নাশভিলে আত্মঘাতী বোমা হামলা?
বড়দিনের সকালে যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসি অঙ্গরাজ্যের নাশভিল শহরে বিস্ফোরণের ঘটনাকে ‘আত্মঘাতী বোমা হামলা’ বলে ধারণা করছেন দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা। বিস্ফোরণের পর সেখান থেকে সংগ্রহ করা সন্দেহভাজন হামলাকারীর দেহাবশেষের ডিএনএ পরীক্ষার পর এই শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা।
তদন্তকারী কর্মকর্তারা বলছেন, সন্দেহভাজন হামলাকারী নাশভিলের শহরতলী এলাকা অ্যান্টিওকে বসবাস করতেন। সেখানে তার আবাসস্থলও ইতোমধ্যে শনাক্ত করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয় সময় শুক্রবার বিস্ফোরণের এই ঘটনায় তিনজন আহত হওয়ার পাশাপাশি টেনেসির সঙ্গে চারটি রাজ্যের যোগাযোগ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে কী কারণে এই হামলা হয়েছে তা এখনও জানা যায়নি। এছাড়া এখন পর্যন্ত কোনও ব্যক্তি বা গোষ্ঠীও এই হামলার দায় স্বীকার করেনি।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ী ও টেলিভিশন সাংবাদিকদের সংগঠন হামলাকারীদের ধরিয়ে দেয়া বা সন্ধান দেয়ার জন্য ৩ লাখ ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছে।
বিজ্ঞাপন
এ ঘটনার তদন্তের সর্বশেষ পরিস্থিতি প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের তদন্তকারী সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) ‘স্পেশাল এজেন্ট ইন চার্জ’ ডগলাস কোরনেস্কি বলেন, তদন্ত কর্মকর্তারা বিস্ফোরণ স্থান থেকে হামলারকারীর দেহাবশেষসহ ৫০০টি নমুনা সংগ্রহ করেছেন এবং সংগৃহীত ডিএনএ’র নমুনার সঙ্গে মেলে কিনা তা নিশ্চিত হতে সন্দেহভাজন হামলাকারীর মাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
টেনেসির গভর্নর বিল লি বিস্ফোরণস্থল পরিদর্শন শেষে বলেন, ‘(এ ঘটনায়) কেউ নিহত হয়নি; এটা অত্যন্ত বিস্ময়কর, প্রায় অলৌকিক।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ইতোমধ্যে হামলার বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে এবং টেনেসিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা এবং ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহযোগিতার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন বিল লি।
নাশভিলের যে স্থানে বিস্ফোরণ ঘটে, সেই এলাকায় বেশ কয়েকটি রেস্তোঁরা এবং নাইটক্লাব রয়েছে। গত ২৫ ডিসেম্বর স্থানীয় সময় ভোর ৬টার কিছু আগে একটি ক্যাম্পার ভ্যান গাড়ি যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম টেলিকম জায়ান্ট ‘এটি অ্যান্ড টি’র অফিস টাওয়ার সংলগ্ন ভবনের পাশের সড়কে এসে থামে এবং এর কিছুক্ষণ পরই তা বিস্ফোরিত হয়।
বিস্ফোরণের ফলে ‘এটি অ্যন্ড টি’ অফিস টাওয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় টেনেসির সঙ্গে মিসিসিপি, কেন্টাকি, আলবামা এবং জর্জিয়ার টেলিফোন, ইন্টারনেট এবং ফাইবার অপটিক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
যে ভবনের পাশে গাড়িটি বিস্ফেরিত হয়েছে, সেখানকার বাসিন্দা বাক ম্যাকয় বলেন, বিস্ফোরণের শব্দে তিনি ঘুম থেকে জেগে ওঠেন এবং তাৎক্ষণিকভাবে এই ঘটনার ভিডিও করে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শেয়ার করেন।
তিনি বলেন, ‘(বিস্ফোরণের ফলে) আমার ঘরের জানালার গ্লাস উড়ে গিয়ে পাশের ঘরে পড়েছে। যদি সেখানে উপস্থিত থাকতাম তাহলে আমার অবস্থা যে কী হতো ভাবতেই শিউরে উঠছি।’
সূত্র: বিবিসি
এসএমডব্লিউ/এসএস