আঞ্চলিক চিরবৈরী প্রতিদ্বন্দ্বী সৌদি আরবের সঙ্গে প্রথমবারের মতো বৈঠকের তথ্য নিশ্চিত করেছে ইরান। তেহরান বলেছে, নিজেদের মধ্যে বিবাদমান সংকটের সমাধানে যা করা দরকার তাই করা হবে। সোমবার প্রকাশ্যে প্রথমবারের মতো আঞ্চলিক শত্রু সৌদি আরবের সঙ্গে এই বৈঠকের ব্যাপারে স্বীকারোক্তি দিয়েছে ইরান। 

টেলিভিশনে সম্প্রচারিত সাপ্তাহিক এক সংবাদ সম্মেলনে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সাঈদ খতিবজাদেহ বলেছেন, ‘পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলের দু’টি মুসলিম দেশের মধ্যে চলমান উত্তেজনা প্রশমন উভয় দেশ ও অঞ্চলের অন্যতম স্বার্থ।’

তিনি বলেন, ‌‘এই আলোচনার ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করছে ইরান। আমরা দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান সঙ্কটগুলোর সমাধানে স্বাগত জানাই... এ বিষয়ে আমরা আমাদের সর্বোত্তম প্রচেষ্টার ব্যবহার করবো।’

মধ্যপ্রাচ্যের কর্মকর্তা এবং সূত্রগুলো বলছে, গত মাসে ইরান এবং সৌদি আরবের মধ্যে দুই দফায় বৈঠক হয়েছে।

এর আগে, গত সপ্তাহে সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নীতি পরিকল্পনাবিষয়ক প্রধান রাষ্ট্রদূত রায়েদ ক্রিমলি ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেছিলেন, সৌদি আরব এবং ইরানের আলোচনার প্রধান লক্ষ্য আঞ্চলিক উত্তেজনা কমিয়ে আনা। তিনি বলেন, তবে এখনই আলোচনার ফল প্রত্যাশা করা হলে সেটি বেশি আগাম হয়ে যাবে। রিয়াদ যাচাইযোগ্য কর্মকাণ্ড দেখতে চেয়েছিল।

সৌদি আরব এবং ইরানের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলছে; যা দেশ দুটিকে সিরিয়া থেকে শুরু করে ইরাক এবং ওই অঞ্চলের অন্যান্য দেশে প্রক্সি যুদ্ধে জড়িয়ে রাখতে ভূমিকা পালন করছে। তবে দুই দেশের সম্পর্ক সবচেয়ে খারাপ আকার ধারণ করে ২০১৬ সালে। ওই সময় উভয় দেশ কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষমতায় আসার পর মধ্যপ্রাচ্যের কূটনীতিতে নতুন হিসেব-নিকেশ শুরু হয়েছে। বাইডেনের পূর্বসুরী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন ইরানের সঙ্গে পাঁচ বিশ্ব শক্তির স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল।

কয়েকটি সূত্র বলছে, সৌদি আরবে হুথিদের হামলা বন্ধে ভূমিকা রাখতে তেহরান গত মাসে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে এর বিনিময়ে ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক আলোচনায় রিয়াদের সমর্থন চেয়েছে তেহরান।

কিন্তু প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নেতৃত্বাধীন মার্কিন প্রশাসন ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি পুরুজ্জীবিত করার প্রচেষ্টা শুরু করেছে। একই সঙ্গে ইরান সমর্থিত ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সৌদি আরবের যুদ্ধের অবসানের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

এসএস