যুক্তরাষ্ট্রে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস প্রশাসনের অধীনে সম্প্রতি যে ১০০ কর্মী হোয়াইট হাউসে নিয়োগ পেয়েছেন তাদের ৬১ শতাংশ নারী এবং ৫৪ শতাংশ অশ্বেতাঙ্গ।

বুধবার (৩০ ডিসেম্বর) বাইডেনের ট্রানজিশন টিম ওই ১০০ কর্মীর তালিকা প্রকাশ করেছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি।

নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মীদের প্রসঙ্গে ট্রানজিশন টিমের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এ সুশিক্ষিত-মার্জিত রুচির ব্যক্তিরা যুক্তরাষ্ট্রের উদার মানবতাবাদী সংস্কৃতির  সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ মানসিকতার অধিকারী। একটি ঐতিহাসিক ও উদ্যমী হোয়াইট হাউস সাজাতে মার্কিন প্রশসানে নিয়োগ পেয়েছেন তারা। দায়িত্বপ্রাপ্ত হওয়ার প্রথম দিন থেকেই দেশের সাধারণ মানুষের সেবায় তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

আগামী ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করতে যাচ্ছেন জো বাইডেন। একই দিন দায়িত্ব গ্রহণ করবেন তার ‘রানিং মেট’ ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসও।

নতুন কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধার পাশাপাশি ধর্মীয় এবং জাতিগত বৈচিত্র্যকে প্রাধান্য দেওয়া বাইডেন-হ্যারিস প্রশাসনের প্রত্যাশা। নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত এই কর্মীরা করোনা সংক্রমণসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যমান সমস্যাগুলো মোকাবিলায় নিজেদের মেধা এবং সক্ষমতার সর্বোচ্চ প্রয়োগ করবেন।

বাইডেন-হ্যারিস প্রশাসনের অধীনে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রশাসনিক পদে যারা নিয়োগপ্রাপ্ত হচ্ছেন, তারই একটি ক্ষুদ্র অংশের প্রতিনিধিত্ব করছেন হোয়াইট হাউসের এই নতুন কর্মীরা- উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘হোয়াইট হাউসের এই একশ নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তিসহ প্রশাসনের বিভিন্ন পদে যাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তাদের ৬১ শতাংশ নারী, ৫৪ শতাংশ অশ্বেতাঙ্গ এবং ১১ শতাংশ তৃতীয় লিঙ্গ/সমকামী। এছাড়া প্রশসানে অতীতের তুলনায় দ্বিগুনেরও বেশি সংখ্যক ভারতীয় বংশোদ্ভুত চিকিৎসক নিয়োগ করা হয়েছে।’

ট্রানজিশন টিমের বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, নিয়োগপ্রাপ্তদের ২০ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রজন্মের নাগরিক এবং হোয়াইট হাউসে নিয়োগ পাওয়া ৪০ শতাংশ জ্যেষ্ঠ কর্মীদের সন্তান।

প্রশাসনে নিয়োগের ক্ষেত্রে জাতি-বর্ণ ও লিঙ্গভেদ বিচার না করে বৈচিত্র্যতার সমাবেশ ঘটানোর প্রসঙ্গে বাইডেন বলেন, ‘শুরু থেকেই নবনির্বাচিত ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস এবং আমি-আমরা প্রশাসনকে এমন ভাবে সাজাতে চাইছিলাম যেন এর মধ্যদিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সত্যিকার চেহারা বা মর্মবস্তুর প্রতিফলন ঘটে। বর্তমানে আমাদের দেশ যে সমস্যাসঙ্কুল পরিস্থিতিতে রয়েছে। একটি বৈচিত্র্যপূর্ণ দক্ষ প্রশাসনিক দল এ অবস্থা থেকে উত্তরণে খুবই কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে বলে আমাদের বিশ্বাস। নিয়োগপ্রাপ্ত যে সব কর্মীর নাম আজ প্রকাশ করা হলো, তাদের দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা দেশকে এগিয়ে নিতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। আমরা সবাইকে সঙ্গে নিয়েই সামনের দিকে এগোতে চাই।’

কমলা হ্যারিস এ বিষয়ে বলেন, ‘যে সরকারি কর্মীদের নিয়োগ দেওয়া হলো, দেশের বিদ্যমান সংকটগুলো মোকাবিলা করার মতো যথেষ্ট জ্ঞান ও দক্ষতা তাদের রয়েছে। করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ, মহামারির কারণে দেশের অর্থনীতি এবং শিক্ষাক্ষেত্রে যে অচলাবস্থা হয়েছে তা থেকে উত্তরণে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন এবং সব নাগরিকের সমান অধিকার নিশ্চিত হবে– এমন একটি দেশ গঠন করতে তাদের সঙ্গে কাজ করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি আমি।

হোয়াইট হাউসের চিফ অফস স্টাফ রন ক্লেইন বলেন,‘নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট সেই সব ব্যক্তিদেরই নিয়োগ দিয়েছেন যারা করোনা মহামারিসহ বিদ্যমান অন্যান্য সংকটের গোড়ায় আঘাত করতে সক্ষম। আমি খুবই আনন্দিত যে ২০২০ সাল শেষ হওয়ার আগেই আমরা ১০০ জন কর্মীর নামের তালিকা প্রকাশ করতে পেরেছি এবং একটি বৈচিত্রময় প্রশাসনিক কর্মীদের দলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের সেবায় কাজ করা আমাদের সবার জন্যই হবে খুব গৌরবের একটি ব্যাপার।’

সূত্র: এনডিটিভি

এসএমডব্লিউ