যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এবার অবস্থান নিয়েছে তারই প্রিয় পত্রিকা নিউইয়র্ক পোস্ট। সোমবার দেশটির রক্ষণশীল ঘরানার জনপ্রিয় এই পত্রিকার সম্পাদকীয়র হেডলাইনে বলা হয়েছে, ‘প্রেসিডেন্ট….উন্মাদনা বন্ধ করুন।’

গত নভেম্বরে অনুষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ উত্থাপন, ফল বাতিল চেয়ে আইনি লড়াই এবং সর্বোপরি ট্রাম্পের অসহযোগিতাপূর্ণ মনোভাবের সমালোচনা করে কলামে বলা হয়েছে, ‘আপনি নির্বাচনে হেরে গেছেন—এটাই সত্য এবং যাবতীয় অন্ধকার হেঁয়ালির অবসান করার সময় এসে গেছে। অগণতান্ত্রিক মনোভাব ত্যাগ করে এখন আপনার উচিত শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করা।’

‘আন্তর্জাতিক মিডিয়া মুঘল’ নামে পরিচিত রুপার্ট মারডকের প্রতিষ্ঠান নিউজ কর্পোরেশনের (এনডব্লিউএস) মালিকানাধীন পত্রিকা নিউইয়র্ক পোস্ট এই প্রথম ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমালোচনা করে সম্পাদকীয় প্রকাশ করেছে।

এতে বলা হয়েছে, নির্বাচনের ফল নিয়ে ট্রাম্প যেসব ‘মনগড়া’ তথ্য প্রচার করছেন, তাতে তার ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার মনোভাবই প্রকট হয়ে উঠছে এবং নিজের শাসনামলকে কালিমালেপন করা ছাড়া এ থেকে আর কিছু পাওয়া যাবে না।

‘প্রেসিডেন্ট—আমরা বুঝতে পারছি, নির্বাচনে পরাজয়ে আপনি ক্ষুব্ধ। কিন্তু যে পথে আপনি চলছেন, তাতে শেষ পর্যন্ত ধ্বংস ছাড়া আর কিছু নেই; আপনার সমর্থক ও শুভাকাঙ্ক্ষী পত্রিকা হিসেবে এ কথা বলছি। যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে আপনি যদি নিজের প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী করতে চান কিংবা যদি আবার কখনও নির্বাচনে অংশ নিতে চান, সেক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে ক্রোধ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। কারণ এখন আপনি যা করছেন, তাতে নিজের শাসনামলে কালিমালেপন করা ছাড়া আর কোনো কাজ হবে না।’ 

ডেমোক্র‌্যাটরা আপনাকে এক মেয়াদের প্রেসিডেন্টের তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করতে চাইছে এবং স্পষ্টভাবে বলতে গেলে, আপনি তাদের এ কাজে সহযোগিতা করছেন

নিউইয়র্ক পোস্ট

নির্বাচনে ট্রাম্পের পরাজয় এবং তার নির্বাচন পরবর্তী ভূমিকা নিয়ে ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে ‘খোঁড়া হাঁস’ বলে অ্যাখ্যায়িত করার পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যাঙ্গাত্মক সমালোচনায় মেতেছেন ডেমোক্রেট দলীয় নেতাকর্মীরা।

এই ধরনের ব্যাঙ্গাত্মক সমালোচনাকে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিপন্থী হিসেবে উল্লেখ করে নিউইয়র্ক টাইমস বলেছে, ‘মেয়াদের শেষ দিনগুলোতে দায়িত্ব ছাড়ার পূর্বে হোয়াইট হাউসসহ দেশের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সম্পর্কিত সবকিছু যদি আগুনে পুড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পনা কেউ করে থাকেন, কেবল তার সঙ্গেই আপনার বর্তমান ভূমিকার তুলনা করা চলে। নিজের মনোভাব যদি পরিবর্তন না করেন, সেক্ষেত্রে আপনাকে একজন নৈরাজ্যবাদী হিসেবেই দেশের মানুষ স্মরণ করবে, বিপ্লবী হিসেবে নয়।’  

সূত্র: সিএনএন।

এসএমডব্লিউ/এসএস