ইরাকে কোভিড হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডে নিহত বেড়ে ৮২
ইরাকের রাজধানী বাগদাদের একটি হাসপাতালে আগুন লেগে নিহত রোগীর সংখ্যা বেড়ে ৮২ জনে দাঁড়িয়েছে। শনিবার রাতের ওই অগ্নিকাণ্ডে কমপক্ষে আরও ১১০ জন আহত হয়েছেন। হাসপাতালটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল।
রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত বিবৃতিতে ইরাকের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘ইবনে আল-খতিব হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডে ৮২ জন রোগীর মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করছি আমরা। ওই অগ্নি দুর্ঘটনায় আরও ১১০ জন আহত হয়েছেন।’
বিজ্ঞাপন
ইরাকের সময় শনিবার দিবাগত রাতে ইবনে খাতিব হাসপাতালটিতে আগুন লাগে। দেশটির সরকারি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বিবিসি ছাড়াও অন্যান্য সংবাদমাধ্যমগুলোর খবরে বলা হচ্ছে, অক্সিজেন ট্যাঙ্ক বিস্ফোরিত হয়ে এই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়।
বিজ্ঞাপন
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, দমকলকর্মীরা আগুন নেভাতে হিমশিম খাচ্ছেন। হাসপাতালটি থেকে পালিয়ে বের হয়ে অনেকে প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করছেন।
ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মুস্তফা আল খাদিমি হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ড ও প্রাণহানির ঘটনাকে ‘মর্মান্তিক দুর্ঘটনা’ হিসেবে উল্লেখ করে এর কারণ উদঘাটনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
— Steven Nabil (@thestevennabil) April 24, 2021
এছাড়া ইরাকের বেসামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল খাদিম বোহান রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, হাসপাতালটির নিবিড় পরিচর্যা ইউনিট-আইসিইউ থেকে আগুনের সূত্রপাত। ফুসফুসের চিকিৎসার জন্য ওই আইসিইউটি ব্যবহার করা হতো।
বার্তা সংস্থা এএফপি-কে হাসপাতালের একটি সূত্র জানায়, ওই নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে প্রায় ৩০ জন রোগী ছিলেন। করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর যাদের অবস্থা গুরুতর হয় মূলত সেসব রোগীদের জন্য ওই হাসপাতালের ওই ইউনিটটি সংরক্ষিত ছিল।
ইরাকের বেসামরিক প্রতিরক্ষা বিভাগ জানায়, রোববার ভোর নাগাদ আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। আহত এবং অন্য রোগীদের অ্যাম্বুলেন্সে করে পার্শ্ববর্তী হাসপাতালগুলোতে স্থানান্তর করা হয়েছে।
বাগদাদের গভর্নর মোহাম্মেদ জাবেরও প্রধানমন্ত্রীর মতো একই সুরে কথা বলেছেন। তিনি ‘এই দুর্ঘটনায় কাউকে আইনের আওতায় আনার’ দরকার আছে কি না তা খতিয়ে দেখতে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন।
মানবাধিকার কমিশন বিবৃতি দিয়ে একে এরইমধ্যে ‘কোভিড-১৯ এ বিপর্যস্ত রোগীদের বিরুদ্ধে অপরাধ’ হিসেবে উল্লেখ করেছে।
ইরাকের হাসপাতালগুলো করোনাভাইরাস মহামারির ধকল সামলে উঠতে হিমশিম খাচ্ছে। বছরের পর বছর ধরে যুদ্ধ, অবহেলা আর দুর্নীতির কারণে দেশটির স্বাস্থ্য ব্যবস্থা দুর্বল থাকার কারণে এমনটা হয়েছে।
ইরাকে গত ফেব্রুয়ারি থেকে কোভিড সংক্রমণের সংখ্যা বেড়ে চলেছে এবং চলতি সপ্তাহে দশ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। মহামারি শুরুর পর থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দেশটিতে ১০ লাখ ২৫ হাজার ২৮৮ জন আক্রান্ত এবং ১৫ হাজার ২১৭ জন মারা গেছে বলে জানিয়েছে।
ইরাকে গত মাসে করোনার টিকাদান কর্মসূচি শুরু করা হয়েছে। এরই মধ্যে ৬ লাখ ৫০ হাজার ডোজ টিকা তারা পেয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগই টিকাদানের বৈশ্বিক কর্মসূচি কোভ্যাক্স থেকে পাওয়া।
এএস/জেএস