোদন পেয়েছে। ইসলামে নিষিদ্ধ উপাদানের ব্যবহার করে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরির গুঞ্জন নিয়ে মালয়েশিয়ার স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে তীব্র উদ্বেগ প্রশমনে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বিজ্ঞাপন
দেশটির নাগরিকদের এই উদ্বেগের পর মালয়েশিয়ার ধর্মীয় নীতি-নির্ধারক কর্তৃপক্ষ করোনা ভ্যাকসিন প্রয়োগের বিষয়ে ফতোয়া জারি করে।
মন্ত্রী জুলফিকার মোহাম্মদ আল-বাকরি বলেছেন, প্রাণঘাতী ব্যাধি থেকে মুসলিমদের রক্ষায় ভ্যাকসিনের ব্যবহার ইসলামি আইনে অস্বাভাবিক নয়। ১৯৮৮ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত হেপাটাইটিস বি এবং মেনিনজাইটিস মেনভিওর-সহ অন্তত ছয়টি ভ্যাকসিন প্রয়োগের উদাহরণ তুলে ধরেছেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
মালয়েশিয়ার ইসলামি কল্যাণবিষয়ক জাতীয় পরিষদের স্পেশাল মুজাকারাহ কমিটি গত ৩ ডিসেম্বর করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে সৃষ্ট উদ্বেগের ব্যাপারে আলোচনা করতে বৈঠকে বসে। মন্ত্রী জুলকিফলি মোহাম্মদ আল-বাকরি বলেন, সরকার কর্তৃক শনাক্তকৃত ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠীর সদস্যদের বাধ্যতামূলকভাবে ভ্যাকসিন নিতে হবে।
ভ্যাকসিনের ব্যবহার করে করোনাভাইরাস মহামারি নিয়ন্ত্রণে সরকারের ওপর পূর্ণ আস্থা রাখতে আমি প্রত্যেক মালয়েশীয়; বিশেষ করে মুসলিমদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি
মালয়েশিয়ার ধর্ম কল্যাণবিষয়ক মন্ত্রী জুলকিফলি
চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে মালয়েশিয়ায় করোনাভাইরাস মহামারি চরম আকার ধারণ করে। এই মহামারির লাগাম টানতে দেশটির সরকার রীতিমতো লড়াই করছে। গত ১০ ডিসেম্বর দেশটিতে একদিনে সর্বোচ্চ ২ হাজার ২৩৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়।
বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় কনডম প্রস্তুতকারক কোম্পানি মালয়েশিয়ার ক্যারেক্স বিএইচডি ও গ্লোভস নির্মাণকারী টপ গ্লোভ করপোরেশনের স্থাপনায়ও করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হয়। বুধবারও দেশটিতে এক হাজার ৩৪৮ জনের করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। মালয়েশিয়ায় এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসে ৪৪৪ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে এবং আক্রান্ত হয়েছে ৯৮ হাজার ৭৩৭ জন।
সূত্র : ব্লুমবার্গ, ওয়ার্ল্ডোমিটার।
এসএস