ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সর্ব-ভারতীয় সহ-সভাপতির পদ ছেড়ে কয়েকদিন আগে ফের আগের দল তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরে গেছেন দেশটির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের প্রভাবশালী নেতা মুকুল রায়। আর এরপরই রাজ্যটির বিজেপি নেতৃত্বে শুরু হয়েছে নতুন জল্পনা। গুঞ্জন চলছে, রাজ্য বিজেপির সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে দিলীপ ঘোষকে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় রদবদলের সম্ভাবনা সামনে আসার পরই নতুন জল্পনা শুরু হয়। মূলত দিলীপ ঘোষকে রাজ্য বিজেপির সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রী করা হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে।

দুই শতাধিক আসনে জিতে রাজ্যে ক্ষমতায় আসার লক্ষ্য থাকলেও পশ্চিমবঙ্গে বিজেপিকে থামতে হয়েছে মাত্র ৭৫ আসনেই। এরপর থেকেই বিজেপির রাজ্য সভাপতির পদে দিলীপের থাকা না থাকা নিয়ে চলছে গুঞ্জন। তবে দলের একাংশের ধারণা, শুভেন্দু অধিকারী নন্দীগ্রামে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারিয়ে দেওয়ার পরে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে যেভাবে ‘গুরুত্ব’ পাচ্ছেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে দিলীপ ঘোষ পদ হারানোর সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

অবশ্য দিলীপ ঘোষকে সরিয়ে শুভেন্দুকে রাজ্য সভাপতি করা হবে কি না, সেই প্রশ্নও ঘুরছে, আছে মতভেদও। বিজেপির একটি বড় অংশ মনে করে, ভোটে জেতা আর দলের সাংগঠনিক শীর্ষে বসা- বিজেপির চোখে দু’টি আলাদা। কিন্তু দিলীপকে রাজ্য সভাপতির পদ থেকে সরানো হবে না, তেমন কথাও নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারছেন না। তাতেই প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কি দিলীপ ঘোষকে নরেন্দ্র মোদি সরকারের মন্ত্রী করা হতে পারে?

এদিকে মুকুলের তৃণমূলে ফিরে যাওয়া দলের ভাঙনে আরও ইন্ধন জোগাবে বলে আশঙ্কা করছে বিজেপির একাংশ। দলের এক নেতার কথায়, ‘মুকুল রাজ্যের প্রতিটি বিধানসভাকে হাতের তালুর মতো চিনতেন। বিধানসভা নির্বাচনে মুকুলকে কৌশল নির্ধারণকারী হিসাবে ব্যবহার করা যেত। দল তা করেনি।’

অবশ্য মুকুলের পথ ধরে দলের কোন কোন সাংসদ এবং বিধায়ক তৃণমূলে যেতে পারেন, তা শুক্রবার থেকেই মরিয়া হয়ে খুঁজতে শুরু করেছে বিজেপি নেতৃত্ব। তাদের সন্দেহের তালিকায় রয়েছেন অন্তত ৭ জন। যদিও তাদের চার জন নানা ঘটনায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে কড়া প্রতিক্রিয়া নিয়মিত দিয়ে চলেছেন। তবে তা ‘নাটক’ কি না, সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন বিজেপি নেতারা।

উল্লেখ্য, গত ২৭ মার্চ থেকে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত মোট আট দফায় পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ২৯৪টি আসনের মধ্যে তৃণমূল জয়ী হয়েছে ২১৩টি আসনে। বিজেপি জয় পেয়েছে ৭৫টিতে।

টিএম