করোনার আরও একটি নতুন স্ট্রেন যুক্তরাজ্যে
ব্রিটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক বলেছেন, দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনা ভাইরাসের নতুন যে ধরনটি (স্ট্রেন) পাওয়া গেছে ব্রিটেনে করোনা আক্রান্ত দুজনের শরীরে ওই নতুন ধরনটি পাওয়া গেছে। ব্রিটেনে যেমন ভাইরাসের নতুন একটি স্ট্রেনের খোঁজ মিলেছিল, একইভাবে দক্ষিণ আফ্রিকাতেও আরেকটি নতুন স্ট্রেনের সন্ধান পাওয়া গেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন ধরনটির কারণেই যুক্তরাজ্যেকে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের মোকাবিলা করতে হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
সাংবাদিকদের হ্যানকক বলেছেন, যে দুজনের শরীরে করোনার নতুন স্ট্রেন পাওয়া গেছে তারা দুজনই দক্ষিণ আফ্রিকা ফেরতদের সংস্পর্শে এসছিলেন।
তিনি আরও বলেন, ভাইরাসের আরও একটি নতুন ধরন খুব চিন্তার কথা, কারণ এটা খুব দ্রুত সংক্রমিত করছে। আর এখন এটা মনে হচ্ছে যে, যুক্তরাজ্যে ভাইরাসের যে স্ট্রেনের সন্ধান মিলেছে এটা বাদেও ভাইরাসে আরও পরিবর্তন এসেছে।
বিজ্ঞাপন
ভাইরাসের এমন পরিবর্তন আগেও ঘটেছে। গত বছরের শেষে চীনের উহানে করোনাভাইরাসের যে ধরনটি ছড়িয়েছিল সেটি এবং এখনকার দিনে পুরো বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ছড়ানো ধরনটি এক নয়। ফেব্রুয়ারিতে ইউরোপে ডি৬১৪জি নামের নতুন একটি মিউট্যান্টের উদ্ভব হয় এবং পরে সেই ধরনটিই পুরো বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মাত্রায় ছড়িয়ে পড়ে। গত গ্রীষ্মে এ২২২ভি নামের আরেকটি ধরনের উদ্ভব হয়েছিল স্পেনে, যেটি পরে পুরো ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে।
মন্ত্রী অবিলম্বে দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে বিমানযোগাযোগ বন্ধ করার কথা বলেন। একইসঙ্গে বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ফিরেছেন অথবা দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ফেরা কারো সংস্পর্শে এসেছেন, এমন কেউ থাকলে তাকে কোয়ারেন্টিনে যেতে হবে।
যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞানীরা ভাইরাসের নতুন এই স্ট্রেইন নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছেন। ভাইরাসের নতুন এই ধরনটির কারণে যুক্তরাজ্যের বহু মানুষে নতুন করে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হচ্ছে।
বুধবারও দেশটিতে ৩৬ হাজার ৮০৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। মহামারি শুরু হওয়ার পর এই প্রথম একবারে আক্রান্তরে এতবগ সংখ্যা দেখল ব্রিটেন।
প্রথদম দফায় তনতুন স্ট্রেনের সন্ধান পাওয়ার পর বেশ কেয়েকটি দেশ যক্তরাজ্যেনর সাথে বিমান চলাচল বন্ধ করে দেয়।
৮ কোটি ছুঁই ছুঁই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা
বিশ্বে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সর্বশেষ আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ কোটি ৯০ লাখ ৩০ হাজার ৯৯৪ জন। আর এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭ লাখ ৩৬ হাজার ৫৭৬ জনে। এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন অন্তত ৫ কোটি ৫৬ লাখ ৬ হাজার ৪৩৭ জন।
করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের সংখ্যা ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডওমিটার থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
ওয়ার্ল্ডওমিটারের বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৩ লাখ ৩৪ হাজার ১৬৯ জন মারা গেছেন। বিশ্বে সর্বোচ্চ আক্রান্তের সংখ্যাও এই দেশটিতে। এ পর্যন্ত ১ কোটি ৮৯ লাখ ১৫ হাজার ১৯১ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
বাংলাদেশের সর্বশেষ
স্বাস্থ্য অধিদফতর গতকাল বুধবার দেশে আরও ৩০ জনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছে। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো সাত হাজার ৩৫৯ জনে। একই সময়ে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন আরও এক হাজার ৩৬৭ জন। ফলে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে পাঁচ লাখ চার হাজার ৮৬৮ জনে দাঁড়িয়েছে।
ভারতে অক্সফোর্ডের টিকার অনুমোদন আগামী সপ্তাহে
জরুরি ব্যবহারের জন্য আগামী সপ্তাহেই অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনা টিকার অনুমোদন দিতে পারে ভারত সরকার। সূত্রের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলো। সংশ্লিষ্ট দুটি সূত্র জানিয়েছে, জরুরিভিত্তিতে ব্যবহারের জন্য অক্সফোর্ডের টিকার অনুমোদনের প্রক্রিয়া প্রায় শেষ। ভারতে ওই টিকার প্রস্তুতকারক সংস্থা সিরাম ইনস্টিটিউটের কাছেও অতিরিক্ত কিছু তথ্য চাওয়া হয়েছিল।
সরকারের পক্ষ থেকে তথ্য চাওয়ার পর সেই তথ্য জমা দিয়েছে সংস্থাটি। সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে পাওয়া তথ্যে ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সেন্ট্রাল ড্রাগ স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন (সিডিএসসিও) প্রাথমিকভাবে সন্তুষ্ট।
এনএফ