কংগ্রেসে হামলার পর ট্রাম্পকে ক্ষমতাচ্যুত করার আলোচনা
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল ভবনে (পার্লামেন্ট) কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে সমর্থকদের হামলার পর ট্রাম্পকে ক্ষমতাচ্যুত করার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছেন ট্রাম্পেরই মন্ত্রিসভার সদস্যরা। স্থানীয় সময় বুধবার মন্ত্রিসভার সদস্যরা নিজেদের মধ্যে এই আলোচনা করেন বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি সংবাদমাধ্যম।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ২৫ তম সংশোধনী নিয়েই মূলত তাদের মধ্যে আলোচনা হয়। দেশটির সংবিধানের ২৫তম সংশোধনীতে বলা আছে, অসুস্থতা বা অন্য কোনো কারণে প্রেসিডেন্ট দায়িত্বপালনে অযোগ্য বিবেচিত হলে ভাইস প্রেসিডেন্ট ও মন্ত্রিসভার সদস্যরা তাকে অপসারণ করতে পারেন। সেক্ষেত্রে দায়িত্ব নেবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট।
বিজ্ঞাপন
এরকম কিছু হলে হয়তো মাইক পেন্সকে অল্প কিছুদিনের জন্য প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করতে হতে পারে।
এসময় তারা ট্রাম্পকে দায়িত্ব থেকে সরাতে মন্ত্রিসভায় ভোট আয়োজনের জন্য ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের প্রতি আহ্বান জানান।
বিজ্ঞাপন
নাক প্রকাশ না করে কয়েকজন রিপাবলিকান নেতার উদ্ধৃতি দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, ক্যাপিটল হিলে হামলার পর ট্রাম্পকে দায়িত্ব থেকে সরাতে মার্কিন সংবিধানের ২৫তম সংশোধনী নিয়ে আলোচনা হয়েছে। রিপাবলিকান নেতাদের ভাষ্য, ট্রাম্প ‘‘নিজের ওপর থেকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছেন’’।
সিবিএস রিপোর্টার মার্গারেট ব্রেনান বলেছেন, আলোচনার সময় ভাইস প্রেসিডেন্ট পেন্সের কাছে ‘‘আনুষ্ঠানিক ভাবে’’ কোনো কিছু উপস্থাপন করা হয়নি এবং এবিসি রিপোর্টার ক্যাথেরিন ফাউল্ডার্স বলেন, অভূতপূর্ব দ্রুততার সঙ্গে এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল বলে বেশ কয়েকটি সোর্স থেকে তাকে নিশ্চিত করা হয়েছে।
নভেম্বরের ৩ তারিখের নির্বাচনে পরাজয়ের পর কোনো প্রমাণ ছাড়া বারংবার ভোটে কারচুপি-জালিয়াতির অভিযোগ করা, বিক্ষোভকারীদের উস্কে দেওয়াসহ নানা রকম অদ্ভূত আচরণের কারণে ট্রাম্পের নেতৃত্ব দেওয়ার সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
তাছাড়া প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেনের দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র দুই সপ্তাহ আগে বুধবার কংগ্রেসে হামলার পর ট্রাম্পকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিতে সংবিধানের ২৫তম সংশোধনী ব্যবহারের আহ্বান জানিয়েছেন কংগ্রেসের ডেমোক্র্যাটিক সদস্যরাও।
একইসঙ্গে ট্রাম্পকে দায়িত্ব থেকে সরানোর জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে মাইক পেন্সকে চিঠি দিয়েছেন কংগ্রেসের জুডিশিয়ারি কমিটির ডেমোক্র্যাট সদস্যরাও। ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রকে খাটো করেছেন বলেও চিঠিতে অভিযোগ করা হয়।
বিদায়ী প্রেসিডেন্টের দেওয়া বুধবারের ভাষণের দিকে ইঙ্গিত করে চিঠিতে বলা হয়, ট্রাম্প যে মানসিকভাবে সুস্থ নন, তা তিনি নিজেই প্রমাণ করে দিয়েছেন। তিনি এখনও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিতে প্রস্তুত নন। তাছাড়া সন্ত্রাসবাদ উস্কে দেওয়ার জন্যও তারা ট্রাম্পকে দোষারোপ করেন।
এক টুইট বার্তায় কংগ্রেসের প্রতিনিধি ক্যাথলিন রাইস বলেন,‘ক্যাপিটল ভবনে সন্ত্রাসী হাসলা চালাতে উস্কানি দিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি গণতন্ত্রের জন্য প্রচ্ছন্ন হুমকি এবং অনতিবিলম্বে তাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিতে হবে।’
এই কাজে মন্ত্রিসভাকে অবশ্যই সংবিধানের ২৫তম সংশোধনী ব্যবহার করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
টিএম