আস্থাভোটে হারলেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি। পার্লামেন্টে তার সরকারের পক্ষে ভোট পড়েছে ৯৩টি, বিপক্ষে ভোট পড়েছে ১২৪টি। মোট ১৫ জন এমপি ভোটদানে বিরত ছিলেন। আজ সোমবার ২৭১ আসনের নেপাল পার্লামেন্টে উপস্থিত ছিলেন ২৩২ জন এমপি। 

কয়েক মাস ধরে আস্থার সংকটে ভুগছিল ওলির সরকার। ফলে সংসদের নিম্নকক্ষে আস্থা ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণে প্রয়োজন ছিল ১৩৬ এমপির সমর্থন। কক্ষত্যাগ বা অনুপস্থিত এমপিদের মধ্যে সরকারি দল নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির ২৮ জন এমপি ছিলেন বলে জানা যাচ্ছে।

২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে নতুন সংবিধানের অধীনে নির্বাচিত সরকারের এটাই প্রথম আস্থাভোট ছিল। পুষ্পকুমার দহল ওরফে প্রচণ্ড-র নেতৃত্বাধীন নেপাল কমিউনিস্ট পার্টি (মাওবাদী) সমর্থন প্রত্যাহার করায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়ে আস্থা ভোটের মুখে পড়ে ওলির সরকার।

নেপালি কংগ্রেস কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপালের (মাওবাদী) এমপির সংখ্যা যথাক্রমে ৬১ ও ৪৯ জন। দুই দলের সব আইনপ্রণেতা ওলি সরকারের বিরুদ্ধে আনা আস্থা ভোটের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন। ফলে সরকারের ওপর আস্থার প্রমাণ দেওয়া জটিল হয়ে যায়। 

এছাড়া ওলির দলে বিভাজন দেখা দেওয়ায় তার সরকারের পতন। আজ ক্ষমতাসীন নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির যেসব সদস্য পার্লামেন্টে অনুপস্থিত ছিলেন তারা মাধব নেপাল-ঝালানাথ খানাল অংশের এমপি। তার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ওলিকে আর দেখতে চাচ্ছেন না। 

এদিকে নেপালের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে ৩২ এমপি থাকা জনতা সমাজবাদী পার্টির আস্থা ভোটে বিভক্তি দেখা গেছে। দলটিতে উপেন্দ্র যাদব নেতৃত্বাধীন গোষ্ঠী ওলির বিপক্ষে ভোট দিলেও মহন্ত ঠাকুরের নেতৃত্বাধীন দলটি অপর অংশ নিরপেক্ষ অবস্থান নেয়।

আস্থা ভোটে হারের ফলে ওলির ৩৮ মাসের সরকারের পতন হলো। ক্ষমতাসীন দলের বিক্ষুব্ধ সদস্যরা দলীয় হুইপকে অস্বীকার করেন ও ভোটদানে বিরত থাকেন। ফলে তাদের এমপি পদ বাতিল হতে পারে। এতে দেশটিতে আগাম নির্বাচনের আয়োজন করতে হতে পারে। 

ওলি এবার রাষ্ট্রপতি বিদ্যাদেবী ভান্ডারীর কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেবেন। আস্থাভোট নিয়ে আত্মবিশ্বাসী অলি বলেছিলেন, ‘যে সরকার অক্লান্ত পরিশ্রম করে উন্নয়নে ও দেশ গঠনের জন্য কাজ করেছে সেই সরকারকে সংকীর্ণ ও পক্ষপাতদুষ্ট স্বার্থে টার্গেট করা হচ্ছে।’

সূত্র: কাঠমান্ডু পোস্ট ও আনন্দবাজার পত্রিকা

এএস