মিয়ানমারের অভ্যুত্থানবিরোধী গণতন্ত্রকামী আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভে নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে অন্তত চারজনের প্রাণহানি ঘটেছে। দেশজুড়ে গণতন্ত্রকামীদের নীরব বিক্ষোভ-সমাবেশের একদিন পর বৃহস্পতিবারের বিক্ষোভে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর গুলিতে এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটল।

গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের সামরিকবাহিনী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার উৎখাত করে ক্ষমতা ছিনিয়ে নেওয়ার পর থেকে দেশটির লাখ লাখ মানুষ প্রায় প্রত্যেকদিন বিক্ষোভ করে আসছেন।

দেশটির স্থানীয় সংবাদমাধ্যম মিয়ানমার নাউ বলেছে, বৃহস্পতিবার সেন্ট্রাল মিয়ানমারের টানগি শহরে নিরাপত্তাবাহিনী গণতন্ত্রকামীদের ওপর গুলিবর্ষণ করেছে। এতে এই শহরটিতে কমপক্ষে চারজন মারা গেছেন।

সামাজিক যোগাযােগমাধ্যম এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, দেশটির বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াঙ্গুন, কেন্দ্রীয় শহর মনিওয়া এবং অন্যান্য বেশ কয়েকটি শহরে হাজার হাজার বিক্ষোভ করেছেন।

মনিওয়া বিক্ষোভে অংশ নেওয়া দেশটির নাগরিক নান্ত খি ফু আয়ে বলেন, আমরা কি ঐক্যবদ্ধ? হ্যাঁ, আমরা ঐক্যবদ্ধ রয়েছি। বিপ্লব জয়ী হবে। বিক্ষোভকারীদের অনেকেই তরুণ। তারা কোনো ধরনের বিরতি ছাড়াই প্রত্যেকদিন বিক্ষোভ করতে চান।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম হিনথার মিডিয়া করপোরেশন বলছে, মাওলামাইন শহরের বিক্ষোভে পুলিশ গুলিবর্ষণ এবং ২০ জনকে আটক করেছে। এতে অন্তত দু’জন আহত হয়েছেন। মিয়ানমারের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভে নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে আরও কমপক্ষে পাঁচজন আহত হয়েছেন বলে দেশটির অন্যান্য গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়েছে। তবে রয়টার্স এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি।

স্থানীয় মানবাধিকার সংস্থা অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স (এএপিপি) বলছে, ১ ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারে গণতন্ত্রকামীদের বিক্ষোভে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সহিংস দমন অভিযানে কমপক্ষে ২৮৬ জন নিহত হয়েছেন। 

অভ্যুত্থানের জেরে মিয়ানমারের জান্তা সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। এর মাঝেই যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমারের সামরিকবাহিনী সংশ্লিষ্ট দু’টি কোম্পানির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে বলে এ ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো রয়টার্সকে জানিয়েছে।

এসএস